আফ্রিকার বিরুঙ্গা ন্যাশনাল পার্কে ৫০টি জলহস্তীসহ আরও বেশ কয়েকটি বড় প্রাণী মারা গেছে। প্রাণীগুলোর মরদেহ পরীক্ষায় অ্যানথ্রাক্সের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
মধ্য আফ্রিকার দেশ গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে (ডি আর কঙ্গো) এই বিরুঙ্গা ন্যাশনাল পার্কের অবস্থান। পার্ক সংলগ্ন ইশাশা নদীর পানিতে প্রাণীগুলোর মরদেহ ভেসে থাকতে দেখা যায়। নদীর তীরেও কিছু প্রাণীর মরদেহ পড়ে ছিল।
পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, এসব প্রাণীর মরদেহ প্রথম দেখা যেতে শুরু করে গত সপ্তাহ থেকে।
পার্কের পরিচালক ইমানুয়েল ডে মেরোড বলেন, প্রাণীগুলোর মরদেহ উদ্ধার ও সমাধিস্থ করার কাজ চলছে, যেন সংক্রমণ আর না ছড়ায়। তবে কাজটি খুবই কঠিন, কারণ কোনো এক্সকাভেটর (খননযন্ত্র) নেই।
তিনি রয়টার্সকে বলেন, কাজটি কঠিন, কারণ প্রবেশাধিকার এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাব রয়েছে। আমাদের কাছে এমন ব্যবস্থা আছে যা দিয়ে আমরা সংক্রমণের বিস্তার সীমিত করতে পারি... তা হলো এসব মরদেহ ক্ষারযুক্ত সোডা দিয়ে সমাধিস্থ করা।
ইশাশা নদী উত্তরে এডওয়ার্ড হৃদে গিয়ে পড়েছে। এটি আফ্রিকার অন্যতম বড় হ্রদ। সেখানে স্থানীয়ভাবে আরও মৃত প্রাণীর খবর পাওয়া গেছে।
অ্যানথ্রাক্স ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ। এটি ব্যাসিলাস অ্যানথ্রাসিস নামক ব্যাকটেরিয়া থেকে সৃষ্ট। এটি মৃত্যুর কারণ হতে পারে, তবে এটি সাধারণত এটি সহজে ছড়ায় না।
এই ব্যাকটেরিয়া মূলত স্পোর হিসেবে মাটির মধ্যে বছরের পর বছর লুকিয়ে থাকে, তারপর পশুর শ্বাসপ্রশ্বাস বা কোনো কাটা বা আঘাতের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে।
কঙ্গোর প্রকৃতি সংরক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক করে বন্যপ্রাণী থেকে দূরে থাকতে এবং স্থানীয় উৎস থেকে জল পান করার আগে তা ভালভাবে ফুটিয়ে নিতে বলেছে।
সাত হাজার ৮০০ বর্গ কিলোমিটার (৩,০০০ বর্গ মাইল) এলাকাজুড়ে বিস্তৃত বিরুঙ্গা পার্ক জীববৈচিত্র্যে ভরপুর, একইসঙ্গে সবচেয়ে বিপজ্জনক জাতীয় উদ্যানগুলোর মধ্যে একটি।
বেশ জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য হলেও গত কয়েক বছরে বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও কঙ্গোর সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের কারণে এখানে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে।
গত কয়েক দশকে শিকার ও যুদ্ধের কারণে জলহস্তীর সংখ্যা ২০ হাজার থেকে কমে কয়েকশোতে নেমে এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে জলহস্তীর সংখ্যা বাড়ানোর প্রচেষ্টা চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২৫
আরএইচ