ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প

এক প্রকল্পে ১১৬১১ যানবাহন কেনার প্রস্তাব!

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২১ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৬
এক প্রকল্পে ১১৬১১ যানবাহন কেনার প্রস্তাব!

ঢাকা: ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের আওতায় ১১ হাজার ৬১১টি যানবাহন কেনার প্রস্তাব করা হয়েছে। একটি প্রকল্পের আওতায় এতো বেশি যানবাহন কেনার প্রস্তাব নিয়ে আপত্তি তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন।

এর কোনো যৌক্তিক কারণ খুঁজে না পেয়ে যানবাহনের সংখ্যা ও ব্যয় কমানোর সুপারিশ করেছে কমিশন।
 
সূত্র জানায়, প্রথমে ৯টি জিপ, ৪টি মাইক্রোবাস, একটি ডাবল কেবিন পিক-আপ, ৫৫৬টি মোটরসাইকেল ও ৭ হাজার ৪৩টি বাইসাইকেলসহ মোট ৭ হাজার ৬১২টি যানবাহন কেনার প্রস্তাব ছিল। তৃতীয় সংশোধনীতে নতুন করে সাড়ে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি ডাবল কেবিন পিক-আপ, ৫টি মোটরসাইকেল ও ৪ হাজার ৭৫০টি বাইসাইকেলসহ সব মিলিয়ে ১১ হাজার ৬১১টি যানবাহন কেনার প্রস্তাব করা হয়েছে। এজন্য চাওয়া হয়েছে অতিরিক্ত ২১ কোটি ৯২ লাখ ৪৬ হাজার টাকা।  
 
সূত্র জানায়, এর আগে কোনো প্রকল্পে এতো বেশি যানবাহন কেনার  প্রস্তাব পায়নি পরিকল্পনা কমিশন। কয়েক দফা প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা করে তাই যানবাহনের সংখ্যা ৬ হাজার ৬৮টিতে ও ব্যয় কমিয়ে ১৬ কোটি ৪৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকায় আনতে বলেছে কমিশন।

কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, ‘সরকারি অর্থায়নের প্রকল্পে প্রয়োজন না হলেও প্রচুর যানবাহন কেনা হচ্ছে। একটি প্রকল্পে এতো টাকার যানবাহন কেনার কোনো কারণ বা যুক্তি নেই’।
 
‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের পরিচালক আকবর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘জেলা-উপজেলা থেকে শুরু করে গ্রাম পর্যায়ে আমাদের যানবাহন লাগবে। সেজন্যই আগেরগুলোসহ নতুন যানবাহনের প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এখনও পরিকল্পনা কমিশন এগুলোর অনুমোদন দেয়নি’।
 
তিনি আরও বলেন, ‘প্রকল্পের ব্যয় ও সময় বাড়ানো হচ্ছে। কারণ, আমরা কাজের পরিসরও বৃদ্ধি করেছি’।

সূত্র জানায়, এবার আরও ৫ হাজার ৫৮০ কোটি ৬৮ লাখ টাকা বরাদ্দ ও প্রকল্পের মেয়াদ আরও চার বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
 
নতুন প্রস্তাবে এ প্রকল্প ব্যয় ৮ হাজার ৭৪৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। শুরুতে অনুমোদিত ব্যয়ের তুলনায় বাড়ছে ৭ হাজার ৫৪৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, যা ১৭৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
 
সমন্বিত গ্রাম উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রতিটি বাড়িকে অর্থনৈতিক কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে তুলতে ১ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদে প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় সরকার। পরবর্তীতে ১ হাজার ৪৯২ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানো হলেও মেয়াদ এক বছর কমানো হয়। দ্বিতীয় সংশোধনীতে ব্যয় ৩ হাজার ১৬২ কোটি টাকা ও মেয়াদ ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এবার ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
 
পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের প্রধান সরদার ইলিয়াস হোসেন বলেন,  প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হলো, জনশক্তি ও অর্থনৈতিক সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতিটি গ্রামকে একটি টেকসই কৃষি নির্ভর ইনকাম জেনারেটিং ইউনিটে উন্নীতকরণ। দেশের ৮টি বিভাগের ৬৪টি জেলার ৪৯০টি উপজেলার ৪ হাজার ৫৫০টি ইউনিয়নের ৪০ হাজার ৯৫০টি ওয়ার্ডে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।

সর্বশেষ অনুমোদিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৪ লাখ ৩১ হাজার ৬২০টি হাউজ হোল্ডকে অন্তর্ভূক্ত করে ৪০ হাজার ৫২৭টি গ্রামের উন্নয়ন করা, যা ইতোমধ্যেই অর্জিত হয়েছে। প্রস্তাবিত তৃতীয় সংশোধনীতে সম্প্রসারণ করার জন্য আরো ৬০ হাজার ৫১৫টি  গ্রাম উন্নয়ন সংস্থা ও ৩৬ লাখ ৩০ হাজার ৯০০টি হাউজ হোল্ড প্রস্তাব করা হয়েছে’।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩২১ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৬
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।