ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

নিজেকে মৃত প্রমাণ করতে বন্ধুত্ব পাতিয়ে খুন!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০২২
নিজেকে মৃত প্রমাণ করতে বন্ধুত্ব পাতিয়ে খুন! অভিযুক্ত পায়েল

হত্যার উদ্দেশ্যে পাতিয়েছেন বন্ধুত্ব। এরপর ডেকে নিয়ে করেছেন খুন।

এমন ঘটনা ঘটেছে ভারতে। এরইমধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে দেশটির নয়ডার পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) বুন্দলশহরের একটি ভাড়া বাড়ি থেকে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়। খবর: আনন্দবাজার

অভিযুক্তরা হলেন- পায়েল ভাটি (২২) ও তার প্রেমিক অজয় ঠাকুর। খুন হওয়া তরুণীর নাম হেমা চৌধুরি। হেমা গৌড় সিটি মলের কর্মচারী ছিলেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত পায়েল এবং তার প্রেমিক অজয় প্রথমে মৃত তরুণীর সঙ্গে বন্ধুত্ব করেন। ওই তরুণী এবং পায়েলের মধ্যে শারীরিক গঠনে অনেক মিল থাকার কারণেই তার সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতান তারা। এ বন্ধুত্ব ছিল এক বড় ষড়যন্ত্রের অংশ।

পুলিশ জানায়, হেমা কাজ শেষ করে গৌড় সিটি মল থেকে বেরোনোর পর তাকে নিজেদের বধপুরার বাড়িতে নিয়ে যান পায়েল এবং অজয়। সেখানে হেমাকে হত্যার পর তার কব্জি কেটে দেন অভিযুক্তরা। মুখ বিকৃত করার জন্য ঢেলে দেওয়া হয় গরম তেল। এরপর সুইসাইড নোটে পায়েল লেখেন, রান্নাঘরে আমার মুখে গরম তেল পড়েছে এবং আমি এভাবে বাঁচতে পারব না। তাই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। এরপর পায়েল তার পোশাক মরদেহে পরিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যান।


পায়েল ও অজয়

সুইসাইড নোটের লেখা অনুযায়ী- নিহত তরুণীর দেহ পায়েলের মনে করে তা পায়েলের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো প্রশ্ন না করেই সেই লাশ দাহ করা হয়। মুখ চেনা না গেলেও চেহারায় মিল থাকায় তারা মেনে নিয়েছিলেন এ দেহ পায়েলরই।

কিন্তু হেমা নিখোঁজ হওয়ার পর তার পরিবারের সদস্যরা বিসরাখ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর পুলিশ অভিযানে নামে। শপিং মলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ এবং হেমার ফোন খতিয়ে দেখতে শুরু করে পুলিশ। তদন্তকারীরা দেখেন, হেমার ফোন শেষ বার পায়েলের বাড়ির ৫০ মিটারের মধ্যে সক্রিয় ছিল। এরপর ঘটনা পরিষ্কার হয়ে যায়।

তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তারা বুঝতে পারেন, পায়েল বলে যে দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল, তা আসলে হেমার।

পুলিশ এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পায়েলের বাবা-মা প্রায় ছ’মাস আগে আত্মহত্যা করেন। বাবা-মার মৃত্যুর জন্য বড় ভাইয়ের শ্বশুর বাড়িকেই দায়ী করেন পায়েল। তাদের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে বড় ভাইয়ের শ্বশুর বাড়ির সদস্যদের হত্যার ছক কষছিলেন তিনি। আর সেই কারণেই প্রেমিকের সঙ্গে মিলে নিজেকে মৃত প্রমাণিত করার পরিকল্পনা করেন।

নয়ডা পুলিশের দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে পুলিশ। আর পায়েলের প্রেমিক অজয় পুরো ঘটনায় কতটা জড়িত ছিলেন, তাও তদন্ত করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০২২
জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।