ঢাকা, সোমবার, ৩ ভাদ্র ১৪৩২, ১৮ আগস্ট ২০২৫, ২৩ সফর ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক দক্ষিণ গাজায় সরানোর প্রস্তুতি ইসরায়েলের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০:১৮, আগস্ট ১৭, ২০২৫
ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক দক্ষিণ গাজায় সরানোর প্রস্তুতি ইসরায়েলের

ইসরায়েল জানিয়েছে, রোববার থেকে উত্তর গাজার যুদ্ধক্ষেত্রে থাকা ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক দক্ষিণ গাজায় সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কদিন আগেই তারা গাজার সবচেয়ে বড় শহর গাজা সিটি দখলের নতুন সামরিক অভিযান ঘোষণা করেছিল।

শনিবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, বাস্তুচ্যুত বাসিন্দাদের জন্য তাবু ও অন্যান্য আশ্রয় সামগ্রী জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থার মাধ্যমে কেরেম শালোম (কারেম আবু সালেম) সীমান্ত দিয়ে আনা হবে। জাতিসংঘ এ পরিকল্পনা বা এতে তাদের কথিত ভূমিকা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

মাত্র কদিন আগেই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছিলেন, সেনাবাহিনীকে হামাসের দুটি অবশিষ্ট শক্ত ঘাঁটি—উত্তরের গাজা সিটি এবং দক্ষিণের আল-মাওয়া ধ্বংস করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সেনাবাহিনী এখনো স্পষ্ট করেনি, আশ্রয় সামগ্রী গাজা সিটির আনুমানিক ১০ লাখ বাসিন্দার জন্য পাঠানো হচ্ছে কি না, কিংবা দক্ষিণে যেখানে তাদের সরিয়ে নেওয়া হবে, সেটি মিশর সীমান্তের কাছে রাফাহ হবে কি না।

জাতিসংঘ তাৎক্ষণিকভাবে ইসরায়েলের এ ঘোষণায় প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে সংস্থাটি বৃহস্পতিবার সতর্ক করেছিল যে ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতিতে থাকা হাজার হাজার পরিবার গাজা সিটির এই পরিকল্পনা কার্যকর হলে চরম বিপদের মুখে পড়বে।

হামাসের মিত্র ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদ সেনাবাহিনীর এ ঘোষণা সম্পর্কে বলেছে যে, এটি গাজা সিটি দখলের বর্বর আক্রমণের অংশ এবং আন্তর্জাতিক কনভেনশনের প্রকাশ্য উপহাস।

এক সপ্তাহ ধরে ইসরায়েলি বাহিনী গাজা সিটির উপকণ্ঠে অভিযান বাড়িয়েছে। জয়তুন ও সুজাইয়া এলাকার বাসিন্দারা জানান, সেখানে ভারী বিমান ও ট্যাঙ্ক হামলা চালানো হয়েছে।

ওয়াফা সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ইসরায়েলি একটি ড্রোন পূর্ব গাজার জয়তুন এলাকার আসকাউলায় আঘাত হানে, এতে দুজন নিহত ও কয়েকজন আহত হন।

জয়তুন এলাকার আজ-জারকা সড়কের আল-আলামী মসজিদের কাছে একটি বাড়িতে হামলা হলে আরও একজন নিহত ও তিনজন আহত হন।  

দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসি এলাকায়ও শনিবার হামলা চালানো হয়। যুদ্ধের শুরুর দিকে এ এলাকাকে তথাকথিত নিরাপদ অঞ্চল ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু তারপরও এখানে একাধিকবার হামলা চালানো হয়েছে।

গাজায় ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত অন্তত ৬১ হাজার ৮২৭ জন নিহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এর মধ্যে ২৫১ জন অপুষ্টিতে মারা গেছেন।

শনিবার মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ১১ জন, যার মধ্যে একটি শিশু, অনাহারে মারা গেছে। গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালে ২০০-রও বেশি রোগীর জীবন হুমকির মুখে, কারণ তীব্র ওষুধ সঙ্কট ও অপুষ্টির কারণে তাদের চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে না।

আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।