ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প

৬ প্রকল্পে ১৩ হাজার কোটি টাকার ঋণচুক্তি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৬ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০১৬
৬ প্রকল্পে ১৩ হাজার কোটি টাকার ঋণচুক্তি

ঢাকা: যমুনায় আলাদা রেলসেতু নির্মাণসহ ছয়টি বড় প্রকল্পে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা সমপরিমাণে ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।  

বুধবার (২৯ জুন) নগরীর শেরে বাংলানগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা জাইকার সঙ্গে এ ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

মোট ছয়টি প্রকল্পে সংস্থাটি ৩৭তম প্যাকেজের আওতায় সাড়ে ১৭ হাজার কোটি ইয়েন ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী (১ ইয়েন সমান দশমিক ৭৭ টাকা) এর পরিমাণ মুদ্রায় ১২ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা বা প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা।
 
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কাজী শফিকুল ইসলাম ও জাপানি রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওয়াতানাবে এ চুক্তি স্বাক্ষর করেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান ও জাইকার প্রধান প্রতিনিধি মিকিও হাতাইদা।

যমুনা রেলসেতু নির্মাণে ১৮৯ কোটি টাকা, সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের সীমান্ত এলাকায় নেটওয়ার্ক ব্যবস্থার উন্নয়নে দুই হাজার ২০০ কোটি, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মেট্রোরেল প্রকল্পে পাঁচ হাজার ৮১৮ কোটি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে দুই হাজার ৯১২ কোটি টাকা এবং বিদ্যুৎ বিভাগের জ্বালানি সাশ্রয় ও উন্নয়ন প্রকল্পে ৯২২ কোটি টাকা ঋণ দেবে জাইকা।

এ ছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন প্রকল্পে এক হাজার ৩০৮ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার লক্ষ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশকে আরও দুর্যোগ সহনশীল করা হবে।

যমুনা নদীর ওপর প্রায় পৌনে ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পৃথক একটি রেলসেতু নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুতে ডুয়েলগেজ ডাবল রেললাইন নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। চলতি বছরের শেষ দিকে এ সেতুর নির্মাণ শুরু করে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল) ২০১১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে যাত্রা শুরু করে। চট্টগ্রামের কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি এবং ধলঘাটা ইউনিয়নে দু’টি ইউনিটে ১২০০ মে. ও. কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার ও জাইকার মধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ে ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। প্রকল্পের মোট ব্যয় ৩৫ হাজার ৯৮৪ লাখ টাকা। এতে জাইকা ২৮ হাজার ৯৩৯ কোটি তিন লাখ টাকা ঋণ দেবে।

জাইকার ঋণে এশিয়ান হাইওয়ের সংস্কারে ৬৯০ মিটার দীর্ঘ কালনা সেতু নির্মাণ করা হবে। কারণ ঢাকা-কোলকাতা সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে পদ্মাসেতুর পরে এটিই একমাত্র বাধা।

এনার্জি ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা অ্যান্ড কনজারভেশন প্রমোশন প্রকল্পের আওতায়ও ঋণ চুক্তি হয়। এর মাধ্যমে জ্বালানির দক্ষ ব্যবহার ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি স্থাপনে সহায়তা করা হবে।
 
অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, জাপান সঙ্গে আমাদের অন্যরকম বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। দেশের নানা অবকাঠামোগত উন্নয়নে দেশটি সব সময় পাশে থেকেছে। বর্তমান সরকারের চিন্তা চেতনা অনেক অগ্রগামী। সামনের সময়ে দেশের চেহারা অচেনা মনে হবে। দেশের সব কিছুই বদলে যাবে। সেই লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, এখন শুধু জাপান নয়, দেশের উন্নয়নে উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিমেও বন্ধু খুঁজবো। দেশের উন্নয়নে আমাদের নতুন নতুন বন্ধু দরকার।

এ ঋণের বার্ষিক সুদের হার মাত্র দশমিক শূন্য ১ শতাংশ, যা ১০ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৪০ বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। সংস্থাটির সুদের হার বাংলাদেশের অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), রাশিয়া ও চীনের তুলনায় অনেক কম।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০১৬
এমআইএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।