যুক্তরাষ্ট্রের ছয়টি অঙ্গরাজ্যে মানুষের মরদেহ পচিয়ে জৈব সার তৈরির প্রক্রিয়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় মানুষের মরদেহ মাটিতে রূপান্তরিত করা সম্ভব।
যেসব শহরে কবরস্থানের বা নতুন করে কবর দেওয়ার সংকট তৈরি হয়েছে, সেক্ষেত্রে এটি একটি বিকল্প সমাধান হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মাটির সঙ্গে মিশে মরদেহ সারে পরিণত হওয়ার পর, সেই মাটি তার প্রিয়জনদের দেওয়া হবে।
‘ন্যাচারাল অর্গানিক রিডাকশন’ নামে পরিচিত এ পদ্ধতিতে যদি একটি মরদেহ কন্টেইনারে আবদ্ধ অবস্থায় থাকে, তাহলে সেটি কয়েক সপ্তাহ পর পচে যায়। এভাবে তৈরি হবে জৈব সার।
২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন প্রথম এই পদ্ধতির অনুমোদন দেয়। এরপর কলোরাডো, ওরেগন, ভার্মন্ট ও ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে এ পদ্ধতির অনুমোদন দেওয়া হয়।
অঙ্গরাজ্যের ডেমোক্রেটিক গভর্নর ক্যাথি হোচুল গত শনিবার অনুমোদন দেওয়ার পর নিউইয়র্ক ষষ্ঠ অঙ্গরাজ্য হিসেবে পদ্ধতিটির অনুমোদন দিল।
জৈব সার বানাতে আবদ্ধ জায়গায় মরদেহ রাখা হয়। সেখানে কাঠের গুঁড়া, বিশেষ ধরনের লতাপাতা ও খড় ঘাসের মতো কিছু উপাদান রাখা হয়। ধীরে ধীরে সেগুলোতে পচন ধরে। প্রায় এক মাস মরদেহটি এভাবে রাখা হয়। জীবাণুমুক্ত করার জন্য এতে তাপ প্রয়োগ করা হয়। স্বাভাবিকভাবেই মরদেহ জৈব সারে পরিণত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের অলাভজনক প্রতিষ্ঠান রিকম্পোজ বলেছে, এতে এক টন কার্বন সংরক্ষণ করা সম্ভব।
জলবায়ু পরিবর্তনে বড় ভূমিকা রাখে কার্বন ডাই–অক্সাইডের নিঃসরণ। এর প্রভাবে ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বেড়ে যায়, যা গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাব হিসেবে পরিচিত।
মানব জৈব সারের সমর্থকেরা এই প্রক্রিয়াকে যথেষ্ট পরিবেশবান্ধব হিসেবে বিবেচনা করেছেন। এতে করে সীমিত জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার করা সম্ভব হবে বলছেন তারা।
তবে এই পদ্ধতি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। নিউইয়র্কের ক্যাথলিক বিশপ বলেছেন, মানবদেহকে গৃহস্থালির বর্জ্য হিসেবে বিবেচনা করা উচিত নয়।
এছাড়া, এই পদ্ধতিতে জৈব সার রূপান্তরিত করার খরচ নিয়েও ব্যাপক সমালোচনা আছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০২৩
এমএইচএস