ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

দেশে নতুন স্মার্ট ফোন ফ্যাক্টরি চালু করলো ট্রানশান

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৭ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২৩
দেশে নতুন স্মার্ট ফোন ফ্যাক্টরি চালু করলো ট্রানশান ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: দেশের স্থানীয় বাজারে স্মার্ট ডিভাইসের চাহিদার কথা মাথায় রেখে শীর্ষস্থানীয় স্মার্ট ডিভাইস ও মোবাইল সার্ভিস প্রদানকারী ট্রানশান হোল্ডিংস বাংলাদেশে উদ্বোধন করেছে ‘আই স্মার্ট ইউ’ ফ্যাক্টরি।  

ওই ফ্যাক্টরিটির অবস্থান নারায়ণগঞ্জের মেঘনা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনমিক জোনে।



বুধবার (২৪ মে) এ ফ্যাক্টরির উদ্বোধন করেন ট্রানশান হোল্ডিংসের চেয়ারম্যান এবং জেনারেল ম্যানেজার জর্জ জু এবং ‘আই স্মার্ট ইউ’ বাংলাদেশের সিইও রেজওয়ানুল হক।  

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন অথরিটি চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ভাইস চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ এবং বাংলাদেশে চীনের দূতাবাসের ইকোনমিক অ্যান্ড কমার্শিয়াল কাউন্সেলর সং ইয়াং।

অন্যান্যদের মধ্যে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ড্রাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল এবং গুগুল পার্টনারশিপ ডিরেক্টর মাহির শাহীন উপস্থিত ছিলেন।  



আই স্মার্ট ইউ টেকনোলজি বাংলাদেশ লিমিটেড, ট্রানশান হোল্ডিংসের একটি সহপ্রতিষ্ঠান, যারা জনপ্রিয় স্মার্ট ব্র্যান্ডস টেকনো, ইনফিনিক্স, আইটেল, ওরাইমো এবং সাইনিক্সের পরিবেশক।

অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার স্বল্পমূল্যে স্মার্টফোন বাজারে নিয়ে আসার জন্য এবং ডিজিটাল শূন্যতা পূরণের জন্য ট্রানশানকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রকল্পের ঘোষণার পর দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের বিপুল বৃদ্ধি ঘটে। বর্তমানে যে সংখ্যা ১৩০ মিলিয়ন। তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকারের লক্ষ্য এবং ডিজিটাল চ্যালেঞ্জের কথা বলেন।

মোস্তাফা জব্বার আরও বলেন, বাংলাদেশে নতুন মোবাইল কারখানা চালু হচ্ছে সেটা আনন্দের। স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদন করা। দেশে এখন চাহিদার ৯৫ শতাংশ মোবাইল উৎপাদন হচ্ছে। ছোটখাটো সমস্যা মোবাইল উৎপাদকদের আছে, তাদের সমস্যাগুলো গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করি। আমরা যেন হ্যান্ডসেট তৈরির জন্য হাব হিসেবে গড়ে উঠতে পারি এবং রপ্তানিও বাড়াতে হবে। একদিকে যেমন দেশে মোবাইল উৎপাদন করছে পাশাপাশি আমাদের তরুণ জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানও হচ্ছে।



অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আই স্মার্ট ইউ ফ্যাক্টরির প্রথম ধাপের বিনিয়োগ ২২ মিলিয়ন ডলার, যা ট্রানশানের স্থানীয় বাজারের প্রতি অঙ্গীকারের অংশ। নকশা থেকে নির্মাণ সব ক্ষেত্রেই এ ফ্যাক্টরি সর্বাধুনিক প্রোডাকশন স্ট্যান্ডার্ড বজায় রাখছে, এর অত্যাধুনিক লে-আউট আধুনিক মোবাইলফোন তৈরিতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ২০ হাজার বর্গমিটারের এ বিশাল ফ্যাক্টরিতে গুণগত মান এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য থাকছে উন্নত প্রযুক্তি। উৎপাদন প্রক্রিয়াকে নিরবচ্ছিন্ন রাখতে টেকসই মান ও দক্ষতার দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। এ প্রচেষ্টার ফলে বাংলাদেশের স্মার্টফোনের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে ট্রানশান সফল হবে।

বাংলাদেশে এ ফ্যাক্টরি স্থাপন ট্রানশানের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। এ ফ্যাক্টরিতে দুই হাজার স্থানীয় লোক কাজের সুযোগ পাবেন, যা স্থানীয় অর্থনীতি এবং এই অঞ্চলের কর্মসংস্থান বাড়াতে অবদান রাখবে। ট্রানশান শিক্ষা এবং ট্রেনিং এ বিনিয়োগের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এর ফলে স্থানীয় মেধার বিকাশ এবং স্কিল ডেভেলপমেন্টের সুযোগ আছে।

বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের এক লাখ ৫৫ হাজার কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার। তারপরও বেশিরভাগ মানুষ মোবাইলফোন ব্যবহার করে। কাজেই মানসম্মত মোবাইলফোন জরুরি। আমাদের জনসংখ্যার চেয়েও মোবাইল গ্রাহক বেশি। সঠিক সময়ে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর এ কারখানা উদ্বোধন করছেন এজন্য ধন্যবাদ।  

তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য অনেক দেশ আগ্রহী। বিনিয়োগের স্থিতিশীলতা বাংলাদেশে বেশি।  



তিনি জানান, আমরা ১৬টি কোম্পানিকে স্মার্টফোন তৈরির অনুমতি দিয়েছি। এর মধ্যে ১৪টি চালু হয়েছে। কিন্তু গ্রাহক যে সেবা পাওয়ার কথা তার ব্যত্যয় ঘটছে। আশা করবো, নতুন কোম্পানি দেশের সেরা হবে। বাংলাদেশের ফোনগুলো বিদেশি মার্কেট ধরতে পারবে। আমরা বিটিআরসির সহযোগিতা বাড়িয়ে দেবো, যেন রপ্তানি করে বেশি আয় করতে পারে।

ট্রানশান হোল্ডিংসের চেয়ারম্যান এবং জেনারেল ম্যানেজার জর্জ জু বাংলাদেশকে তাদের ব্যবসার প্রসারে একটি কৌশলগত বাজার হিসাবে উল্লেখ করে বলেন, প্রায় ১৭২ মিলিয়নের বেশি জনসংখ্যার এ দেশে গ্রাহক পর্যায়ে সাশ্রয়ী এবং উচ্চমানের ফিচারসহ মোবাইলফোনের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এর ফলে বাংলাদেশের নতুন সম্ভবনাময় বাজার তৈরি হচ্ছে।

জু আশা প্রকাশ করেন ‘আই স্মার্ট ইউ’র মাধ্যমে বাংলাদেশে যে বিনিয়োগ আসবে সেটা প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় উন্নয়নের পাশাপাশি বাংলাদেশের ডিজিটাইজ ও আধুনিকায়নেও ভূমিকা রাখবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১১ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২৩
এমআইএইচ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।