কিন্তু এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী চা প্রেমীদের এই পানীয় দুর্বলতাকে অধিক মুনাফা তোলার ফিকির হিসেবে বেছে নিয়েছেন। তৈরি করছেন কৃত্রিমগন্ধযুক্ত প্যাকেটজাত চা।
এসব নকল চা শ্রীমঙ্গলের বাজারে এখন বিক্রি হচ্ছে প্যাকেটে প্যাকেটে। আমলকি, ত্রিফলা, অর্জুন, তুলশি প্রভৃতি জনপ্রিয় ভেষজের নাম উল্লেখ করে তৈরি করা হয়েছে এসব তথাকথিত চা। প্রকৃতপক্ষে এগুলোতে ভেষজের কোনো উপাদান নেই বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই) কর্তৃপক্ষ।
পর্যটন নগরী ও চায়ের দেশ শ্রীমঙ্গল বেড়াতে এসে চা-প্রেমী পর্যটকরা এসব নিম্নমানের চা কিনে দারুণভাবে প্রতারিত হচ্ছেন প্রতিদিন। কৃত্রিমগন্ধযুক্ত এসব চায়ে রয়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। সম্প্রতি এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি আমলে নিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
শ্রীমঙ্গলের স্বনামধন্য চা-পাতা বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান ‘গুপ্ত টি হাউজ’ এর স্বত্ত্বাধিকারী পীযুষ কান্তি দাশগুপ্ত বলেন, আমলকি চা, ত্রিফলা চা, অর্জুন চা, তুলশি চা এর বিপণন কর্তৃপক্ষ প্রথমেই এই চাগুলো বিক্রয়ের জন্য আমাদের কাছে আসেন। কিন্তু আমরা পরীক্ষা করে দেখি - ওই চা কৃত্রিম গন্ধযুক্ত।
বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই) এর সিনিয়র ফার্ম অ্যাসিসটেন্ট মুজিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমলকি চা, ত্রিফলা চা, অর্জুন চা, তুলশি চা প্রভৃতি চায়ের নামে যা বিক্রি হচ্ছে তা আসলে এক ধরনের প্রতারণা। কারণ এগুলোতে আমলকি, ত্রিফলা, অর্জুন কিংবা তুলশি কোনো প্রকারের জেষজ উপাদান নেই। শুধু ওইসবের পাউফিউম ছিটানো রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, মজার ব্যাপার হলো- আমলকি, ত্রিফলা, অর্জুন এবং তুলশি প্রভৃতি প্রতারণামূলক নিম্নমানের চা উচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে। এই চাগুলো প্যাকেটজাত হওয়ায় দেখে নেয়া বা যাচাই করে নেয়ার সুযোগ নেই। ফলে খারাপ চা প্যাকেটবন্দি করার সুযোগ আরো ফলপ্রসু হচ্ছে। পর্যটকরা চায়ের গুণাগুণ বিচারে অভিজ্ঞ না হওয়ায় এ সুযোগটি গ্রহণ করছে অসাধু চা প্রস্তুত এবং বিপণন প্রতিষ্ঠানগুলো।
বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে এসব নিম্নমানের চাপাতার একটি তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশ চা বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এসব প্রতারণামূলক নিম্নমানের চা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান বিটিআরআই’র এই ঊর্ধ্বতন খামার সহকারী।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৭
বিবিবি/জেডএম