যুক্তরাষ্ট্র এবং এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মিত্র দেশগুলো রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যকার নতুন সামরিক ঐক্যের নিন্দা জানিয়েছে। খবর আল জাজিরা।
যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান সোমবার এক বিবৃতিতে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সামরিক চুক্তি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
গত সপ্তাহে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন উত্তর কোরিয়া সফর করেন। তার সফরকালেই দুই দেশের মধ্যকার সামরিক চুক্তিটি সই হয়।
ইউক্রেনকে অস্ত্র দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দা জানান পিয়ংইয়ংয়ের এক কর্মকর্তা। রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার চুক্তি অনুযায়ী কোনো দেশ হামলার শিকার হলে একে অপরকে সহায়তা করবে। যদিও রাশিয়া প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত।
যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান বিবৃতিতে বলেছে, কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, বৈশ্বিক অ-প্রসারণ ব্যবস্থা বজায় রাখা এবং ইউক্রেনের জনগণকে সমর্থন জানানোর বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, উত্তর কোরিয়ার হুমকি মোকাবিলায় কূটনৈতিক তৎপরতা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা বাড়াতে জোট অঙ্গীকারবদ্ধ। দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের জন্য ওয়াশিংটনের সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতিও বেশ শক্ত।
‘নতুন বিশ্বযুদ্ধ’
দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় মহড়ার অংশ হিসেবে পারমাণবিক-শক্তি পরিচালিত যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহী রণতরী থিওডোর রুজভেল্ট বুসান বন্দরে নোঙর করার পরই নতুন করে বাগযুদ্ধ শুরু হলো।
উত্তর কোরিয়া দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের মহড়াকে আক্রমণের অনুশীলন হিসেবে দেখে আসছে। উত্তর কোরিয়ার উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী দ্বিতীয় কিম ক্যাং সোমবার বলেন, কোরীয় উপদ্বীপে রণতরী আসার বিষয়টিকে অতি ভয়াবহ প্রদর্শনী বলে আখ্যা দেন।
কেসিএনএ এক প্রতিবেদনে জানায়, উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, এটি উত্তর কোরিয়ার দুর্বার প্রতিরোধের নতুন প্রদর্শনের দুয়ার উন্মুক্ত করে দিচ্ছে।
পাক জং চোন নামে উত্তর কোরিয়ার এক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা জোর দিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউক্রেনকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রক্সি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেয়, সেক্ষেত্রে মস্কোর যেকোনো ধরনের প্রতিশোধমূলক আক্রমণে বেছে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিজেদের অস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত বজায় রাখলে মস্কো আরও শক্তিশালী জবাব দিতে উৎসাহিত হতে পারে।
উত্তর কোরিয়া এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক মহড়ার জবাব দেয় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার মধ্য দিয়ে। পিয়ংইয়ং মনে করে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈরিতার কারণে তারা পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি চালু করতে বাধ্য হয়েছিল।
দক্ষিণ কোরিয়া বলছে, গেল সপ্তাহে উত্তর কোরিয়ার বেশ কয়েকজন সেনা সীমান্ত অতিক্রম করে। জবাবে দক্ষিণ কোরিয়ার সেনারা গুলি চালিয়ে সতর্ক করে দেয়। এবারের সীমান্ত অতিক্রম চলতি মাসের মধ্যে তৃতীয়।
সীমান্তে উত্তর কোরিয়ার আবর্জনাসহ বেলুন পাঠানো এবং দক্ষিণ কোরিয়ার বিশাল বিশাল লাউড স্পিকার ব্যবহার এবং লিফলেটে অপপ্রচার চালানো নিয়ে উত্তেজনার মধ্যেই নতুন এসব ঘটনা ঘটল।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৭ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০২৪
আরএইচ