ঢাকা: দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রচলিত ধারা পরিবর্তন করে প্রযুক্তিকেন্দ্রিক মিশ্রিত শিক্ষা ব্যবস্থা চালু এবং পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকে ডিজিটাল করতে সংশ্লিষ্ট সব স্টেকহোল্ডারদের সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
মঙ্গলবার (২৮ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে বিটিআরসি, অ্যাসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) এবং অ্যালায়েন্স ফর অ্যাফোর্ডেবল ইন্টারনেট আয়োজিত এক কর্মশালায় এ কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রযুক্তির অন্তর্ভূক্তির পাশাপাশি তা গ্রহণে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে ইন্টারনেট ও কানেক্টিভিটি মানুষের মৌলিক অধিকারে পরিণত হয়েছে তাই সারাদেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌঁছাতে কাজ করছে সরকার।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মিশ্রিত শিক্ষা বাস্তবায়নে ডিজিটাল কানেক্টিভিটি সর্ম্পকে বিশদ উপস্থাপনা করেন বিটিআরসির সিস্টেমস্ এন্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ।
তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে মোবাইলফোন ব্যবহারকারী ১৮ কোটি ৪০ লাখ এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারী সাড়ে ১২ কোটি। প্রায় ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯৭৫ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে ৪ হাজার ৪৩১টি ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ড কানেক্টিভিটি দেওয়া হয়েছে এবং দুর্গম অঞ্চলে আরো ১২৩টি ইউনিয়নকে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে কানেক্ট করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ২০২৩ সালের মধ্যে দেশের ১ লাখের অধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৫ ভাগ এবং ২০২৫ সাল নাগাদ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্কের আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এজন্য প্রায় ১৪ লাখ ইন্টারনেট সংযোগের পাশাপাশি ৯৮ হাজার ৬৩৬টি ডিজিটাল ডিভাইস তথা ল্যাপটপ এবং প্রতিটি ক্লাসরুমের জন্য ২০ থেকে ৩০ এমবিপিএস ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের প্রয়োজন হবে। এই কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় ন্যাশনাল ম্যানেজম্যান্ট সিস্টেম বা এনএমএস চালু করতে হবে, যার কাজ হবে কানেক্টিভিটি বজায় রাখা এবং কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা।
উপস্থাপনায় তিনি ডিজিটাল কানেক্টিভিটির স্থাপনের চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলায় সারাদেশে অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন, ডিজিটাল নেটওয়ার্ক সার্বক্ষণিক সচল রাখতে কারিগরী জনবল ও মনিটরিং ব্যবস্থা, সেবার মান নিশ্চিতকরণ, নির্ধারিত গতিতে ব্যান্ডউইডথ সরবারহ, ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা ও সাইবার নিরাপত্তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
এটুআই-এর পলিসি অ্যাডভাইজার আনীর চৌধুরী বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে জাতীয় ব্রডব্যান্ড পলিসির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো ডিজিটাল ও গতানুগতিক শিক্ষা ব্যবস্থা মিলে একটি সমন্বিত পদ্ধতিতে প্রবেশ করা, যাতে দেশের প্রান্তিক এলাকাসহ সব শিক্ষার্থী মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রবেশাধিকারের সুযোগ পায়।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ব্রডব্যান্ডের মূল কানেক্টিভিটি সরকারের হাতে রেখে গ্রাহক পর্যায়ের কার্যক্রম বেসরকারি খাতে দিয়ে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হলে তা ফলপ্রসু হবে।
ডিসেম্বরের মধ্যে সব মোবাইল অপারেটর ফাইভজি চালু করবে জানিয়ে সভাপতির বক্তব্যে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, বাংলাদেশ ব্রডব্যান্ড পলিসি ২০২২ প্রণয়নে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, প্রযুক্তিকেন্দ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা, নারী, শারিরীকভাবে অক্ষম জনগোষ্ঠীসহ অনানুষ্ঠানিক খাতকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
সমাপনী বক্তব্যে রাখেন বিটিআরসির ভাইস-চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৯ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২২
এমআইএইচ/এসএ