ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

তথ্যপ্রযুক্তি

নারীর জন্য নিরাপদ হোক ইন্টারনেট বিশ্ব 

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২২
নারীর জন্য নিরাপদ হোক ইন্টারনেট বিশ্ব 

টেকনোলজির দুনিয়ায় ইন্টারনেট ছাড়া জীবনকে আমরা চিন্তা করতে পারি না। তাই বলে কি ইন্টারনেট আমাদের সব সময় নিরাপত্তা দিচ্ছে আমরা সবাই কি নিরাপদ? মোটেও তা নয়।

সবাইকে নিরাপদে ইন্টারনেট ব্যবহারে সচেতন করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হলো নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার বিষয়ক সেমিনার।

শুক্রবার  (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারের আয়োজন করে নারী নেতৃত্বাধীন সফটওয়্যার কোম্পানি ‘উইমেন ইন ডিজিটাল লিমিটেড’ এবং ‘উইমেন ইন সাইবার সিকিউরিটি’।

প্রযুক্তির মাধ্যমে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন করাই উইমেন ইন ডিজিটাল এর মূল লক্ষ্য। উইমেন ইন ডিজিটাল অনুধাবন  করে যে, তাদের কমিউনিটির নারীরা বিভিন্নভাবে সাইবারক্রাইমের সাইবার বুলিং এর শিকার হচ্ছেন। শুধুমাত্র কমিউনিটির নারীরা নয় সারা দেশে অসংখ্য নারী-পুরুষ প্রতিনিয়ত সাইবারক্রাইম অথবা সাইবার বুলিং এর শিকার হচ্ছেন। ওয়ার্ল্ড-এর নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ২০২১ সালে উইমেনের ইন ডিজিটাল প্রথম সেপ্টেম্বর মাস  উইমেন সাইবার  সিকিউরিটি আওয়ার্নেস মাস হিসেবে ঘোষণা করে এবং পুরো মাস ধরে বিভিন্ন রকম কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।

উইমেন ইন ডিজিটালের মূলমন্ত্র হচ্ছে নারীদের প্রযুক্তিতে পারদর্শী করে তোলা এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করা এটি করতে গিয়ে উইমেন ইন ডিজিটালের কমিউনিটি মেম্বাররা নানারকম সাইবার সিকিউরিটি এবং সাইবার ক্রাইমের শিকার হচ্ছেন।

কবি সুফিয়া কামাল হলে ইন্টারনেটের নিরাপদ ব্যবহার নিয়ে সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অ্যাডিশনাল ডেপুটি পুলিশ কমিশনার সৈয়দ নাসির উল্লাহ। আরো ছিলেন অ্যাকাশনিস্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা আ.ন.ম. ফখরুল আমিন (ফরহাদ), কবি সুফিয়া কামাল হলের প্রতিনিধি লাবিসা রিমা, ‘উইমেন ইন ডিজিটাল’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী আছিয়া নীলা, প্রোগ্রাম হোস্ট নওশীন ইসলাম ন্যায়না, টিম লিডার মৌমিতা মাহফুজ, অর্গানাইজার কুহেলিকা রায় পূজা।

সেমিনারে পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন-এর কার্যক্রম তুলে ধরেন  সৈয়দ নাসির উল্লাহ। তিনি বলেন, সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন পরিষেবাটি নারীর বিরুদ্ধে সংঘটিত সাইবার অপরাধের ক্ষেত্রে অভিযোগ গ্রহণ করে এবং অভিযোগকারীদের প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রযুক্তিগত ও আইনি পরামর্শ দিয়ে থাকে। সাইবার বুলিং, ট্রলিং, পরিচিতি তথ্য অপব্যবহার ও প্রকাশ, ব্ল্যাকমেইলিং, রিভেঞ্জ পর্নোসহ বিভিন্ন উপায়ে সাইবার স্পেসে যত হয়রানির ঘটনা ঘটে তার প্রধান শিকার হন নারীরা। ভুক্তভোগী নারীরা অধিকাংশ সময় বুঝতে পারেন না কীভাবে, কী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এবং কাকে বিষয়টি জানাবেন। অনেক ক্ষেত্রে পরিবারকে জানাতে বা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে পুরুষ পুলিশ কর্মকর্তার কাছে তারা অভিযোগ জানানোর ব্যাপারে দ্বিধাবোধ করেন। এমন নারীদের পাশে দাঁড়াতে পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন কাজ করছে।  

‘উইমেন ইন ডিজিটাল’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী আছিয়া নীলা বলেন, নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হচ্ছে সচেতনতা। নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য ‘অনলাইন নিরাপত্তা’র বিষয়ে ভালো ধারণা থাকা প্রয়োজন। কম্পিউটার, স্মার্টফোন ব্যবহারের করলেও ইন্টারেনট ব্যবহারে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। অনলাইনে অনেক ওয়েবসাইটে বা অ্যাপ ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে। এ জন্য অপরিচিত ওয়েবসাইট বা অ্যাপস ব্যবহার না করাই ভালো। লটারি বা বিভিন্ন পুরস্কারের প্রলোভনে পাঠানো ই-মেইল বা বার্তা খোলা যাবে না। একটি বিষয় মনে রাখলে ভালো হয়, অনলাইনে নানা ধরনের পুরস্কারের প্রলোভন দিয়ে মূলত ব্যবহারকারীদের যন্ত্রে ম্যালওয়্যার বা ভাইরাস পাঠিয়ে সাইবার হামলা চালানো হয়ে থাকে।

এছাড়া প্রয়োজন শেষ হলে অবশ্যই মুঠোফোনের ব্লুটুথ ও জিপিএস ফিচারটি বন্ধ রাখতে হবে।  

অন্যান্য বক্তারা বলেন, নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার নিশ্চিত করতে হতে হবে সচেতন। সচেতন হলেই ভার্চ্যুয়াল জগতের বিপদ, হয়রানি থেকে মুক্তি মিলবে এবং নির্বিঘ্নে ইন্টারনেট-সেবা গ্রহণ করা যাবে।  

আয়োজনে সহযোগিতা করে ইউএনডিপি, টেকভিশন২৪, এবং বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম, একশনিস্ট ফাউন্ডেশন এবং কবি সুফিয়া কামাল হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২২ 
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।