ঢাকা: রপ্তানিমুখী এমএস বিলেট উৎপাদন ও বিশ্ববাজারে রপ্তানি বাড়িয়ে জাতীয় অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে কার্যকর অবদান রাখার জন্য ইস্পাত শিল্প উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিল্প শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
অভ্যন্তরীণ চাহিদার তুলনায় দেশীয় ইস্পাত শিল্পের উৎপাদন ক্ষমতা বেশি থাকলেও এটি পুরোপুরি কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেডের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে বছরব্যাপী এমএস বিলেট উৎপাদন এবং রপ্তানির নতুন বাজার খুঁজে বের করতে সংশ্লিষ্ট শিল্প উদ্যোক্তাদের পরামর্শ দেন শিল্পমন্ত্রী।
বুধবার (১৮ নভেম্বর) জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেডের উদ্যোগে চীনে ২৫ হাজার মেট্রিক টন এমএস বিলেট রপ্তানির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। অন্যদের মধ্যে চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট মাহাবুবুল আলম, জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলমগীর কবির, জিপিএইচ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এবং অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলমাস শিমুল আলোচনায় অংশ নেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার আগে বাঙালিদের কোনো ইস্পাত কারখানা না থাকলেও বর্তমানে দেশে প্রায় ৪০০টি ইস্পাত কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানার বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন। দেশের অভ্যন্তরীণ ইস্পাত ব্যবহারের পরিমাণ ৭.৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন। ইস্পাত শিল্পখাত বিকাশের পথে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা দূর করতে শিল্প মন্ত্রণালয় আন্তরিকভাবে কাজ করছে। এ শিল্পের কাঁচামাল সহজলভ্য করতে মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে জাহাজভাঙা কার্যক্রমকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করেছে। চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলায় জাহাজভাঙা শিল্প জোন গড়ে তোলা হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ আইন ২০১৮ পাস করে এর আওতায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় জাহাজভাঙা শিল্প কারখানাগুলো পরিবেশবান্ধব করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব শিল্প-কারখানায় হংকং কনভেশন ২০০৯ অনুযায়ী ইয়ার্ড শিপ রিসাইক্লিং ফ্যাসিলিটি স্থাপন করা হচ্ছে। এর ফলে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তারা উপকৃত হচ্ছেন এবং দেশেই ইস্পাত শিল্পের গুণগত মানসম্পন্ন কাঁচামাল সহজলভ্য হচ্ছে। স্ক্র্যাপ আমদানি এবং উৎপাদিত পণ্য রপ্তানিকালে দুইবার ফ্রেইট খরচসহ অন্যান্য শুল্ক বাধা অপসারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সমর্থন থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
করোনাকালীন বাংলাদেশের অর্থনীতির গতিময়তার উদাহরণ টেনে শিল্পমন্ত্রী বলেন, কোভিড মহামারির মধ্যেও ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৫.২৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যেখানে শিল্পোন্নত দেশগুলোর জিডিপি প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক। বেসরকারিখাতের শিল্প উদ্যোক্তারাই দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির নেপথ্যের নায়ক। তাদের মেধা, সৃজনশীল চিন্তা, নিরন্তর পরিশ্রম, সময়োপযোগী ও সাহসী সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের শিল্পখাত সাফল্যের পথ ধরে এগিয়ে চলেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২০
জিসিজি/এমজেএফ