ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস চার্জ সিঙ্গেল ডিজিট করার দাবি

স্টাফ করসেপন্ডন্টে | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২০
মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস চার্জ সিঙ্গেল ডিজিট করার দাবি অনুষ্ঠানে অতিথিরা

ঢাকা: মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সার্ভিস চার্জ সিঙ্গেল ডিজিট করা, গ্রাহকদের অর্থের নিরাপত্তা জোরদারসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।

শনিবার (১৪ নভম্বের) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘মোবাইল ব্যাংকিংয়ের যৌক্তিক সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ, চার্জমুক্ত আন্তঃলেনদেন ও গ্রাহক নিরাপত্তায় করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ দাবি জানান।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রয় মিত্র বলেন, নগদ সার্ভিস চার্জ কমিয়ে আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। সার্ভিস চার্জ যে কমানো সম্ভব এতদিন বোঝা যায়নি। নগদ যেহেতু সার্ভিস চার্জ কমাতে সক্ষম হয়েছে তার মানে অন্যরাও চাইলে কমাতে পারবেন। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের কস্ট মডেলিং করে যৌক্তিক সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ করা উচিত। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ক্যাশআউট রেট শুরু থেকে হাজারে সাড়ে ১৮ টাকা করা হলেও ডাক বিভাগের সেবা ‘নগদ’ সম্প্রতি সেটি ১০ টাকার নিচে নামিয়ে এনেছে। তাছাড়া অন্য অপারেটরগুলো নিজেদের মধ্যে প্রতিটি লেনদেনে পাঁচ টাকা করে চার্জ করলেও ‘নগদ’ সেটি ফ্রি করে দিয়েছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডাক বিভাগের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদের চিফ সেলস অফিসার শেখ আমিনুর রহমান বলেন, নগদ সরকারের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে লাভের কথা চিন্তা না করে জনগণের সাধ্য ও সামর্থ্যের কথা চিন্তা করে সার্ভিস চার্জ কমিয়েছে। আশা রাখি আগামীতে নগদ আরও জনবান্ধব কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

এ সময় বিটিআরসির সার্ভিস বিভাগের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, এমএফএস প্রতিষ্ঠান রিটেইলার ও ডিস্ট্রিবিউটর গৃহীত চার্জের সঠিক কস্ট মডেলিং জরুরি প্রয়োজন। ১.৮৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জের বাকি ০.০১৫ টাকার কখনো কোনো হিসাব পাওয়া যায় না। এ হিসাবে অনৈতিকভাবে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা গ্রাহকদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে। যার কোনো সঠিক হিসাব কারো কাছে নেই। যতক্ষণ পর্যন্ত এ অঙ্ক কোনো বাস্তব লেনদেন সম্পন্ন ফিগারে পরিবর্তন করা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’র সহযোগী অধ্যাপক খালেদ মাহমুদ বলেন, সরকারের এ মুহূর্তেই অতিরিক্ত মাশুল বা ইন্টার অপারেবেলিটি চার্জ দেওয়া ঠিক হবে না। তবে হ্যাঁ পর্যায়ক্রমে ধীরে ধীরে এ চার্জ প্রয়োগ করা যেতে পারে। মার্কেট কম্পিটিশনকে বাঁচিয়ে রাখতে এসএমপি বাস্তবায়ন করার কোনো বিকল্প নেই। ডিজিটাল সিকিউরিটি নিশ্চিত করার জন্য আজ থেকে অবশ্যই ডিজিটাল অডিট চালু করা উচিত। সরকারের আইসিটি ডিভিশন বা বিটিআরসির এ ডিজিটাল অডিট বাধ্যতামূলককরণের ক্ষেত্রে কঠোর নীতিমালা প্রয়োগ করা উচিত।

মূল বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০০৯ সালে সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভিশন-২০২১ ঘোষণা করে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালের মে মাসে ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের মাধ্যমে বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস (এমএফএস) সেবা চালু হয়। একই বছর জুলাই মাসে ব্র্যাক ব্যাংকের মাধ্যমে আসে বিকাশ। এরইমধ্যে এ সেবায় বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সেবা দেওয়াই ছিল এর মূল লক্ষ্য। তাছাড়া দ্রুত সময়ে নিরবচ্ছিন্ন সেবা প্রাপ্তিতে এ সেবার তুলনা হয় না। মূলত মোবাইল ব্যাংকিং হল মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের যাবতীয় কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করার সুবিধাযুক্ত সেবা।

এ সময় বেশকিছু দাবি জানানো হয়। দাবির মধ্যে ছিল- মোবাইল ফোন অপারেটরদের মতো মোবাইল ব্যাংকিয়ে এসএমপি বাস্তবায়ন করা, ভ্যাট পাঁচ শতাংশ করা, ক্যাশআউট চার্জ সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনতে হবে, সেন্ড মানি চার্জ বাতিল করা, আন্তঃলেনদেন চার্জমুক্ত রাখা ও লেনদেনের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

সভায় অনলাইনে যুক্ত হন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. সায়মা হক বিদিশা, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ।  

উপস্থিত ছিলেন- সিপিবির সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সাংবাদিক রাশেদ মেহেদী, সাংবাদিক ফারুক হোসাইন, মোবাইল রিচার্জ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলু, বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিক সীমা আক্তার, কেন্দ্রীয় সদস্য আমানুল্লাহ মাহফুজ, মুর্শিদুল হক বিদ্যুৎ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২০
ইএআর/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।