ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

উচ্চ প্রাথমিকে কর্মশিক্ষার শিক্ষক নিয়োগে স্থগিতাদেশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২২
উচ্চ প্রাথমিকে কর্মশিক্ষার শিক্ষক নিয়োগে স্থগিতাদেশ

কলকাতা: ফের শিক্ষক নিয়োগে জালিয়াতির তথ্য এসেছে কলকাতা হাইকোর্টের সামনে। আর তাই এবার উচ্চ প্রাথমিকের কর্মশিক্ষার শিক্ষক নিয়োগে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিলেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর নির্দেশ, এ বিষয়ে দায়ের হওয়া মামলার পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবে না রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)।

বিচারপতির নির্দেশ, ৭৫০টি শূন্যপদে নিয়োগের ক্ষেত্রে পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ যেন না নেওয়া হয়। পরবর্তী শুনানি হবে আগামী শুক্রবার।

যদিও স্কুল কমিশন এ দিন জানিয়েছে, আজ তাদের অফিস বন্ধ, ফলে নিয়োগপত্র দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তবে বিচারক নিয়োগের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারির পাশাপাশি কীভাবে তৈরি হয়েছে ওয়েটিং লিস্ট, তাও এদিন জানতে চান।

উচ্চ প্রাথমিকের কর্মশিক্ষার শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২০১৬ সালে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল কমিশন। ২০১৭ সালে এর পরীক্ষা হয়। লিখিত পরীক্ষার পর ২০১৮ সালে পার্সোনালিটি টেস্ট নেওয়া হয়।  

এরপর চলতি বছরের ১৪ অক্টোবর অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে স্কুল সার্ভিস কমিশন। তারপর চলতি বছরের ৩ নভেম্বর স্কুল সার্ভিস কমিশন নোটিশ দিয়ে জানায়, ১০ ও ১১ নভেম্বর অপেক্ষারতদের তালিকায় থাকা প্রার্থীদের কাউন্সেলিং হবে।

এখানেই শুরু হয় সমস্যা। তালিকায় নিজের নাম না পেয়ে মামলা করেন তফসিলিভুক্ত সোমা রায় নামের এক চাকরিপ্রার্থী। তার বক্তব্য, ৭২ পেয়ে তিনি চাকরি না পেলেও ৫৬ নম্বর পেয়ে অন্য ব্যক্তি চাকরি পেয়েছেন।  

চাকরিপ্রার্থী সোমা রায়ের অভিযোগ, ৩ নভেম্বর কর্মশিক্ষা বিষয়ে এসএসসি অপেক্ষারতদের যে তালিকা প্রকাশ করেছে, তাতে তার নাম নেই।

তার দাবি, তিনি পরীক্ষা ও পার্সোনালিটি টেস্ট মিলিয়ে ৭২ নম্বর পেয়েছেন। কিন্তু একাডেমিক স্কোরে ২২ নম্বরের পরিবর্তে তাকে ১৮ নম্বর দেওয়া হয়েছে। পুরো নম্বর যোগ করা হয়নি। অর্থাৎ নম্বর দেওয়ার ক্ষেত্রেই গড়মিল রয়েছে বলে মনে করেন সোমা।

সোমার আইনজীবীর অভিযোগ, এসএসসির তৈরি অপেক্ষারতদের তালিকায় এমন ৬০ জন চাকরিপ্রার্থী রয়েছেন, যাদের পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর তার মক্কেলের থেকে কম। অথচ সোমার নাম নেই। ফলে গড়মিল রয়েছে এসএসসির পক্ষে। পাল্টা এসএসসির যুক্তি, যে ৬০ জনের কথা বলা হচ্ছে তারা প্যারা টিচার। ফলে তাদের ‘বিশেষ যোগ্যতা সংরক্ষণে’র আওতায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

দুই পক্ষের বাদানুবাদ শুনে মঙ্গলবারের শুনানিতে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু ওই ৬০ জনকে মামলায় পার্টি করার নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি কীভাবে অপেক্ষারতদের নিয়োগ তালিকা তৈরি করেছে এসএসসি, নাম ধরে ধরে দেখতে চেয়েছেন আদালত।

অপরদিকে, ২০১৪ সালে টেট উত্তীর্ণ মেধাতালিকায় রয়েছেন এমন প্রায় ৩ হাজার ৯২৯ জন প্রার্থীকে শিক্ষক পদে নিয়োগ করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্ট। গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এই নির্দেশ দিয়ে বলেছিলেন, আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। সেক্ষেত্রে এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছিল ১১ নভেম্বর। কিন্তু সিঙ্গেল বেঞ্চের এই নির্দেশের বিরোধিতা করে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেছিল রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।

কিন্তু হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ বহাল রাখেন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতির সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। ফলে মেধা তালিকায় রয়েছে, অথচ দুর্নীতির কারণে যারা নিয়োগপত্র পাননি এমন ৩ হাজার ২৯২ জন প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে হবে। এই সংখ্যার মধ্যেই ২৫২ জন প্রার্থী যারা নথি জমা দিয়ে আদালতের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন, তাদের পৃথকভাবে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিলেন সিঙ্গেল বেঞ্চ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২২
ভিএস/আরএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।