পেনসিলভানিয়ায় গুলিতে আহত হবার পর স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে নিউ জার্সির বাড়িতে ফিরেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এফবিআই ইতোমধ্যেই জানিয়েছে যে গুলির ঘটনা ছিল ট্রাম্পকে ‘হত্যার চেষ্টা’।
মুখের এক পাশে ও কানে রক্ত নিয়ে সিক্রেট সার্ভিস সদস্যদের সহায়তায় বেরিয়ে আসার পর ট্রাম্প বলেন, তার কানের ওপরের অংশের চামড়া ভেদ করে বুলেট চলে গেছে।
মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআই ট্রাম্পের ওপর হামলার জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম প্রকাশ করেছে। সিক্রেট সার্ভিস সদস্যদের গুলিতে নিহত হওয়া ২০ বছর বয়সী ওই হামলাকারীর নাম থমাস ম্যাথিউ ক্রুকস।
নির্বাচনি প্রচারণার ধরন বদলে দেবে
বিবিসির নর্থ আমেরিকা এডিটর সারাহ স্মিথ লিখেছেন যে, মুখে রক্ত নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প মুষ্টিবদ্ধ হাত ঊর্ধ্বে তুলে ধরেছেন এবং সিক্রেট সার্ভিসের সদস্যরা তাকে মঞ্চ থেকে সরিয়ে নিচ্ছেন- এ ছবি শুধু ইতিহাস বানায়নি, বরং এগুলোই নভেম্বরের প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনের হিসাব-নিকাশ পাল্টে দিতে পারে।
জঘন্য এ রাজনৈতিক সহিংসতার নিঃসন্দেহে প্রভাব পড়বে নির্বাচনি প্রচারণায়।
ছবিটি দ্রুতই সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেন ট্রাম্পের ছেলে এরিক ট্রাম্প, আর ক্যাপশন দিয়েছেন: ‘এই সেই যোদ্ধা যাকে আমেরিকার দরকার’।
ঘটনার পরপর একটি টেলিভিশনে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, এ ধরনের সহিংসতার জায়গা আমেরিকায় নেই। তিনি তার রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বীর জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং রাতে তিনি তার সাথে কথা বলবেন বলেও জানান।
বাইডেনের নির্বাচনি প্রচারদল সব ধরনের রাজনৈতিক বিবৃতি বন্ধ রেখেছে এবং দ্রুতই টেলিভিশন বিজ্ঞাপনগুলো না দেওয়ার জন্য কাজ করছে। কারণ তাদের বিশ্বাস ট্রাম্পের ওপর হামলার এ সময়ে এগুলো মানানসই হবে না। বরং যা ঘটেছে তার নিন্দা জানানোর দিকে মনোযোগ দেয়াই হবে শ্রেয়।
সব মতের রাজনীতিকরাই এক হয়ে বলছেন যে গণতন্ত্রে সহিংসতার জায়গা নেই।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জর্জ ডব্লিউ বুশ, বিল ক্লিনটন এবং জিমি কার্টার দ্রুতই এ সহিংসতার তীব্র নিন্দা করেছেন এবং ট্রাম্প গুরুতর আহত হননি শুনে তারা কতটা স্বস্তি পেয়েছেন সেটি বলেছেন।
কিন্তু ট্রাম্পের কিছু ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং সমর্থকরা সহিংসতার জন্য ইতোমধ্যেই বাইডেনকে দোষারোপ করা শুরু করেছেন। একজন রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ প্রেসিডেন্টকে অভিযুক্ত করেছেন ‘হত্যাকাণ্ডের উস্কানি দেয়ার জন্য’।
সিনেটর জেডি ভান্সকে মনে করা হচ্ছে ট্রাম্পের সম্ভাব্য ভাইস প্রেসিডেন্টদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় আছেন। তিনি বলেছেন বাইডেনের প্রচারণাই সরাসরি এ ঘটনার দিকে নিয়ে গেছে।
একই ধরনের বক্তব্য এসেছে আরও কয়েকজন রিপাবলিকান রাজনীতিকের দিক থেকেও। ধারণা করা যায়, এর প্রতিবাদ নিশ্চিতভাবেই তাদের প্রতিপক্ষের দিক থেকে আসবে আমেরিকার রাজনীতির বিপজ্জনক এই সময়ে ঘৃতাহুতি হিসেবে।
‘আমরা এখনি লড়াইটা দেখতে পাচ্ছি যা সামনে আরও কুৎসিত হয়ে উঠতে পারে, যা আসলে নির্বাচনি প্রচারণার ধরনটাকেই বদলে দেবে। ’
বিবিসি বাংলা অবলম্বনে
বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০২৪
আরএইচ