‘আরে আমি গাজীপুরে ঠিক মতো থ্রিজি পাই না, শুধু ‘ই’ মানে এজ সিম্বল উঠে থাকে অথচ আমার মোবাইল সেট টুজিবি র্যাম, তাও আবার স্যামসাং সেট। ’- নাদিম খানের এই বিরক্তিও গ্রামীণফোনের ইন্টারনেট সার্ভিস নিয়ে।
একজন পাবনার অন্যজন গাজীপুরের। একজনের অভিযোগ সামগ্রিকভাবে গোটা জেলা শহরটিকে নিয়ে। অন্যজনের অভিযোগ তার ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে।
গত ক’দিন ধরে বাংলানিউজের কাছে এমন শত শত অভিযোগ, উদ্বেগ, অনুযোগ জমা পড়েছে। এসেছে বেশ কিছু দাবি-দাওয়া, পরামর্শও।
গ্রামীণফোনের ইন্টারনেট সার্ভিসে থ্রিজি ঠিক মতো পাওয়া যায়না, এমন অভিযোগকে কেন্দ্র করে বাংলানিউজের আহ্ববানে নাগরিক মন্তব্যে গ্রাহকরা তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন।
এতে দেখা যায়, খোদ রাজধানী থেকে শুরু করে দেশের অধিকাংশ জেলাশহর থেকেই বলা হচ্ছে তারা সঠিকভাবে গ্রামীণফোনের থ্রিজি সেবা পাচ্ছেন না।
রায়ান সোহাগ নামের এক গ্রাহক জানিয়েছেন টাঙ্গাইল ও ফেনীর অভিজ্ঞতা। দুই জেলাতেই অবস্থান করে জিপির থ্রিজি সেবা না পেয়ে বিরক্ত তিনি।
ঢাকার অপর গ্রাহক শ্যাম পরাগ অবশ্য বলেছেন, একেবারে খারাপ না। গ্রামীণফোনে থ্রিজি তিনি পান, তবে তার জন্য ঘরের বাইরে যেতে হয়।
নারায়ণগঞ্জ থেকে বুলবুল আহমেদ সবুজ জানালেন, নারায়ণগঞ্জ এর সিটিকর্পোরেশন এলাকায় ও গ্রামীণ ফোনের থ্রিজি নেটওয়ার্ক খুবই দুর্বল। সবচেয়ে বড় সমস্যা হল থ্রিজি নেটওয়ার্ক সব জায়গায় পাওয়া যায় না।
মাহবুব আলম নামে এক গ্রাহক নিজের অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন রাজধানীর ওয়ারি থেকে। ঢাকার পাশাপাশি সবগুলো বিভাগীয় শহরেও নাকি তার একই অভিজ্ঞতা। তা হচ্ছে জিপি’র থ্রিজি নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না।
সাধারণত সাপ্তাহিক প্যাকেজ কেনেন এই গ্রাহক। তিনি বলেন, গ্রামীণফোন ইচ্ছা করেই ইন্টারনেট স্পিড টুজিতে নামিয়ে রাখে, যাতে যতটুকু ইন্টারনেট ড্যাটা কেনা হয়েছে তার পুরোটুকু ব্যবহার করা না যায়।
নেত্রকোণা থেকে কামরুজ্জামান শুভ লিখেছেন, এই জেলাসদরে তার অভিজ্ঞতা হচ্ছে ইন্টারনেট না পাওয়ার। গত দুইমাস ধরে অত্যন্ত স্বল্পগতির ইন্টারনেট পাওয়া যাচ্ছে।
রুপম পারভেজ সাকিবও ঢাকার বাইরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। তিনি লিখেছেন-
আমাদের বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে গ্রামীণ ফোনের টাওয়ার তারপরেও থ্রিজি নেটওয়ার্ক পাইনা। অপর একটি টেলকোর উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেছেন, এদের টাওয়ার ছয় কিলোমিটার দূরে হলেও থ্রিজি নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়।
মোহাম্মদ কফিল উদ্দিন নামের এক গ্রাহক তার চট্টগ্রামের অভিজ্ঞতা লিখে পাঠিয়েছেন। সেখানে ছুটি কাটাতে গিয়ে গ্রামীণফোনের ইন্টারনেট নিয়ে খুব খারাপ অভিজ্ঞতা হয় তার। কফিল জানান, তার কেনা ছিলো ১৪০০ টাকার বিনিময়ে আনলিমিটেড মাসিক ইন্টারনেট প্যাকেজ। কিন্তু চট্টগ্রামে তিনি এর কোনও স্পিড পাচ্ছিলেন না। শেষপর্যন্ত কেনা প্যাকেজ বাদ দিয়ে অন্য টেলকো থেকে ইন্টারনেট ড্যাটা কিনে ব্যবহারে বাধ্য হন এই গ্রাহক।
নাঈম হোসেন থাকেন ঢাকাতেই। ২০০৬ সাল থেকে জিপি ব্যবহারকারী এই গ্রাহক এখন ছেড়ে দেওয়াই সাব্যস্ত করেছেন। তিনি বলেন, ঢাকাতেই যদি ভালো স্পিড না পাওয়া যায় তাহলে ঢাকার বাইরে কি অবস্থা তা সহজেই বুঝে নেওয়া যায়।
সে কথাই জানানো হযেছে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির আরকান মোবাইল শপ থেকে। ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, ফটিকছড়িতে টুজিই ঠিকমতো মেলে না, থ্রিজি পরের কথা।
কুমিল্লার শাসনগাছা থেকে মো. আজহারুল হকের ভাষ্য-তাদের এলাকায় থ্রিজি না পাওয়া সবার কমন সমস্যা। জিপির কারিগরি টিম শাসনগাছা গিয়ে সরাসরি তদন্ত করলেই তার অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে পারবেন, চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন এই গ্রাহক।
গ্রামীণফোনের থ্রিজি ইন্টারনেট সার্ভিসে আপনার অভিজ্ঞতা কি?
জানান এই ই-মেইলে- [email protected]
বাংলাদেশ সময় ০৯০৯ ঘন্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৭
এমএমকে