ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩২, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

কাশ্মীর হামলা: সন্দেহভাজন তিনজনের স্কেচ প্রকাশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২৫
কাশ্মীর হামলা: সন্দেহভাজন তিনজনের স্কেচ প্রকাশ

জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে গতকালের ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। হামলার সঙ্গে জড়িত তিনজন জঙ্গির স্কেচ আজ প্রকাশ করেছে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো।

সংস্থাগুলোর দাবি, তারা সবাই নিষিদ্ধ ঘোষিত পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সঙ্গে যুক্ত এবং অন্তত দুইজন বিদেশি বলে মনে করা হচ্ছে।

ওই সন্দেহভাজন তিন ব্যক্তির নাম আসিফ ফুজি, সুলেমান শাহ ও আবু তালহা। এ ছাড়া হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন লস্করের শীর্ষ নেতা সাইফুল্লাহ কাসুরি, যার ছদ্মনাম খালিদ।

ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সূত্র মতে জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামের বৈসারণে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পেছনে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার একটি শাখা সংগঠন 'দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট' (আরটিএফ) দায় স্বীকার করেছে।  

এর আগে সামাজিক মাধ্যমে আরটিএফ-এর একটি বিবৃতি ছড়িয়ে পড়ে। বিবৃতি দাবি করা হয়, ভারত অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে এখন পর্যন্ত ৮৫ হাজারের বেশি বসবাসের অধিকার (ডোমিসাইল) দেওয়া হয়েছে কাশ্মীরের বাইরের বাসিন্দাদের। এভাবে জনসংখ্যার কাঠামো বদলানোর চেষ্টা চলছে। এরা পর্যটক সেজে আসে, ডোমিসাইল সংগ্রহ করে এবং পরে নিজেরা অঞ্চলের মালিকের মতো আচরণ শুরু করে।

২০১৯ সালের অক্টোবরে গঠিত আরটিএফ-কে কাশ্মীরে স্থানীদের দিয়ে সশস্ত্র আন্দোলন চালানোর উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছিল বলে ভারতীয় গোয়েন্দা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। সংগঠনের সর্বোচ্চ কমান্ডার ছিলেন শেখ সাজ্জাদ গুল এবং অপারেশনাল প্রধান হিসেবে ছিলেন বাসিত আহমেদ দার। আরটিএফ মূলত হিজবুল মুজাহিদিন ও লস্কর-ই-তৈয়বার সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছিল।

ভারত সরকার আরটিএফ-কে লস্কর-ই-তৈয়বার একটি ছদ্ম-সংগঠন বা 'প্রক্সি ফ্রন্ট' বলে উল্লেখ করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০১৯ সালের আগস্টে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের (অনুচ্ছেদ ৩৭০) পর সৃষ্ট উত্তেজনার সুযোগে এই সংগঠন আত্মপ্রকাশ করে। শেখ সাজ্জাদ গুল, যিনি ১৯৭৪ সালের ১০ অক্টোবর শ্রীনগরে জন্মগ্রহণ করেন, ২০২২ সালে ভারত সরকার কর্তৃক সন্ত্রাসী হিসেবে ঘোষিত হন।

এদিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কাশ্মীর পৌঁছে উপ-রাজ্যপাল মনোজ সিনহা এবং মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহর সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সৌদি সফর সংক্ষেপ করে দেশে ফিরেছেন। তিনি হামলার তীব্র নিন্দা করে বলেন, এই নৃশংস ঘটনার জন্য যারা দায়ী, তাদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। তারা কোনোভাবেই রেহাই পাবে না। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংকল্প অটুট এবং আরও দৃঢ় হবে।

হামলা থেকে বেঁচে ফেরা কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে জানা গেছে, জঙ্গিরা প্রথমে পর্যটকদের ধর্ম জানতে চেয়েছিল এবং এরপর পুরুষদের গুলি করে হত্যা করে। নিহতদের মরদেহ ইতিমধ্যে বাড়ির উদ্দেশে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, কাশ্মীরে আটকে পড়া পর্যটকদের বাড়ি ফেরাতে বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় বিমান সংস্থাগুলোকে ভাড়া নিয়ন্ত্রণে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।

এই জঙ্গি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে দিল্লি, মুম্বাইসহ ভারতের বিভিন্ন বড় শহরে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে ।

বাংলাদেশ সময়: ৫০৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২৫
এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ