ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ চৈত্র ১৪৩১, ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ত্রাণ নয়, আরও অপেক্ষা: গাজার ক্ষুধার্তদের দিকে মুখ ফিরিয়ে নিল আইডিএফ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০২৫
ত্রাণ নয়, আরও অপেক্ষা: গাজার ক্ষুধার্তদের দিকে মুখ ফিরিয়ে নিল আইডিএফ

পৃথিবীর সবচেয়ে বিপর্যস্ত জনপদ গাজা। যেখানে প্রতিদিন খাদ্যের জন্য কাঁদে শিশু, চিকিৎসার অভাবে মারা যায় মানুষ, সেই গাজার জন্য আপাতত কোনো ত্রাণ পাঠানো হবে না।

সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে এমনটাই জানালো ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।

এক বিবৃতিতে আইডিএফ বলেছে, আমরা কখনোই হামাসের হাতে ত্রাণসামগ্রী তুলে দেব না। এ ধরনের কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই। আমরা ইসরায়েলের রাজনৈতিক নেতৃত্বের নির্দেশেই কাজ করি। নির্দেশনা পেলে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বিবৃতির এই ভাষ্য যেন গাজার লাখো মানুষের কান্নায় একরকম দেওয়াল তুলে দিল। খাদ্য, ওষুধ, জ্বালানি—সবকিছুর অভাব ঘিরে রেখেছে গাজার প্রতিটি প্রান্ত। কিন্তু আইডিএফ বলছে, এখনই কোনো সহায়তা পৌঁছাবে না।

এর আগে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইয়েনেত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, আইডিএফ গাজায় ত্রাণ সরবরাহ পুনরায় চালুর উদ্যোগ নিচ্ছে। তবে আইডিএফ সে দাবি নাকচ করে বলেছে, ওই প্রতিবেদন ভিত্তিহীন ও অসত্য।

একই দিন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকেও জানানো হয়েছে, বর্তমানে গাজায় আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের উদ্ধারে এবং যুদ্ধের অন্যান্য লক্ষ্য পূরণে মনোযোগী আইডিএফ। মানবিক ত্রাণ আপাতত তাদের অগ্রাধিকার নয়।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, গাজা নিয়ন্ত্রণকারী হামাসের আকস্মিক হামলার জবাবে গাজায় আগুন ঝরায় ইসরায়েলি বাহিনী। সেই থেকে ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলছে অবিরাম অভিযান। হামলায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত ও ২৫১ জন জিম্মি হয়।

চলমান লড়াইয়ের মাঝেও আন্তর্জাতিক চাপে গত ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েল ঘোষণা দেয় যুদ্ধবিরতির। এতে করে প্রায় দুই মাস, অর্থাৎ ১৭ মার্চ পর্যন্ত গড়ে ৬০০ ত্রাণবাহী ট্রাক প্রতিদিন প্রবেশ করে গাজায়। কিন্তু ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভেঙে আবারও অভিযান শুরু করলে বন্ধ হয়ে যায় সব রকমের ত্রাণ সরবরাহ।

এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা জেরুজালেম পোস্টকে বলেন, গত কয়েক মাসে কিছু ত্রাণবাহী ট্রাক হামাস লুট করেছে, এমন প্রমাণ আমাদের হাতে রয়েছে। তাই এখন এমন এক ব্যবস্থার কথা ভাবছি, যেখানে হামাসকে পাশ কাটিয়ে ত্রাণ পাঠানো যাবে। তবে প্রকল্পটি এখনো চূড়ান্ত নয়।

এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বিপন্ন হয়ে পড়েছে গাজার সাধারণ মানুষ। এক টুকরো রুটি, এক ফোঁটা পানির জন্য প্রতিদিনই লড়ছে তারা। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মতে, শুধু বোমার আঘাতে নয়, খাদ্য ও ওষুধের অভাবেও গাজায় মারা গেছে হাজার হাজার মানুষ।

আইডিএফের চালানো অভিযানে ইতোমধ্যে নিহত হয়েছে ৫০ হাজার ৭০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি। তবে প্রকৃত মৃত্যু সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০২৫
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।