ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন ৩ অধ্যাপক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০২৪
অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন ৩ অধ্যাপক

চলতি বছর অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন বিজ্ঞানী। তারা হলেন, ড্যারন আসেমোগলু, সিমন জনসন ও জেমস এ রবিনসন।

সোমবার (১৪ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় বিকেলে রয়েল সুইডিশ অ্যাকাডেমি ২০২৪ সালের এ পুরস্কার ঘোষণা করে।

নোবেল কর্তৃপক্ষ জানায়, কীভাবে প্রতিষ্ঠান গঠিত হয় এবং সমৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে— তা নিয়ে গবেষণার জন্য তাদের ২০২৪ সালের জন্য নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

নোবেল কর্তৃপক্ষ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, একটি দেশের সমৃদ্ধির জন্য সামাজিক প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন চলতি বছর অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী তিন অধ্যাপক। আইনের দুর্বল শাসনের সমাজ এবং জনসংখ্যাকে শোষণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো উন্নতি বা পরিবর্তন আনে না। এমনটি কেন হয়, বিজয়ীদের গবেষণা আমাদের তা বুঝতে সাহায্য করে।

এতে বলা হয়, যখন ইউরোপীয়রা পৃথিবীর বড় অংশে উপনিবেশ স্থাপন করেছিল, তখন সেসব সমাজের প্রতিষ্ঠানগুলো পরিবর্তিত হয়েছিল। এটি কখনো কখনো ছিল নাটকীয়। তবে সবখানে একভাবে ঘটেনি। কিছু জায়গায় উদ্দেশ্য ছিল আদিবাসীদের শোষণ করা এবং উপনিবেশ স্থাপনকারীদের সুবিধার জন্য সম্পদ আহরণ করা। অন্যান্য ক্ষেত্রে উপনিবেশ স্থাপনকারীরা ইউরোপীয় অভিবাসীদের দীর্ঘমেয়াদী সুবিধার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গঠন করেছিল।

এ নোবেলজয়ীরা দেখিয়েছেন, বিভিন্ন দেশের সমৃদ্ধির মধ্যে পার্থক্যের একটি ব্যাখ্যা হলো উপনিবেশবাদের সময় চালু করা সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলো। অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায়শই এমন দেশগুলোতে চালু করা হয়, যেসব দেশ উপনিবেশের সময় দরিদ্র ছিল, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেসব দেশে সমৃদ্ধ জনসংখ্যার সৃষ্টি হয়। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ, কেন আগেকার উপনিবেশগুলো একসময় ধনী ছিল, এখন দরিদ্র।  
 
কিছু দেশ নিষ্কর্ষ প্রতিষ্ঠান ও নিম্ন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে আটকা পড়ে। অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠানের প্রবর্তন প্রত্যেকের জন্য দীর্ঘমেয়াদি সুবিধার সৃষ্টি করে, কিন্তু নিষ্কর্ষ প্রতিষ্ঠান ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের স্বল্পমেয়াদি লাভ দেয়। রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সবকিছর নিয়ন্ত্রণ গুটিকয় মানুষের হাতে থাকলে কেউই তাদের প্রতিশ্রুত ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক সংস্কারে ভরসা পায় না। নোবেলজয়ী তিন অর্থনীতিবিদ দেখিয়েছেন, ফলে এসব দেশ উন্নতিতে পিছিয়ে থাকে।  

সরকার ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য বিশ্বাসযোগ্য প্রতিশ্রুতি দিতে না পারলে কখনো কখনো গণতন্ত্রীকরণ ঘটে। মানুষ যখন আস্থা হারিয়ে ফেলে, তখন তারা গণতন্ত্রের জন্য চাপ দেয়। যখন সেখানে বিপ্লবের ঝুঁকি থাকে, ক্ষমতাসীনরা দ্বিধার মুখ পড়ে।
 
সরকারগুলো অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করতে পারে, তবে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে গেলে জনগণ প্রায়শই তাদের প্রতিশ্রুতির ক্ষেত্রে বিশ্বাস রাখতে পারে না না। শেষ পর্যন্ত ক্ষমতা হস্তান্তর এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাই হতে পারে একমাত্র সমাধান।

চলতি বছর নোবেলজয়ী ড্যারন আসেমোগলুর জন্ম তুরস্কের ইস্তানবুলে ১৯৬৭ সালে। লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্স থেকে তিনি পিএইডি ডিগ্রি লাভ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির অধ্যাপক হিসেবে তিনি কর্মরত।

সিমন জনসনের জন্ম ১৯৬৩ সালে যুক্তরাজ্যের শিফিল্ডে। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে তিনি ১৯৮৯ সালে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তিনি।

আর রবিনসনের জন্ম ১৯৬০ সালে। যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ১৯৯৩ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অজর্ন করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর অধ্যাপক।

নোবেল কর্তৃপক্ষ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, একটি দেশের সমৃদ্ধির জন্য সামাজিক প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন চলতি বছর অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী তিন অধ্যাপক। আইনের দুর্বল শাসনের সমাজ এবং জনসংখ্যাকে শোষণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো উন্নতি বা পরিবর্তন আনে না। এমনটি কেন হয়, বিজয়ীদের গবেষণা আমাদের তা বুঝতে সাহায্য করে।

১৮৯৫ সালে সুইডিশ উদ্ভাবক এবং সমাজসেবী আলফ্রেড নোবেলের উইলের মাধ্যমে নোবেল পুরস্কার প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬৮ সালে অর্থনীতিকে এ পুরস্কারের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। উইলে এটি অন্তর্ভুক্ত ছিল না। বিজয়ীরা একটি সনদ, একটি গোল্ড মেডেল ও চেক পেয়ে থাকেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০২৪

আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।