চায়ের দোকানটিতে সাইফুদ্দিনের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন আরেক শ্রমিক আল-আমিন। চাকরি হারানোর ভয় তাকেও জাপটে ধরেছে।
সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী ট্যানারি মালিকরা যদি আগে ভাগেই সাভারে ট্যানারি স্থানান্তর করতো তাহলে সাইফুদ্দিন, আল-আমিনদের এমন বিপদে পড়তে হতো না বলে মনে করছেন শ্রমিকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রূপালি ট্যানারির এক শ্রমিক বাংলানিউজকে বলেন, ট্যানারি সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ সরকার অনেক আগেই দিয়েছে। কিন্তু মালিকরা এ বিষয়ে তেমন কোনো কিছু ভাবেনি। এখন তারা বলছে কারখানা বন্ধ করে দেবে। আমরা এখন যাবো কোথায়?
সাভারে গড়ে ওঠা চামড়া শিল্প নগরীতে হাজারীবাগের ট্যানারি কারখানা স্থানান্তরের কথা নির্দেশ দফায় দফায় দেওয়া হলেও তাতে কান দেননি ব্যবসায়ীরা। ২০১০ সালের অক্টোবরে ট্যানারি স্থানান্তরে ছয়মাস সময় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সে অনুসারে ২০১১ সালের ৩০ এপ্রিলের পর হাজারীবাগে ট্যানারি চালানোর অনুমোদন নেই। এরপরও সরকার চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়। তারপরও ট্যানারি সরিয়ে নেননি মালিকরা।
অন্যদিকে সাভারের চামড়া শিল্প পার্ক এলাকায় শ্রমিকদের জন্য বাসস্থান তৈরি করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি বলে জানিয়েছেন ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আমাদের সাথে মালিকদের একটি চুক্তি হয়েছিলো ২০১৬ সালের ১৯ জুন। চুক্তি অনুযায়ী মালিকদের সাভারের চামড়া শিল্প পার্ক এলাকাতেই শ্রমিকদের বাসস্থান নির্মাণের কথা থাকলেও সে বিষয়ে তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এখন শ্রমিকরা যদি সাভারে যায় তাহলে তারা থাকবে কোথায়? শুধু তাই নয়, ৬ এপ্রিল থেকে হাজারিবাগের ট্যানারিগুলোতে বিদ্যুৎ, গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হলে কারখানা এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে। তখন শ্রমিকরা কী করবে, কোথায় যাবে?
গত বুধবার (২৯ মার্চ) বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. সেলিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ আগামী ঈদুল আজহা পর্যন্ত হাজারীবাগে থাকতে চেয়ে ট্যানারি মালিকদের করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৬১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০১৭
ইউএম/এমজেএফ