ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প

১০ বছর পেরিয়ে ফার্মা এক্সপো

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৯
১০ বছর পেরিয়ে ফার্মা এক্সপো এশিয়া ফার্মা ও এশিয়া ল্যাব এক্সপোতে একটি স্টল

ঢাকা: টানা ১০ বছর ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য বা ওষুধ শিল্পের প্রদর্শনী সম্পন্ন করার পর ১১তম আয়োজনে পা রেখেছে বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতি। এবারের প্রদর্শনীকে সফল এক্সপো বলে আখ্যায়িত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এ সফলতাকে আরো এগিয়ে নিয়ে দেশের শ্রেষ্ঠ শিল্প হিসেবে ওষুধ শিল্পকে দাঁড় করানোর অঙ্গীকারও ব্যক্ত করেছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (৩১ জানিয়ারি) রাজধানীর কুড়িলে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) শুরু হয়েছে ১১তম এশিয়া ফার্মা ও এশিয়া ল্যাব এক্সপো।  

এবার প্রায় ৫০টিরও বেশি দেশ অংশ নিয়েছে বাংলাদেশের ওষুধ ব্যবসায় অংশীদার হওয়ার উদ্দেশ্যে।

এদের মধ্যে অনেকেই বাংলাদেশে এই প্রথম ব্যবসার উদ্দেশ্যে এসেছে আবার অনেকেই ভিন্ন ভিন্ন সময় ধরে এ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। সাথে রয়েছে দেশীয় সব নামিদামি ওষুধ কোম্পানি।

এক্সপো ঘুরে দেখা যায়, ওষুধ ব্যবসার সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল (এপিআই), প্রয়োজনীয় রাসায়নিক দ্রব্য, যন্ত্রপাতি, কারখানা ব্যবস্থাপনার সরঞ্জামাদি ও গবেষণার জন্য প্রয়জনীয় ল্যাবরেটরির উপাদানের সমাহার।

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এসেছে বিভিন্ন ধরনের গ্যাসকেটের চাইনিজ কোম্পানি হোমেন। কোম্পানিটির বৈদেশিক বিক্রির ব্যবস্থাপক ড্যান সং বাংলানিউজকে জানান, আমাদের রাবারের তৈরি গ্যাসকেটগুলো নিয়ে আমরা বাংলাদেশে এই প্রথমবারের মতো এসেছি। বাংলাদেশ ওষুধ শিল্পে উন্নতি করেছে বলেই আমরা ব্যবসা করতে আগ্রহী হয়েছি। আমাদের পণ্যগুলোর ম্যানুফেকচারিং অন্যান্যদের চেয়ে ভিন্ন।

ভারত থেকে এসেছে অ্যাডভেন্ট কেমবায়ো প্রাইভেট লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির দাবি তারাই একেবারে নতুন প্রযুক্তিতে কেমিক্যাল উৎপন্ন করছে যা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম ও এখন পর্যন্ত একমাত্র। অ্যাডভেন্টের আঞ্চলিক বিক্রির ব্যবস্থাপক অভিজিৎ চক্রবর্তী বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের সোডিয়াম লরেল সালফেট (৯৯ শতাংশ) পণ্যটি যেভাবে উৎপাদন করি সেভাবে আর কেউ এখনও করে না। দক্ষিণ এশিয়ায় আমরাই প্রথম যেটা হাই পারফরমেন্স লিকুইড ক্রোমাটোগ্রাফির (এইচপিএলসি) জন্য অধিকতর উপযোগী। এছাড়া এনএন-ডাইমিথাইলডোডেক্ল্যামিন এন-অক্সাইড (৯৯ শতাংশ, ডিডিএও) এ ধরণের একটি পণ্য, যা উৎপাদনের ক্ষেত্রে আমরাই একমাত্র। আমরা বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করছি।

এদিকে তুর্কি থেকে এয়ারকে নামে কোম্পানি এসেছে রক্ষণাবেক্ষণ প্যাকেজসহ উন্নতমানের কারখানার অবকাঠামো নির্মাণ ও ফার্মাসিউটিক্যাল কারখানার যন্ত্রপাতি নিয়ে।

আবার একটি ওষুধ তৈরির কারখানার জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট। কেননা রাসায়নিক দ্রব্যাদি মিশ্রিত পানি পরিবেশের জন্য ব্যাপক ক্ষতিকর। তেমনই উন্নতমানের এই অপরিহার্য বিষয়টি নিয়ে এসেছে দেশীয় কোম্পানি আয়োন একচেঞ্জ এনভায়রনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট (বিডি) লিমিটেড।

এভাবে ওষুধ শিল্পে প্রয়োজনীয় সকল অত্যাধুনিক সব পণ্যের সমাহারে জমে উঠেছে এক্সপো। যেখানে দর্শনার্থী হিসেবে উপস্থিত হচ্ছে বিভিন্ন ফার্মা কোম্পানির প্রতিনিধি মালিক ও এ বিষয়ক শিক্ষার্থীরা।

সেরকমই একজন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী রুদ্র রায় বাংলানিউজকে বলেন, এই এক্সপোটিতে প্রত্যেকবার আসি। গতবারও এটা আইসিসিবিতে হয়েছিল। বইতে বা ইন্টারনেটে যেগুলোর ছবি দেখি তার বাস্তব রূপ এখানে দেখতে পাই সহজে। এতে পড়াশোনার আগ্রহ বাড়ে।

এক্সপোটির বিষয়ে বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, ১০ বছর ধরে এই এক্সপো হচ্ছে। শুরুতে আমরা খুব অল্প পরিসরে এটার আয়োজন করতাম। এখন এর আকার ও আয়োজন দেখেই প্রমাণিত হয় এটি একটি সফল এক্সপো। তাছাড়া আমরা ওষুধ শিল্পে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছি বলেই বিদেশিরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে এক্সপোতে অংশগ্রহণ করেন। দেশীয় ফার্মা কোম্পানিগুলোর মালিকদের কাছে অনুরোধ থাকবে, এই সফলতাকে আরো দীর্ঘায়িত করেন। যে সকল বিদেশি মেশিনপত্র এখানে দেখছেন সেসব কোম্পানির সঙ্গে টেকনিক্যাল সহযোগিতা নিয়ে দেশে এইসব মেশিনপত্র উৎপাদন শুরু করেন। আমি সরকারের একজন প্রতিনিধি হিসাবে বলছি, সরকার এতে সহযোগিতা করবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৮
এমএএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।