একটি যৌথ মহড়ায় অংশ নেওয়ার উদ্দেশ্যে চীনা নৌবাহিনীর তিনটি জাহাজ মিয়ানমারে এসে পৌঁছেছে। মিয়ানমারের জান্তা কর্তৃপক্ষ বলছে, মিয়ানমার ও চীনের মধ্যে নৌনিরাপত্তা মহড়ায় অংশ নিতে একটি ডেস্ট্রয়ার, একটি ফ্রিগেট এবং একটি সরবরাহ জাহাজসহ কয়েকশ চীনা নাবিক সোমবার থিলাওয়া বন্দরে এসে পৌঁছায়।
এই মহড়ার সময় এবং আকার সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু এখনও জানা যায়নি। তবে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে চীনা ‘নৌ টাস্ক ফোর্স’টিতে ৭০০ জন নাবিক রেয়েছে। খবর ইরাবতী।
বেইজিং মিয়ানমারের জান্তা সরকারের প্রধান মিত্র। দেশটি ২০২১ সালে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলকে সেনা অভ্যুত্থান বলে মনে করে না। তাছাড়া চীন মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় অস্ত্র সরবরাহকারী। যদিও চীন সীমান্তের কাছে একটি বিশাল অঞ্চল জুড়ে জাতিগত সংখ্যালঘুদের সঙ্গে জান্তা সরকারের সাম্প্রতিক সংঘর্ষ দেশ দুটির গভীর সম্পর্ককে পরীক্ষার মধ্যে ফেলেছে।
জান্তা সরকার সীমান্ত অঞ্চলে বিদ্রোহী গ্রুপ গুলোকে সাহায্য করার জন্য চীন দায়ী করছে। জান্তা বলছে চীনা ড্রোন ব্যবহার করে শান রাজ্যে কয়েকটি সীমান্ত বাজার এবং কয়েক ডজন সেনা চৌকি দখলে নিয়েছে বিদ্রোহী গ্রুপ গুলো। এই সব ঘটনার প্রতিবাদে এই মাসের শুরুতে ইয়াংগুনে চীন বিরোধী মিছিল আয়োজনে জান্তা ইন্দন দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিপরীতে চীনে তেল-গ্যাস সরবরাহকারী পাইপলাইন এবং বিলিয়ন ডলারের রেল সংযোগ পরিকল্পনা করা হচ্ছে যে শান রাজ্যের মধ্যে দিয়ে; সেখানে সংঘর্ষের ঘটনায় চীন তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। তাছাড়া এই যুদ্ধের ফলে সীমান্তের চীনা অংশেও মানুষ মারা যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে চীন। যদিও এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানায়নি তারা।
মিয়ানমারের সীমান্তে কিছু চিহ্নিত কম্পাউন্ড থেকে চীনা নাগরিকদের টার্গেট অনলাইন স্ক্যাম পরিচালনা করা হলেও তা দমনে করতে জান্তার ব্যর্থতা বেইজিংকে হতাশ হয়েছে।
চীন সীমান্তে মায়ানমারের মিউজ অঞ্চলে একটি সীমান্ত বাজারে হামলায় ১০০ টিরও বেশি যানবাহন ধ্বংস হওয়ার কয়েকদিন পর গত শনিবার থেকে চীন ওই সীমান্তের কাছে সামরিক মহড়া শুরু করেছে। গত মাসে তিনটি বিদ্রোহী গ্রুপ এই হামলা চালায় যা জান্তা বিরোধী অন্যান্য গ্রুপ গুলোকেও একই ধরনের হামলায় উৎসাহিত করছে।
জাতিসংঘ বলছে মিয়ানমারের পূর্ব-পশ্চিমে ছড়িয়ে পড়া এই সংঘর্ষ ৩ লাখ ৩৫ হাজার নাগরিককে গৃহহীন হতে বাধ্য করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২৩
এমএম