তুরস্কে নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। রোববার (১৪ মে) স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয় বিকেল ৫টায়।
ভোটের সময় শেষ হয়ে গেলেও রয়েছে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন। ইস্তানবুল বার অ্যাসোসিয়েশন বলছে, লাইনে অপেক্ষারত ভোটারদের ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে। খবর আল জাজিরা।
আজকের এই ভোটের মধ্য দিয়েই নির্ধারিত হবে ২০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের ভবিষ্যৎ। নির্বাচনে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল কিলিচদারোগলু।
এই নির্বাচনে জিততে হলে একজন প্রার্থীকে মোট প্রদত্ত ভোটের অন্তত ৫০ শতাংশ পেতে হবে। নতুবা দুই সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় দফা ভোট নেওয়া হবে।
তুরস্কের নির্বাচনসংক্রান্ত আইন অনুযায়ী, ভোটের দিন রাত ৯টা পর্যন্ত ফলাফল নিয়ে কোনো ধরনের সংবাদ প্রকাশ নিষিদ্ধ। প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়াবে কি না, তার ইঙ্গিত আজ গভীর রাতের দিকে পাওয়া যেতে পারে।
তুরস্কের স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকেই ভোট কেন্দ্রগুলোর সামনে ভোটাররা লাইনে দাঁড়ান।
নির্বাচনে প্রথমবার ভোট দেওয়া ৫০ লাখ ভোটার এবারের নির্বাচনের ফল নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
জার্মানি, ফ্রান্স এবং অন্যান্য দেশে থাকা প্রায় ১৭ লাখ প্রবাসী তুর্কি ভোটার এরইমধ্যে ভোট দিয়ে ফেলেছেন। সেখানে ভোটদানের হার ছিল ৫৩ শতাংশ।
চার প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর একজন মুহাররেম ইনচে ভোটের তিন দিন আগে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।
রোববারের ভোটে তুরস্কের মানুষ ৬০০ এমপি নির্বাচনের জন্যও ভোট দিচ্ছেন। যদিও প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান পার্লামেন্টের ক্ষমতা খর্ব করে প্রেসিডেন্টের নির্বাহী ক্ষমতা অনেক বাড়িয়েছেন, তারপরও নতুন আইন প্রণয়নে পার্লামেন্ট এখনো মুখ্য ভূমিকা রাখে।
তুরস্কের নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের নিয়ম অনুযায়ী কোন দলকে পার্লামেন্টে আসন পেতে হলে অন্তত ৭ শতাংশ ভোট পেতে হয়। তাই রাজনৈতিক দলগুলো আসন পাওয়া নিশ্চিত করতে নির্বাচনী জোট বাঁধে।
তুরস্কের ভোটাররা এমন এক সময়ে এই নির্বাচনে ভোট দিলেন যখন তাদের কঠিন অর্থনৈতিক অবস্থার মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
দেশটিতে মূল্যস্ফীতি এখন লাগামছাড়া। সরকারি হিসেবেই মূল্যস্ফীতির হার ৪৪ শতাংশ। কিন্তু অনেক মানুষের ধারণা এটি আসলে অনেক বেশি হবে।
অন্যদিকে তুরস্কের ১১ টি প্রদেশ সম্প্রতি দুই দফা ভূমিকম্পের ধাক্কা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। এই ভূমিকম্পে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে।
প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান অর্থনীতির প্রথাগত নিয়ম ভেঙে যেভাবে সুদের হার কমিয়েছেন, তার ফলে তুরস্কে মূল্যস্ফীতি অনেক বেড়ে গেছে। অথচ ওই একই সময়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশে সুদের হার বাড়ানো হচ্ছিল।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৩ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২৩
আরএইচ