ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

খার্তুমের ‘রাস্তায় পড়ে থাকা মরদেহ কুকুরে খাচ্ছে’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৬ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২৩
খার্তুমের ‘রাস্তায় পড়ে থাকা মরদেহ কুকুরে খাচ্ছে’

সুদানের রাজধানী খার্তুমের দখল নিয়ে সাত সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে দেশটির দুই বাহিনীর লড়াই চলছে। সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) এই লড়াইয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অনেক মানুষ।

বিভিন্ন দেশের হস্তক্ষেপে অস্ত্রবিরতি ঘোষণা করা হলেও তা মানছে না দুই বাহিনীর কেউই।

যুদ্ধে এখন পর্যন্ত কত মানুষ মারা গেছে, সে হিসাব কেউ জানে না। কিন্তু ধারণা করা হয় এই সংখ্যা এক হাজারেরও বেশি। তাদের মধ্যে বহু বেসামরিক মানুষও রয়েছে।

এদিকে দুই বাহিনীর লড়াইয়ের মধ্যে নতুন এক সমস্যায় পড়েছেন খার্তুমের বাসিন্দারা। শহরের রাস্তায় রাস্তায় যেসব মরদেহ পড়ে আছে সেগুলো কী করবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না। কেউ কেউ মরদেহ নিয়ে গিয়ে নিহতের বাড়ির ভেতরে কবর দিচ্ছেন। আবার অনেকস্থানে বাসিন্দারা দেখতে পান, কুকুর কামড়ে কামড়ে মরদেহ খাচ্ছে।

খার্তুমের (ছদ্মনাম) বাসিন্দা ওমর বলেন, আমি তিনজনকে তাদের নিজেদের বাড়ির ভেতরে কবর দিয়েছি। আর বাকিদের কবর দিয়েছে আমি যে রাস্তায় থাকি তার প্রবেশ মুখে।

‘কুকুর কামড়ে কামড়ে মরদেহ খাচ্ছে- ঘরের দরজা খুলে এই দৃশ্য দেখার চেয়ে এটা করাই ভালো। ’

ওমর কমপক্ষে ২০ জনকে কবর দিয়েছেন।

তিনি বিবিসিকে, ‘আমার এক প্রতিবেশী তার বাড়িতে নিহত হয়েছেন। আমি কিছুই করতে পারিনি। তার বাড়ির মেঝের টাইলস তুলে সেখানে তাকে কবর দিয়েছি। ’

তিনি আরও বলেন, ‘রাস্তায় পড়ে থাকা মরদেহগুলো গরমে পচে যাচ্ছে। আমি কী বলতে পারি? খার্তুমের কিছু কিছু এলাকা এখন কবরস্থানে পরিণত হচ্ছে। ’

‘নিহতদের অনেককে খার্তুম বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছের কিছু এলাকায় কবর দেওয়া হয়েছে। এটা একটা তেলের স্টেশনের পাশে, সবাই এই জায়গাটি চেনেন। বাকিদের কবর দেওয়া হয়েছে মোহামেদ নাগিব রোডের কাছের কিছু এলাকায়। ’

যুদ্ধ শুরুর পর সুদানে ঠিক কত সংখ্যক লোককে বাড়ির ভেতরে এবং বিভিন্ন বসতি এলাকায় কবর দেওয়া হয়েছে সরকারিভাবে তার কোনো হিসেব নেই। তবে ওমর বলছেন, ‘এই সংখ্যা হবে কয়েক ডজন। ’

ঠিক এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে হামিদেরও (ছদ্মনাম)। তিনি একজন ব্যবসায়ী যিনি।

বিবিসিকে হামিদ জানিয়েছেন যে, তিনি রাজধানী খার্তুম থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে শাম্বাত শহরে সেনাবাহিনীর তিন সদস্যকে কবর দিয়েছেন। সামরিক বাহিনীর একটি বিমান বিধ্বস্ত হলে তারা নিহত হন।

হামিদ বলেন, ‘ঘটনাক্রমে আমি সেদিন ওই এলাকায় ছিলাম। আরও পাঁচজন লোক নিয়ে আমি মরদেহগুলোকে ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে উদ্ধার করি। তারপর সেগুলোকে এমন একটা জায়গায় দাফন করি যার পাশ ঘিরে কিছু আবাসিক ভবন রয়েছে। ’

সূত্র- বিবিসি

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৪ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০২৩
এমএইচএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।