ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

ভিডিও সাম্রাজ্য গড়বে ফেসবুক, ইউজারদের আয়ের হাতছানি

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৭
ভিডিও সাম্রাজ্য গড়বে ফেসবুক, ইউজারদের আয়ের হাতছানি মার্ক জুকারবার্গ (ছবি: সংগৃহীত)

ফেসবুকে একটা ভিডিও সাম্রাজ্য গড়তে যাচ্ছেন মার্ক জুকারবার্গ। সামাজিক এই নেটওয়ার্কে তিনি এমন এক ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছেন যাতে ভিডিও কনটেন্ট যিনি তৈরি ও পোস্ট করবেন তারও পকেট ভারী হয়।

বলা হচ্ছে- ফেসবুকের কনটেন্ট প্রোভাইডারদের টুপাইস কামিয়ে নেওয়ার সময় এসেছে। জুকারবার্গতো ঘোষণাই দিয়েছেন- ভিডিওর প্রকাশকই পাবেন আয়ের ৫৫ ভাগ।

ফেসবুক বলেছে, তারা এখন থেকে ভিডিও দর্শকদের জন্য আরও বেশি বিজ্ঞাপন দেখার সুযোগ করে দেবে। তাতে যারা ভিডিও প্রকাশ করছে তারা পয়সা বানাতে শুরু করতে পারে।

মিড-রোল নামে একটি বিশেষ প্রোগ্রামের মাধ্যমে এই ব্যবস্থা চালু করবে ফেসবুক। তাতে কেউ যখন ২০ সেকেন্ড ধরে কোনও ভিডিও দেখে ফেলবে তখনই তাদের বিজ্ঞাপন দেখানো হবে। মিডরোলের মাধ্যমে ভিডিওর প্রকাশকরাই বিজ্ঞাপন ঢুকিয়ে দিতে পারবেন।

এভাবে এখন থেকেই ফেসবুক বিজ্ঞাপন বিক্রি করবে আর তা থেকে অর্জিত রেভিনিউ ভিডিও প্রকাশকের সঙ্গে ভাগাভাগি করবে। সে ক্ষেত্রে ভিডিওর প্রকাশকই পাবেন ৫৫ শতাংশ রেভিনিউ। এখন ইউটিউবও একই হারে রেভিনিউ শেয়ার করছে। আর ইউটিউবই ইন্টারনেট জগতের ভিডিও বাণিজ্য দখল করে রেখেছে।

ফেসবুক বলছে, সুযোগটি কাজে লাগাতে পারলে অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী সত্যিকার অর্থেই বড় অংকের অর্থ উপার্জন করবে।

বছর কয়েক আগে থেকেই ফেসবুক ভিডিও প্রকাশ নিয়ে উদ্বাহু হয়ে এগিয়ে এসেছে। আর ২০১৬ সালের শেষে এসে বলছে তাদের পাতায় দিনে ১০০ মিলিয়ন ঘণ্টা ভিডিও দেখা হয়েছে। তবে অন্য সবাই যেটা করেছে তা করতে বেমালুম ভুলে গিয়েছিলেন জুকারবার্গ। সেটি হচ্ছে প্রি-রোল ভিডিও অ্যাড। অনলাইনে কোনও ভিডিও শুরুর আগেই যে ভিডিও শুরু হতে আমরা দেখতে পাই।

এতে করে ফেসবুকে যারা ভিডিও প্রকাশ করেছেন তাদের পকেটে কোনো রেভিনিউ ঢোকেনি। এ কারণে ফেসবুক মূল্যবান কিংবা মানসম্মত ভিডিও কনটেন্ট পাওয়ার সুযোগটিও হারিয়েছে। যেমন ধরুন স্পোর্টস ক্লিপস খুব কমই পাওয়া গেছে ফেসবুকে।

গেলো বছর ফেসবুক বিজ্ঞাপনদাতাদের ভিডিও তার পেজে প্রকাশের সুযোগ করে দেয়। তা থেকে কিছু কিছু প্রকাশক কিছু ডলারও আয় করলেও তা উল্লেখ করার মতো কিছু ছিলো না।

এর আগে ২০১৫ সালে ফেসবুক একটি ভিডিও সেকশন চালু করেছিলো তাতে প্রকাশকরা কোনও ভিডিও থেকে কিছু আয় করতে পারতো। এছাড়া গত বছর তারা লাইভ ভিডিওতে মিডরোল অ্যাড ব্যবহারেরও সুযোগ তৈরি করেছিলো। কিন্তু এবার ফেসবুক যেটা করতে যাচ্ছে তা ভার্চুয়াল জগতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে। এই উদ্যোগের আওতায় যে কোনও ধরনের ভিডিও নেটওয়ার্কে শেয়ার করা যাবে। সবচেয়ে বড় বিষয় নিউজ ফিডগুলোও শেয়ার করা যাবে এই ভিডিও সেকশনে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোকে এই খবরে মন্তব্য দিতে অবশ্য রাজি হননি ফেসবুকের কোনও প্রতিনিধি। ফেসবুকের ভাইস প্রেসিডেন্ট ড্যান রোজ, যিনি কোম্পানিটির কনটেন্ট অপারেশন্স দেখভাল করেন, তিনি পয়িন্টার নামের একটি মিডিয়াকে বলেছেন, এ নিয়ে আসছে বছরের গোড়ার দিকে কথা বলার সুযোগ হবে।

অর্থাৎ এক বছরের মধ্যে সবাইকে দেখিয়ে দিতে চায় ফেসবুক।

কতবার ভিডিও দেখা হচ্ছে তার চেয়ে বরং কতক্ষণ ভিডিও দেখা হচ্ছে তার ওপরই জোর দিচ্ছে ফেসবুক।

এ নিয়ে তাদের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে সাধারণত কোনও ব্যবহারকারী অন্তত তিন সেকেন্ড একটি ভিডিও দেখেন। মাঝে ভিডিও নিয়ে বেশ বিতর্কেও পড়েছে ফেসবুক। বিশেষ করে যখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিও চালু হয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াটি চালু করলো তখন এই বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে। পরে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

তবে নতুন ফেসবুক বিজ্ঞাপন গুলো তখনই চালু হবে যখন কোনও দর্শক ভিডিওটি অন্তত ২০ সেকেন্ড দেখে ফেলবেন। এর মানেই হচ্ছে ফেসবুক তার ব্যবহারকারীদের এই বার্তাই দিচ্ছে এমন কনটেন্ট তৈরি করো যাতে দর্শকের আগ্রহ থাকে আর তারা তা দেখতে থাকে। তাহলেই অর্থ পকেটে আসবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৭
এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।