ঢাকা, রবিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

দীর্ঘ জীবনের জন্য গিনেস জিতল ‘পিচ্চি’ ইঁদুর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৩
দীর্ঘ জীবনের জন্য গিনেস জিতল ‘পিচ্চি’ ইঁদুর

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় দীর্ঘ জীবন অতিবাহিত করায় গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস পুরস্কার জিতেছে একটি ‘পিচ্চি’ ইঁদুর। তার বয়স ৯ বছর ২১২ দিন।

দীর্ঘ জীবনের জন্য ইঁদুরটিকে একটি প্রশংসা পত্রও দিয়েছে সান দিয়েগো চিড়িয়াখানা বন্যপ্রাণী জোট।

দেহের আকারের কারণে চারপেয়ে প্রাণীকে পিচ্চি বলা হলেও তারা প্যাসিফিক পকেট মাউস নামে পরিচিত। আকারে ক্ষুদ্র এ ইঁদুরের বৈজ্ঞানিক নাম পেরোগনাথুস লংজিমমেব্রিস প্যাসিফিকাস (Perognathus longimembris pacificus)। এরা ক্যালিফোর্নিয়ার স্থানীয়, বাস করে উপকূলীয় ইকোরিজিয়নের বালুকাময় উপকূলীয় মাটিতে। এদের খাদ্য মূলত ছোট ছোট বীজ ও ক্ষুদ্র পোকা-মাকড়। ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত প্যাসিফিক পকেট মাউস বিলুপ্ত বলে বিশ্বাস করা হচ্ছিল।

গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস পুরস্কার জেতা ইঁদুরটির নাম প্যাট। মানুষের হাতেই বেড়ে ওঠা ইঁদুরটি গত বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সবচেয়ে বয়স্ক জীবন্ত ইঁদুর হিসেবে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়। পরে সান দিয়েগো চিড়িয়াখানা বন্যপ্রাণী জোট তাকে একটি প্রশংসাপত্র দিতে অনুষ্ঠান আয়োজন করে।

২০১৩ সালের ১৪ জুলাই সান দিয়েগো চিড়িয়াখানার সাফারি পার্কে সংরক্ষণ প্রজনন কর্মসূচির অধীনে জন্ম হয় প্যাটের।

এপির খবরে বলা হয়েছে, প্যাসিফিক পকেট মাউসের ওজন হয় তিন পেনির মতো। এরা উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে ছোট প্রজাতির ইঁদুর। এরা নিজেদের খাবার কিংবা ঘর বাঁধার উপকরণ নিজেদের গালে নিয়ে ঘুরতে পারে। লস এঞ্জেলেস থেকে দক্ষিণে টিজুয়ানা নদী উপত্যকা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল প্যাটের প্রজাতির। কিন্তু মানুষ নিজেদের ঘর বাড়ি বানাতে জমি দখল করতে শুরু করলে তাদের আবাসস্থল ধ্বংস হতে শুরু করে। ১৯৩২ সালের পর থেকে পকেট মাউসের বিস্তৃতি হ্রাস পেতে শুরু করে।

১৯৯৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অরেঞ্জ কাউন্টির ডানা পয়েন্টে ইঁদুরগুলো নতুন করে দেখা যায়। ২০১২ সাল থেকে প্যাসিফিক পকেট মাউসের বিলুপ্তি ঠেকাতে কাজ শুরু করে সান দিয়েগো চিড়িয়াখানা বন্যপ্রাণী জোট। তারা এ ইঁদুরের প্রজনন কর্মসূচি শুরু করে। ২০২২ সালে এ কর্মসূচির আওতায় ১১৭ টি পকেট মাউসের বাচ্চা জন্ম নেয়। আসছে বসন্তে নতুন জন্মানো ইঁদুরগুলোকে বন্য পরিবেশের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে কার্যক্রম শুরু করবে সান দিয়েগোর বন্যপ্রাণী জোটটি।

জোটের মুখপাত্র জানিয়েছেন, এসব ইঁদুর মানুষ কিংবা জনসাধারণের শত্রু নয়। বরং তারা যেভাবে খাবার আহরণের জন্য মাটি খোঁড়ে তা উদ্ভিদ জন্মাতে সহায়তা করে। আবার তারা মুখের ভেতর থলেতে খাবার সংরক্ষণ করে। অনেক সময় সেখান থেকে বিভিন্ন উদ্ভিদের বীজ মাটিতে পড়ে যায়। যা থেকে গাছ হয়, ফলও পাওয়া যায়।

পিচ্চি ইঁদুর প্যাট গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস পুরস্কার জেতায় উচ্ছ্বসিত সান দিয়েগো চিড়িয়াখানা বন্যপ্রাণী জোট সংরক্ষণ কর্মসূচি প্রতিষ্ঠাতা ও তত্ত্বাবধায়ক ডেবরা শিয়ের। তিনি বলেন, এই স্বীকৃতি আমাদের দলের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ইঁদুরের এ প্রজাতির জন্যও তাৎপর্যপূর্ণ। এটি প্রমাণ করে আমরা একটি সংস্থা হিসেবে দুর্লভ প্রজাতিকে ফিরিয়ে আনতে কাজ করি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৩

এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।