ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রে যাদের অভিবাসনের সুযোগ তৈরি হয়েছে তারাই হতে পারেন পিপল এন টেকের সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী। স্বপ্নের দেশে যাওয়ার আগেই তারা নিজেদের প্রস্তুত করে নিতে পারেন।
পিপল এন টেকের ঢাকা অফিস এখন পুরোদস্তুর চালু। ৬০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে প্রথম ব্যাচের ক্লাস চলছে। তারা শিখছে কম্পিউটারে বিভিন্ন ডিজাইনিংয়ের কাজ, শিখছে নতুন নতুন সফটওয়্যার, প্রোগ্র্যামিং। এগুলো শিখে যারা যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন তাদের জন্য মূলধারার কাজ, স্বপ্নের সিক্স ডিজিটের (অর্থাৎ বছরে ১০০০০০ ডলার) চাকরি নিশ্চিত থাকবে।
পিপল এন টেকের স্বপ্ননির্মাতা আবুবকর হানিপ এতটাই আস্থাশীল যে তার ভাষায়, এরা এয়ারপোর্ট থেকে সরাসরি গিয়ে কাজে যোগ দেবেন।
আস্থা আবুবকর হানিপের অমূলক নয় সে কথা বলা যায় পিপল এন টেকের ট্র্যাক রেকর্ড ঘেটে। যুক্তরাষ্ট্রে এই প্রতিষ্ঠান এখন দশ বছরের পুরোনো। সেখানকার মূলধারায় একটি গ্রহণযোগ্য প্রোগ্র্যামিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। হাজার হাজার গ্রাজুয়েট পিপল এন টেকের প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন মূল ধারায় কাজ করছে। সে কাজ কেবলই যে সিক্স ডিজিটের তা নয়, কারো কারো বছরে ৩ লাখ ডলারের চাকরিও রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে পারি জমিয়ে এরাই একসময় হয় ট্যাক্সি চালাতেন কিংবা রেস্টুরেন্টে, বারে রাতভর কাজ করতেন। বছরে তাদের মোট আয় ৩০ থেকে ৪০ হাজার ডলারে ওঠানামা করতো।
এটাই স্বপ্নপূরণ, বলেন আবুবকর হানিপ। বর্তমানে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন। গ্রিন রোডে প্রতিষ্ঠিত তার নতুন কার্যালয়ের প্রথম দিকগুলোতে নিজে কাছে থেকে কিছু কাজ এগিয়ে নিতে চান।
সেখানেই কথা হলো বাংলানিউজের সঙ্গে। কথা একই পুরোনো। যুক্তরাষ্ট্রে তিনি যা কিছু করেছেন, সেই একই উদ্যোগ নিয়ে ঢাকায় অফিস খুলেছেন। এখানে শিক্ষার্থীরা সহজেই কম্পিউটার প্রোগ্র্যামিং শিখবে, সফটওয়্যার বানানো শিখবে, আরও শিখবে নানা ধরনের ডিজাইনিং। যা তাদের ডিজিটাল যুগের সবচেয়ে যোগ্য মানুষে পরিণত করবে। এতে তাদের উন্নত আয়ের চাকুরি হবে, মিলবে উন্নত জীবনের সন্ধান।
কারা পেতে পারে এই সুযোগ? সে প্রশ্নের জবাবেই আবুবকর হানিপ বলছিলেন, যারা এখনই যুক্তরাষ্ট্রে যেতে প্রস্তুত তারা চলে আসুক পিপল এন টেকে। পুরো প্রস্তুতি নিয়েই তারা পা ফেলুক স্বপ্নের দেশে।
তিনি বলেন, অনেকেরই ভাই-বোন কিংবা নিকটাত্মীয় কেউ যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। তারাই স্পন্সর করে নিয়ে যেতে চাইছেন ভাই কিংবা বোনটিকে। অভিবাসন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত প্রায় তাদের জন্য এই আহ্বান তারা যেনো অড জব করার মানসিকতা নিয়ে দেশটিতে আর না যান। তারা আইটি খাতে প্রশিক্ষণ নিয়েই যাবেন। ওখানে গিয়ে আর তাদের ট্যাক্সি চালাতে কিংবা বারে ওয়াইন সার্ভ করতে হবে না।
পিপল এন টেক যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান এর একটি সার্টিফিকেট সর্বত্র গ্রহণযোগ্য, আর এর প্রশিক্ষণ পদ্ধতি এতটাই কার্যকর যে সেখানে মূলধারার সঙ্গে টেক্কা দিয়ে তা টিকে আছে, বলেন হানিপ।
এছাড়া আর কে এই সুযোগ নিতে পারে? সে প্রশ্নে আবুবকর হানিপ বলেন এইচ-ওয়ান ভিসার কথা। সারা বিশ্ব থেকে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিবছর ৬০ হাজার আইটি প্রোফেশনালকে তাদের দেশে যাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে এই ভিসার মাধ্যমে। বাংলাদেশ থেকে যারা এই ভিসার জন্য আবেদন করছেন, এবং এই ভিসা পেয়ে যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন তাদের জন্য পিপল এন টেকের প্রশিক্ষণটি গুরুত্বপূর্ণ। এরাও প্রশিক্ষণ নিয়ে গেলে এয়ারপোর্ট থেকেই কাজের অফার পাবেন, অনেকটা আস্থার সঙ্গে বলেন এই প্রকৌশলী।
দেশের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বছরে গড়ে ৫ হাজারের বেশি আইটি শিক্ষার্থী বের হচ্ছেন। এরাও নিতে পারেন এই প্রশিক্ষণটি, বলেন তিনি।
অনেকটা দুঃখ করেই আবুবকর হানিপ বলেন, আমি দেখছি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়ে বিসিএস দিয়ে পুলিশের চাকরি করছেন। এটা মেনে নেওয়া যায় না। যারা কম্পিউটার ডিসিপ্লিনে তাদের লেখাপড়া সম্পন্ন করছেন তারা অবশ্যই এই লাইনে তাদের ক্যারিয়ার তৈরি করবেন। পিপল এন টেক সেই ক্যারিয়ার তৈরির ক্ষেত্রে একটি সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারবে।
তিনি বলেন, কেবল যে বিদেশ যাওয়ার স্বপ্ন তাই নয়, দেশেও রয়েছে আইটি খাতে বিশাল সম্ভাবনা। সেখানে তারা অবদান রাখতে পারবেন। আর ঘরে বসেই তারা আউট সোর্সিংয়ের কাজ করে আয় করতে পারবেন বৈদেশিক মুদ্রা।
হানিপ বলেন, একজন প্রবাসী বাংলাদেশি যা আয় করেন তার মাত্র ২০ শতাংশ দেশে পাঠাতে পারেন। বাকি ৮০ শতাংশই খরচ হয় ওই দেশে। কিন্তু দেশে বসে যারা আয় করবেন তাদের পুরো অর্থই দেশে থেকে যাচ্ছে এতে জাতি উপকৃত হবে।
আউটসোর্সিংয়ের একটি হিসেব তুলে ধরে তিনি বলেন, এটি এক ট্রিলিয়ন ডলারের একটি মার্কেট। আসছে বছরে ১.২ ট্রিলিয়ন ডলারের আউটসোর্সিং হবে এমন প্রোজেকশন রয়েছে বিশেষজ্ঞদের। আমরা আমাদের ছেলেমেয়েদের এই কাজে দক্ষ করে তুলতে পারলে তারা ভার্চুয়াল জগতের এই বিশাল অংকের অংশীদার হতে পারবেন।
তিনি ২০১৪ সালের একটি হিসাব তুলে ধরে বলেন, এই বছর প্রতিবেশি দেশ ভারত ৮০ বিলিয়ন ডলার আয় করে নিয়েছে আউটসোর্সিয়ের মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশ এক্ষেত্রে আয় করে মাত্র ১০০ মিলিয়ন ডলার। দক্ষতা অর্জন করলে আমরা এখানেই বছরে কয়েক বিলিয়ন ডলার আয় করতে পারবো।
বাংলাদেশিরা মেধাবী, সহজেই বিষয়গুলো ধরতে পারে। সামান্য প্রশিক্ষণেই তারা হয়ে উঠবে দক্ষ, প্রত্যাশা আবু হানিপের।
আউটসোর্সিয়ের মাধ্যমে যাতে প্রশিক্ষণার্থীরা কাজ পেতে পারে সে লক্ষেও পিপল এন টেক কাজ করবে বলে জানান আবুবকর হানিপ।
তিনি বলেন, ঘরে বসে একজন আইটি প্রোফেশনাল মাসে ১০ হাজার ডলার সহজেই আয় করতে পারবেন। যা বছরে ১ লাখ ২০ হাজার ডলারের সমান। টাকার অংকে তা প্রায় ১ কোটি টাকা। যুক্তরাষ্ট্রে যে স্বপ্ন ছয় ডিজিটের বাংলাদেশে তা আট ডিজিটের। আর দুটোই সম্ভব পিপল এন টেকে প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে।
ঢাকায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালুর পর দ্রুতই চট্টগ্রামকেও এই প্রশিক্ষণের আওতায় আনার কাজ শুরু হবে বলে জানান চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সাবেক শিক্ষার্থী।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামই শুধু নয় দেশের প্রতিটি জেলা থেকেই, যে যেখান থেকে ইচ্ছা পিপল এন টেকের প্রশিক্ষণে অংশ নিতে পারবেন। ইন্টারনেট অ্যাকসেস থাকলেই তারা সুযোগটি নিতে পারবেন, স্রেফ একটি পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে তারা নিজেদের ঘরে বসেই নিতে পারবেন প্রশিক্ষণ, বলেন আবুবকর হানিপ।
দরিদ্র মেধাবীদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা রেখেই চলছে পিপল এন টেকের ঢাকা কেন্দ্রের কার্যক্রম। দশ হাজার আইটি প্রোফেশনাল তৈরির স্বপ্ন এখন পূরনের অপেক্ষায়।
পিপল এন টেকে যোগাযোগ করার মোবাইল নম্বর ০১৬১১৪৪৬৬৯৯ অথবা ০১৭৯৯৪৪৬৬৫৫, ই-মেইল: [email protected]. ওয়েব: www.piit.us, peoplentech.com, সামাজিক মাধ্যম: facebook.com/peoplentech, twitter.com/Peoplentech, youtube.com/peoplentech
বাংলাদেশ সময় ১১২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৪