ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা মঙ্গলবার জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যে একটি ইউটিলিটি কোম্পানির একটি পারমাণবিক চুল্লি আরও ২০ বছর চালু রাখার জন্য একটি চুক্তি করেছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
কনস্টেলেশন এনার্জির সঙ্গে এই চুক্তি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক কোম্পানিটির প্রথম চুক্তি। যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যুতের চাহিদা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে, যার একটি বড় কারণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও ডেটা সেন্টারের ক্রমবর্ধমান ব্যবহার।
গুগল ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক একটি ইউটিলিটি কোম্পানির তৈরি অর্ধডজন ছোট পারমাণবিক চুল্লির মাধ্যমে তাদের ডেটা সেন্টারে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে চুক্তি করেছে।
অন্যদিকে, মাইক্রোসফটের অনুরূপ একটি চুক্তির ফলে পুনরায় চালু হতে যাচ্ছে থ্রি মাইল আইল্যান্ড পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র—যেটি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ পারমাণবিক দুর্ঘটনা ও তেজস্ক্রিয়তা ছড়ানোর ঘটনার স্থান হিসেবে পরিচিত।
ইলিনয় অঙ্গরাজ্য কনস্টেলেশন এনার্জির পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ক্লিনটন ক্লিন এনার্জি সেন্টারকে ভর্তুকি দিয়ে সহায়তা করে। এই ভর্তুকি আসে গ্রাহকদের অর্থায়নে পরিচালিত একটি ‘শূন্য-নিঃসরণ ক্রেডিট’ কর্মসূচির মাধ্যমে, যা কার্বন নিঃসরণ প্রায় শূন্য এমন বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সুবিধা দেয়।
এই কর্মসূচির মেয়াদ ২০২৭ সালে শেষ হয়ে যাবে। এরপর থেকে মেটার বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির আওতায় একটি অনির্দিষ্ট অর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে, যা কেন্দ্রটির পুনঃলাইসেন্স ও পরিচালনা ব্যয়ের জন্য ব্যয় হবে।
চুক্তিটির মাধ্যমে কনস্টেলেশন ক্লিনটন বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার ১২১ মেগাওয়াট থেকে আরও ৩০ মেগাওয়াট বাড়াতে পারবে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৮ লাখ বাড়ির সমপরিমাণ বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। ১৯৮৭ সালে চালু হওয়া ক্লিনটন কেন্দ্রটির লাইসেন্স নবায়নের জন্য গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে আবেদন করেছে কনস্টেলেশন, যার মেয়াদ ২০৪৭ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর কথা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের চুক্তি অন্য বড় প্রযুক্তি কোম্পানির জন্যও একটি মডেল হিসেবে কাজ করতে পারে—যারা বিদ্যমান পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সহায়তার পাশাপাশি ডেটা সেন্টার চালাতে নতুন পারমাণবিক ও অন্যান্য জ্বালানির উৎস ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে।
মেটার গ্লোবাল এনার্জি বিভাগের প্রধান উর্বি পারেখ বলেন, আমরা ইউটিলিটি কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে যে বার্তাটি স্পষ্টভাবে পাই, তা হলো—তারা নিশ্চিত হতে চায় যে বর্তমান সময়েও যে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চালু আছে, সেগুলো ভবিষ্যতেও চালু থাকবে।
কনস্টেলেশন এনার্জির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জো ডোমিনগেজ বলেন, আমরা শুধু ইলিনয়ের নয়, বরং সারা দেশের অন্যান্য ক্লায়েন্টদের সঙ্গেও এমন আলোচনা করছি—যাতে তারা মেটার মতো এগিয়ে এসে আমাদের সহায়তা করে। মূলত, এই সহায়তার মাধ্যমে আমরা প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ করতে পারি, বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর লাইসেন্স নবায়ন করতে পারি এবং সেগুলোকে চালু রাখতে পারি।
আরএইচ