শব্দের চেয়ে পাঁচ গুণ দ্রুতগামী হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র এখন এমন অনেক দেশের দখলে, যাদের সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বের সম্পর্ক শীতল বা বৈরী। এসব ক্ষেপণাস্ত্র শুধু দ্রুতগতিরই নয়, আকাশে চলতে চলতেই জটিল বাঁক নিতে সক্ষম, ফলে সেগুলো শনাক্ত করে ধ্বংস করা প্রায় অসম্ভব।
হাইপারসনিক হামলার হুমকি মোকাবিলায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মহাকাশে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেই ‘গোল্ডেন ডোম’ কতটা কার্যকর হবে, তা সময়ই বলবে। তবে এরমধ্যেই প্রতিযোগিতামূলক অস্ত্র প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির দৌড় শুরু হয়ে গেছে।
এই প্রেক্ষাপটে নতুন করে আলোচনায় এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র জাপান। প্রতিবেশী চীন ও উত্তর কোরিয়ার হুমকিতে উদ্বিগ্ন জাপান নিজের সুরক্ষায় নিজস্ব প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে বলে জানায় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। ‘রেলগান’ নামে জাপানের নতুন ওই প্রযুক্তি দিয়ে নাকি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রকেও ঠেকানো সম্ভব।
তড়িৎচৌম্বকীয় শক্তিচালিত রেলগান প্রযুক্তি যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি ও চীনের মতো দেশগুলো আগে থেকেই ব্যবহার করে আসছে। ২০১৬ সাল থেকে জাপানও এ প্রযুক্তি উন্নয়নে কাজ করছে। বিস্ফোরক ছাড়াই অতিমাত্রায় উচ্চগতিতে চলতে সক্ষম এই অস্ত্র দিয়ে শত্রুপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র বা অবকাঠামোয় আঘাত হানা যায়। এটি মূলত যুদ্ধজাহাজ সুরক্ষা ও স্থল আক্রমণ ঠেকাতে ব্যবহৃত হয়।
জাপানের দাবি অনুযায়ী, তাদের তৈরি রেলগান হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র মোকাবিলায় শতভাগ কার্যকর। যদিও অস্ত্রটির নির্দিষ্ট বিবরণ প্রকাশ করা হয়নি, তবে জানা গেছে, এর সর্বাধুনিক সংস্করণ জাপানের যুদ্ধজাহাজ জেএস আসুকায় যুক্ত করা হয়েছে। রেলগানটি শব্দের চেয়ে সাড়ে ছয় গুণ বেশি গতিতে আঘাত হানতে সক্ষম।
এদিকে চীনের সঙ্গে তাইওয়ান ইস্যুতে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনায় দক্ষিণ চীন সাগরে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে বেইজিং। জাপানের আশঙ্কা, চীন তার কয়েকটি বিতর্কিত দ্বীপ দখলের চেষ্টা করতে পারে। অন্যদিকে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচি ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাও আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠেছে। এসব পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি জাপান প্রতিরক্ষা বাজেট উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছে।
এমএইচডি/আরএইচ