সুইজারল্যান্ডে ৫০টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানসহ ৯০টিরও বেশি দেশের প্রতিনিধিরা ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠা নিয়ে আলোচনা করেছেন। সম্মেলন শেষে একটি যৌথ বিবৃতি বা ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয় যেটিতে ৮০টিরও বেশি দেশ স্বাক্ষর করেছে।
সুইজারল্যান্ডে পাহাড়ের ঢালে বিলাসবহুল ও ঐতিহাসিক রিসোর্টে সব প্রতিনিধি ছিলেন। এতজন রাষ্ট্রনেতাকে এক জায়গায় আনা ও শান্তি আলোচনা করার পেছনে কতটা কূটনৈতিক প্রয়াস লাগে তা সহজেই অনুমান করা যায়। তবে রাশিয়াকে এই বৈঠকে ডাকা হয়নি এবং চীন এই বৈঠক বয়কট করে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, এটা একটা ঐতিহাসিক ঘটনা।
সুইজারল্যান্ড জানিয়েছে, তারা ভবিষ্যতে শান্তির দীর্ঘ রাস্তায় চলার জন্য একটা ভিত্তি প্রস্তুত করতে চেয়েছে।
সব মহাদেশের প্রতিনিধিসহ এতজন রাষ্ট্রপ্রধানের যোগদান অবশ্যই একটা বড় ঘটনা। কয়েক মাস ধরে কূটনৈতিক চেষ্টার ফলেই তা সম্ভব হয়েছে।
দুই দিন ধরে এই বৈঠকে ইউক্রেনে শান্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট মস্কোর নিন্দা করার পরও বলেছেন, যুদ্ধে জড়িত সব পক্ষকে নিজেদের মনোভাব নরম করতে হবে। সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সমঝোতার পথ বেশ কঠিন।
আলোচনার পর বিবৃতি দেওয়া হয়। যৌথ বিবৃতিতে সই করে ৮০টিরও বেশি দেশ। যুক্তরাষ্ট্র, ইইউর সব দেশ, ঘানা, কেনিয়া, আর্জেন্টিনা, কলম্বিয়া, ফিলিপাইন, কাতার, গুয়াতেমালার মতো দেশগুলো তাতে সই করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে, তাতে ধ্বংস ও মানুষের কষ্টের ছবি সামনে এসেছে। এর ফলে বিশ্বে একটা সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা কোনো দেশের আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও রাজনৈতিক স্বাধীনতা হরণের বিরুদ্ধে। ইউক্রেনসহ প্রতিটি দেশের স্বাধীনতা, আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বর নীতির প্রতি আমরা দায়বদ্ধ।
এই বৈঠকে ইউক্রেনের অখণ্ডতা রক্ষার কথাও বলা হয়েছে।
শান্তি বিবৃতিতে সই করেনি ভারত। কেননা এই আলোচনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বা অন্য কোনো মন্ত্রী যোগ দেননি। ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (ওয়েস্ট) পবন কাপুর।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই শীর্ষ বৈঠকে ভারত কোনো বিবৃতি বা অন্য কোনো নথিতে সই করেনি। ভারত এই বিরোধের দীর্ঘকালীন ও শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়। তাই তারা এই শীর্ষ বৈঠকে যোগ দিয়েছে। এর আগে এনএসএ পর্যায়ের বৈঠকেও যোগ দিয়েছিল। কিন্তু এই বিরোধের মীমাংসার জন্য দুই পক্ষের মধ্যে বাস্তবসম্মত ও আন্তরিক আলোচনা প্রয়োজন। ভারত চায়, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ মিলে চেষ্টা করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই সমস্যার সমাধান হোক।
ভারত আগেই জানিয়েছে, কূটনৈতিক পথে ও আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে।
সূত্র: ডয়েচে ভেলে
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫০ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২৪
এমজে