ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প

সাভারে গিয়েও দূষণের আশঙ্কায় চামড়াশিল্প!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৭
সাভারে গিয়েও দূষণের আশঙ্কায় চামড়াশিল্প! নদী-নালার পানিতে ছড়িয়ে পড়ছে বিষাক্ত কেমিক্যালযুক্ত পানি। ছবি: বাংলানিউজ

সাভারের চামড়াশিল্প এলাকা ঘুরে: একেবারে দোরগোড়ায় ঈদ-উল আযহা। চামড়া সংগ্রহের সবচেয়ে বড় ও প্রধান মৌসুম এটি। কিন্তু শত শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করেও এখন পর্যন্ত এ শিল্পকে পরিবেশের উপযোগী করে গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি।

মারাত্মক দূষণ থেকে বুড়িগঙ্গা নদী ও রাজধানীবাসীকে রক্ষায় হাজারীবাগ থেকে সরিয়ে সাভারের হেমায়েতপুরের হরিণধারায় গড়ে তোলা হয়েছে বিসিক চামড়া শিল্পনগরী। তবে বিশেষায়িত এই শিল্পাঞ্চলে ১৫৫টি কারখানার মধ্যে এখন পর্যন্ত উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করতে পেরেছে মাত্র ৬৭টি।

ওই ৬৭টি কারখানার বর্জ্য ব্যবস্থাপনাতেই হিমশিম খাচ্ছে বিসিক কর্তৃপক্ষ।

 ড্রেন অকেজো হয়ে রাস্তায়ই উপচে পড়ছে বিষাক্ত পানি।                                          ছবি: বাংলানিউজএলাকাবাসীর অভিযোগ, উৎপাদন প্রক্রিয়া পুরোপুরিভাবে শুরুর আগেই হেমায়েতপুরের পরিবেশকে বিষিয়ে তুলছে ট্যানারিশিল্প। বাতাসের সঙ্গে উৎকট দুর্গন্ধের পাশাপাশি নদী-নালার পানিতেও ছড়িয়ে পড়ছে বিষাক্ত কেমিক্যালযুক্ত পানি।

তরল বর্জ্য পরিশোধনের সিইটিপিও এখন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ আকারে চালু করা যায়নি। এমনকি সরেজমিনে গিয়ে সিইটিপি থেকে পরিশোধিত বর্জ্য নদীতে ফেলতেও দেখা গেছে। এর প্রভাবে নদীদূষণে মাছ মরে ভেসে ওঠার অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা।

তারা বলছেন, পরিবেশবান্ধব কোনো কাজই এখানে এখনো করা হয়নি। ভাঙ্গা রাস্তা-ঘাটের যেখানে-সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। রাতে চলে না সড়কবাতিও।

চাপা ক্ষোভ নিয়ে এলাকার মানুষ আশঙ্কা করছেন, কোরবানির পশুর চামড়া এখানে আনার পর  সমস্যা আরো ভয়াবহ হতে পারে।

 ভাঙ্গা রাস্তা-ঘাটের যেখানে-সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে।  ছবি: বাংলানিউজবিসিক চামড়া শিল্পনগরী ঘুরে আরও দেখা গেছে, আধুনিক এই শিল্পাঞ্চলে প্রবেশের আগেই দম বন্ধ হয়ে আসে সাধারণ মানুষের। যেখানে-সেখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা হচ্ছে চামড়া। ড্রেন থেকে উপচে রাস্তা-ঘাটে পড়ছে কেমিক্যালযুক্ত তরল বর্জ্য। তাতে দুর্গন্ধ আরো প্রকট হচ্ছে। সড়কগুলোও খানা-খন্দে ভরে যাচ্ছে, বৃষ্টি হলেই হাঁটু পানি জমছে।

বর্জ্যের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা পন্থাগুলোর কোনোটিই যথাযথভাবে মেনে চলছে না কারখানাগুলো। তরল বর্জ্যের ড্রেনে পুরো চামড়ার অংশ ফেলে দিচ্ছেন কারখানার শ্রমিকরা। ফলে ড্রেন অকেজো হয়ে রাস্তায়ই উপচে পড়ছে বিষাক্ত পানি।

হেমায়েতপুর ঝাউচর গ্রামের মো. হানিফ অভিযোগ করেন, ‘ট্যানারি কারখানাগুলোর বিষাক্ত পানিতে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। চামড়ার পচা গন্ধে বাসা-বাড়িতে বসবাসও অনেক কঠিন হয়ে গেছে’।

ট্যানারি ওর্য়াকার্স ইউনিয়ন সভাপতি আবুল কালাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘সরকার যে উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা নিয়ে হাজারীবাগ থেকে সাভারের হেমায়েতপুরে চামড়াশিল্প স্থানান্তর করেছে- তা পূরণ হচ্ছে না ট্যানারি মালিকদের উদাসীনতায়’।

বৃষ্টি হলেই হাঁটু পানি জমে বাড়াচ্ছে দূষণের মাত্রা।  ছবি: বাংলানিউজ ‘এখানে শ্রমিকদের জন্য কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা রাখেননি কারখানা কর্তৃপক্ষ। নেই কোনো হাসপাতাল, মসজিদ, বিনোদন ও আবাসন সুবিধাও’।

বাংলাদেশ সময়: ১২১০ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৭
এএসআর
** কোরবানির চামড়ার চাপ নিতে প্রস্তুত নয় সাভার!

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।