ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

নারীসহ ৮ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করলো ইসরায়েলি সৈন্যরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২৩
নারীসহ ৮ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করলো ইসরায়েলি সৈন্যরা

অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শহরের শরণার্থী শিবিরে বড় আকারের অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলি সৈন্যরা। এ সময় ফিলিস্তিনের সঙ্গে তাদের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

অভিযানে গুলি চালিয়ে নারীসহ ৮ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে দখলদার বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় আহত হয় ডজনেরও বেশি শরণার্থী।

ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বলছেন, ২০২২ সালের শুরু থেকে দখলকৃত পশ্চিম তীরে অভিযান জোরদার করে ইসরায়েল। বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) ধারাবাহিকতা বজায় রেখে জেনিনের একটি শরণার্থী শিবিরে অভিযান চালায় দেশটির সেনা সদস্যরা। এ ঘটনায় এক বৃদ্ধ নারীসহ আট ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি, স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টার দিয়ে ইসরায়েলি সেনারা গুলি চালায়। এ সময় ১৬ জন আহত হন। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থায় গুরুতর। যারা নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে একজনের বয়স ২৪ বছর।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, অভিযান পরবর্তী পরিস্থিতি খুবই কঠিন। হাসপাতালগুলোয় সেবাদান অব্যাহত, কিন্তু ইসরায়েলি বাহিনী অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসকদের কাজে বাধা দিচ্ছে।

আল জাজিরাকে জেনিন পাবলিক হাসপাতালের প্রধান উইসাম বেকার বলেছেন, সকালে ইসরায়েলি বাহিনী যে আগ্রাসন চালিয়েছে তা নজিরবিহীন। এটি বিশাল। আহতের সংখ্যাও অনেক।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এক অ্যাম্বুলেন্স চালক মাটিতে পড়ে থাকা এক শহীদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ইসরায়েলি বাহিনী সরাসরি অ্যাম্বুলেন্সে গুলি করে, চালককে শহীদ ব্যক্তির কাছে যেতে বাধা দেয়।

ইসরায়েলি বাহিনী হাসপাতালের দিকে টিয়ার গ্যাসও ছোড়ে। গ্যাসভর্তি ক্যানিস্টারটি আমাদের শিশু বিভাগে ঢুকে পড়ে। এতে কয়েকজন শিশু আহত হয়। তাদের শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছে।

হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কিছু না বললেও অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এক বিবৃতিতে ‘বৃহস্পতিবার জেনিনে অভিযান চলছে’ বলে তারা জানায়। কিন্তু বিস্তারিত বলা হয়নি বিবৃতিতে।

আল জাজিরার খবরে আরও বলা হয়েছে, ভোরে কয়েক ডজন সাঁজোয়া যান ও স্নাইপার নিয়ে জেনিনের শরণার্থী শিবিরে অভিযান চালায় দখলদাররা। এ সময় তাদের একটি ‘গোপন বাহিনীও’ ওই ক্যাম্পে ঢুকে পড়ে। মুহূর্তেই ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ শুরু হয়। নিজেদের রক্ষায় ফিলিস্তিনিরা সশস্ত্র ব্যবস্থা নিয়েছিল।

ইসরায়েলি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ফিলিস্তিতি রাজনৈতিক বিশ্লেষক আলিফ সাব্বাগ বলেছেন, বৃহস্পতিবারের জেনিনে অপারেশনটিকে একটি সংকেত হিসেবে দেখা উচিত। এটি একটি আসন্ন বৃহত্তর ইসরায়েলি অপারেশনে ভূমিকা মাত্র। ইসরায়েল যা করছে তার ওপর আরব বা আন্তর্জাতিক মহলের কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। বরং এটি ইহুদি প্রধান রাষ্ট্রটিতে অভিযান ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যেতে উত্সাহিত করছে।

তিনি আরও বলেন, অ্যাম্বুলেন্স ও হাসপাতালগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা, আহতদের সাহায্যে বাধা দেওয়া, মাঠের হত্যাকাণ্ড, এমনকি শিরীন আবু আকলেহকে হত্যা- কোনো ঘটনায় কোনো জবাবদিহিতা নেই। যদি সত্যিকারের কঠিন কোনো প্রতিক্রিয়া না পাওয়া যায়, ইসরাইল যা চায় তা করতেই থাকবে।

চলতি জানুয়ারিতে অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত পাঁচ শিশুসহ ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ২০২২ সালে এ ধরনের অভিযানে ১৭০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন বেসামরিক।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২৩
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।