জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বন্ধের দাবিতে নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের সড়কে প্রায় ৭৫ হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। মঙ্গলবার থেকে শুরু হতে যাওয়া জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যোগ দিতে বিশ্ব নেতারা নিউইয়র্কে পৌঁছাতে শুরু করেছেন।
জাতিসংঘের সম্মেলন ঘিরে ‘ক্লাইমেট গ্রুপ’ বিশ্বে সপ্তাহব্যাপী পাঁচ শতাধিক বিক্ষোভের পরিকল্পনা করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারতসহ ৫৪ দেশে এসব বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হবে। রোববারের বিক্ষোভটি ছিল এর সূচনা। বিক্ষোভে বিশ্বের প্রায় ৭০০ সংগঠনের কর্মীরাও বিক্ষোভে উপস্থিত হন।
১৭ বছর বয়সী মার্কিন বিক্ষোভকারী এমা বারেত্তা মার্কিন নেতাদের উদ্দেশে বলেন, আমাদের সঙ্গে জনগণের শক্তি আছে, যে শক্তিটা আপনাদের আগামী নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য প্রয়োজন। আপনারা যদি ২০২৪ সালের নির্বাচনে জিততে চান, আপনারা যদি আমাদের প্রজন্মের রক্ত আপনাদের হাতে দেখতে না চান, তাহলে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ করুন।
সবুজ অবকাঠামো নির্মাণ ও ক্লিন এনার্জি খাতে প্রচুর অর্থ বরাদ্দ দিলেও জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরতা কমাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যথেষ্ট পদক্ষেপ নেননি বলে মনে করেন অনেক সমালোচক।
মার্কিন কংগ্রেসওম্যান আলেক্সান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্তেজ বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বলেন, যা আমাদের মেরে ফেলছে, তা থামানোর দাবিতে বিশ্বে লোকেরা সড়কে নেমেছেন। আমাদের একটি শক্ত বার্তা পাঠাতে হবে, তা হলো, আমাদের মধ্যে অনেকে এখন থেকে ৩০, ৪০, ৫০ বছর পরও এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকবেন। তাই আমরা উত্তর হিসেবে ‘না' শুনতে চাই না।
ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত অ্যামেরিকান ইউনিভার্সিটির সমাজবিজ্ঞানী ডানা ফিশার পরিবেশ আন্দোলন নিয়ে গবেষণা করেন। তিনি রোববারের বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে জরিপ চালিয়ে দেখেন, জরিপে অংশ নেওয়া ৮৬ শতাংশ বিক্ষোভকারী সাম্প্রতিক সময়ে তাপদাহের শিকার হয়েছে, ২১ শতাংশ বন্যাকবলিত হয়েছে আর ১৮ শতাংশ খরা দেখেছে।
অনেক বিজ্ঞানী বলছেন, জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর কারণে যে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত হয় তা বিশ্বের তাপমাত্রা বাড়াচ্ছে৷ সে কারণে সারা বিশ্বে এখন হারিকেন, তাপদাহ, বন্যা, দাবানল ও খরা দেখা যাচ্ছে।
আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বিশ্ব অভাবনীয় রকমের উচ্চ তাপমাত্রার সাক্ষী হতে পারে বলে তারা সতর্ক করে দিয়েছেন।
সূত্র: ডয়চে ভেলে
বাংলাদেশ সময়: ১৬১২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৩
আরএইচ