মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) যশোর জেলার ৭ নং নাভারণ ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় বিড়ি শিল্প পরিদর্শনরত বাংলানিউজ টিমের কাছে এমন কথা বলছিলেন স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও চেয়্যারম্যান শাহজাহান আলী।
শাহজাহন আলী বলেন, আমার ইউনিয়নের ৫ হাজার লোক বিড়ি শিল্পে জড়িত।
তিনি আরো বলেন, বিড়ি মানুষের ক্ষতি করে এজন্য সরকার তা বন্ধ করে দিতে চায়। আমরাও একমত। কিন্তু শুধু বিড়ি কেন? ক্ষতি তো সিগারেট, গুল, বিড়িসহ তামাক থেকে উৎপাদিত সব পণ্যতেই হয়। আমি যতোটুকু জানি সিগারেটে ক্ষতি বেশি হয়। কারণ সিগারেটে নতুন করে নিকোটিন মেশানো হয়, কিন্তু বিড়িতে মেশানো হয় না।
এসময় এ আওয়ামী লীগ নেতা প্রশ্ন রেখে বলেন, তাহলে শুধু বিড়ি কেন? বন্ধ করলে সব ধরনের তামাকজাত পণ্যই বন্ধ করতে হবে। আর যদি শুধু বিড়ি বন্ধ করা হয় তাহলে সেটা আমাদের দেশি শিল্পকে ধ্বংস করে অসহায় বিধবা আর ঘরহারা মানুষদের পথে বসানো হবে।
শুধু বিড়ি বন্ধ করে মাদক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব কিনা সে বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন স্থানীয় এই জন প্রতিনিধি।
তিনি বলেন, বিড়ি যদি বন্ধ করা হয় তাহলে মানুষ কি নেশা করবে না? অবশ্যই করবে, কিন্তু সেটা সিগারেট দিয়ে করবে অথবা আমাদের এলাকা যেহেতু বর্ডারের কাছে এজন্য অনেকেই পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে পাতার বিড়ি চোরাচালান শুরু করবে। এতে মাদক মাদকের স্থানেই থাকবে। শুধু শুধু সরকার রাজস্ব হারাবে।
একই কথা বলেন বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের আহ্বায়ক(দক্ষিণাঞ্চল, যশোর) ফজলুর রহমান।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, নাভারণ এলাকা থেকে ইন্ডিয়ার দূরত্ব ৫ কিলোমিটার। এখানকার মানুষ বর্ডার এলাকার হওয়ায় তারা নানা ধরনের অবৈধ কাজ বা চোরাচালান করার সুযোগ বেশি পায়। এখন তারা বিড়ি ফ্যাক্টরিতে কাজ করে আয় করতে পারছে। কিন্তু যখন এই ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাবে, তখন তারা বেকার হয়ে পড়বে। এতে তারা চোরাচালানসহ নানা ধরনের অবৈধ কাজে জড়িয়ে পড়বে। পাতার বিড়িসহ বিভিন্ন মাদকে ছেয়ে যাবে দেশ। তাছাড়া এ এলাকার আইন-শৃংখলা পরিস্থিতিও ভেঙে পড়বে।
ফজলুর রহমান বলেন, অর্থমন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের আমলারা সিগারেট কোম্পানির সাথে কথা বলে এসে ঘোষণা দেয় বিড়ি ২ বছরের মধ্যে বন্ধ করা হবে। আমরা বুঝি না কেনো এমন ঘোষণা আসে? এমন সিদ্ধান্ত আসলে দেশে গণ বিস্ফোরণ হবে। লাখ লাখ বিড়ি শ্রমিক রাস্তায় নেমে আসবে।
তিনি বলেন, আমাদের বিশ্বাস বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা নিরীহ, সাধারণ, খেটে খাওয়া মানুষের নেত্রী। তিনি আমাদের পেটে লাথি মারবেন না। সুতরাং অর্থমন্ত্রী যতই বলুক না কেন প্রধানমন্ত্রী এটা কখনো হতে দেবেন না বলে আমাদের বিশ্বাস।
সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত দেশে আর বিড়ি থাকবে না বলে ঘোষণা দেন। তার এমন ঘোষণায় সারাদেশের বিড়ি শ্রমিকরা আন্দোলনে নামেন। এছাড়া সরকারে বিভিন্ন মন্ত্রীসহ সংসদ সদস্যরাও অর্থমন্ত্রীর এ বক্তব্যের সমালোচনা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৭
এসআইজে/জেডএম