যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ডোনাল্ড ট্রাম্পই প্রথম সাবেক প্রেসিডেন্ট যিনি কোনো ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। একইসঙ্গে তিনিই প্রথম মার্কিন রাজনীতিক, যার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থাতেই নতুন করে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া চারটি ফৌজদারি মামলার পরিণতি ঠিক কী হতে পারে তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
মুখ বন্ধ রাখতে অর্থ প্রদানের অভিযোগ
নিউ ইয়র্কে ব্যবসায়িক নথি জাল সংক্রান্ত মামলায় ট্রাম্পকে ৩৪টি অপরাধমূলক অভিযোগে ইতিমধ্যেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। চলতি বছরের মে মাসে নিউ ইয়র্কের এক আদালত তাকে একজন পর্ন ছবির তারকার মুখবন্ধ রাখার জন্য টাকা দেওয়ার অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় দোষী সাব্যস্ত করেছিল।
এই মামলায় ২৬ নভেম্বর রায় দেবেন বিচারক উয়ান মার্চান।
ব্রুকলিনের সাবেক প্রসিকিউটর জুলি রেন্ডেলম্যান বিবিসিকে জানিয়েছেন, তিনি মনে করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প জেলে যাবেন না। কারণ ট্রাম্প একজন প্রবীণ ব্যক্তি এবং প্রথমবার কোনো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন তাই তাকে কারাগারে পাঠানোর সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।
কিন্তু যদি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়, তাহলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আইনজীবীরা হয়ত সঙ্গে সঙ্গে পাল্টা আর্জি জানাবেন আর্জির নিষ্পত্তি হওয়া অব্দি তাকে মুক্ত রাখারও আবেদন জানানো হবে হয়ত। সেই পরিস্থিতিতে আর্জির প্রক্রিয়া বছরের পর বছর চলতে পারে।
ছয়ই জানুয়ারির মামলা
২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পরাজয় মেনে নিতে না পেরে, সেই নির্বাচনি ফল বদলে ফেলার জন্য জোরদার প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য এই মামলায় তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন।
সাবেক ফেডারেল প্রসিকিউটর নেয়ামা রাহমানির মতে, যেহেতু ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতেছেন, তাই এই মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত ফৌজদারি বিষয় থেকে আপাতত তিনি ‘রেহাই’ পাবেন। এটা সুপ্রতিষ্ঠিত বিষয় যে একজন বর্তমান প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মামলা করা যায় না। তাই ডিসি ডিসট্রিক্ট কোর্টে এই নির্বাচনী জালিয়াতির মামলা খারিজ হয়ে যাবে।
তবে এই মামলার প্রসিকিউটর জ্যাক স্মিথ যদি মামলা খারিজ করতে অসম্মতি জানায়, তাহলে ট্রাম্প তাকে বরখাস্ত করতে পারেন। গত অক্টোবরে এক রেডিও সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, আমি দুই সেকেন্ডে ওকে ফায়ার (বরখাস্ত) করতে পারি।
গোপনীয় নথি সংক্রান্ত মামলা
হোয়াইট হাউজ ছেড়ে যাওয়ার পর গোপনীয় নথি সঠিকভাবে হ্যান্ডেল করা হয়নি বলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যে মামলা দায়ের হয়েছে তারও নেতৃত্বে রয়েছেন জ্যাক স্মিথ। এই অভিযোগও অস্বীকার করেছেন ট্রাম্প।
নেয়ামা রাহমানি বিবিসিকে জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জিতে যাওয়ার কারণে এই মামলার ভবিষ্যৎও তার বিরুদ্ধে ওঠা ২০২০-সালের নির্বাচনি ফল সংক্রান্ত মামলার মতোই হবে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০২৪
এমএম