ঢাকা, শনিবার, ৭ আষাঢ় ১৪৩২, ২১ জুন ২০২৫, ২৪ জিলহজ ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

সব সম্পদ শতাধিক সন্তানের জন্য রেখে যাবেন টেলিগ্রাম প্রতিষ্ঠাতা  

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০:৪৩, জুন ২১, ২০২৫
সব সম্পদ শতাধিক সন্তানের জন্য রেখে যাবেন টেলিগ্রাম প্রতিষ্ঠাতা  

টেলিগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও পাভেল ডুরভ তার ১৩.৯ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ শতাধিক সন্তানের জন্য রেখে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু তার শতাধিক সন্তান রয়েছে শুনে যেন অবাকই হতে হয়।

 

সম্প্রতি ফ্রান্সের রাজনৈতিক ম্যাগাজিন লা পইয়েন্ট-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিস্ময়কর এই তথ্য জানিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন রাশিয়ায় জন্ম নেওয়া এই প্রযুক্তি উদ্যোক্তা।

৪০ বছর বয়সী ডুরভ জানান, তিনি এখন পর্যন্ত তিনজন সঙ্গীর সঙ্গে ছয়টি সন্তানের আইনগত পিতা। তবে এখানেই শেষ নয়— গত ১৫ বছর ধরে বিভিন্ন দেশে শুক্রাণু দান করার ফলেই বিশ্বের ১২টি দেশে জন্ম নিয়েছে আরও শতাধিক শিশু, যাদেরকেও তিনি সমানভাবে নিজের সন্তান বলে মেনে নিচ্ছেন।

তিনি বলেন, ওরা সবাই আমার সন্তান এবং সবারই সমান অধিকার থাকবে। আমি চাই না আমার মৃত্যুর পর ওরা একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করুক।

ডুরভ জানান, শুক্রাণু দানের এই উদ্যোগ শুরু হয় একজন বন্ধুর অনুরোধে। এরপর সময়ের সাথে সাথে তিনি জানতে পারেন, তার দানের ফলে শতাধিক শিশু পৃথিবীর আলো দেখেছে। গত বছরও তিনি টেলিগ্রামে এক পোস্টে বলেন, এক চিকিৎসক তাকে বলেছিলেন, তার “উচ্চমানের জেনেটিক উপাদান” সমাজের জন্য দান করাটা নৈতিক দায়িত্ব।

তবে তার এই বিপুল সম্পত্তির উত্তরাধিকারীরা তা সঙ্গে সঙ্গে হাতে পাবেন না। ডুরভ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তার কোনো সন্তানই পরবর্তী ৩০ বছর পর্যন্ত এই সম্পদের কোনো অংশ ব্যবহার করতে পারবে না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আমি চাই তারা নিজেরা সংগ্রাম করে বড় হোক, নিজের পায়ে দাড়াক, কেবল ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ওপর নির্ভর করে নয়।

তিনি আরও বলেন, আমি চাই ওরা সৃষ্টি করুক, নিজের ওপর বিশ্বাস করুক এবং বাস্তব জীবন সম্পর্কে ধারণা লাভ করুক। ধনীর দুলাল হয়ে বেড়ে ওঠা তাদের ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

উইল তৈরির কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ডুরভ বলেন, স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করলে, শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর অনেকেরই আপনি শত্রু হয়ে ওঠেন। সে কারণেই আমি আগেভাগে প্রস্তুতি নিতে বাধ্য হয়েছি।

তিনি শুধু নিজের সন্তানদের নয় বরং টেলিগ্রামকেও ভবিষ্যতের জন্য সুরক্ষিত রাখতে চান। তার ভাষায়, এই প্রতিষ্ঠানটি যেন সবসময় সেই মূল্যবোধ ধরে রাখে, যা আমি রক্ষা করে চলেছি।

তবে ডুরভের জীবনের গল্প এখানেই থেমে নেই। বর্তমানে তিনি ফ্রান্সে একাধিক ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি। গত বছর ফরাসি কর্তৃপক্ষ তাকে গ্রেফতার করেছিল, টেলিগ্রাম নাকি মাদক পাচার ও শিশুপর্নোগ্রাফি ছড়ানোয় সহায়তা করেছে— এমন অভিযোগে। যদিও তিনি এসব অভিযোগকে “সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও হাস্যকর” বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

ব্লুমবার্গের তথ্য অনুযায়ী, ডুরভের মোট সম্পদের পরিমাণ আনুমানিক ১৩.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বর্তমানে তিনি দুবাইয়ে বসবাস করছেন, যেখানে টেলিগ্রামের প্রধান কার্যালয় অবস্থিত। তিনি ফ্রান্স ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দ্বৈত নাগরিক। ২০১৩ সালে ডুরভ টেলিগ্রাম চালু করেন। রাশিয়ায় এটি এখনও অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস

এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।