ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ভালোবাসা দিবসের জানা-অজানা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৪
ভালোবাসা দিবসের জানা-অজানা

১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবস। লাল গোলাপ হাতে পছন্দের মেয়েটিকে বা ছেলেটিকে ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ বলার উপযুক্ত সময়।

কাছে না থাকলে মোবাইলে একপক্ষীয় ভালোবাসার গল্পের নায়ক বা নায়িকারা হয়ত পাঠাচ্ছেন তিন শব্দের  বাক্যটি।

আর যারা আগে থেকেই জুটিবদ্ধ তারা বছর প্রেমিকজুটির সাঁজে বেরুচ্ছেন নগর-গ্রামের বিভিন্ন প্রান্তে, লোকচক্ষুর আড়ালে প্রিয়তম বা প্রিয়তমার গালে এঁকে দিচ্ছেন নিজের ঠোটের আলপনা।

কিন্তু যারা অভাগা তাদের খবর কী? যারা প্রেমবঞ্চিত তাদের জন্যও আজকে চলছে এক দিবস-‘একক সচেতনতা দিবস’ (সিঙ্গেল অ্যাওয়ারনেস ডে-স্যাড)।

ভালোবাসা দিবস ঘিরে নানা কথা প্রচলিত রয়েছে। ভালোবাসা দিবসের নাম কেন ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’, কেন প্রিয় মানুষকে লাল গোলাপ দেওয়া হয়-পাঠক এমন কিছু জানা-অজানা কথা আপনাদের জানাতেই এ প্রতিবেদন।

কে ছিলেন ভ্যালেন্টাইন?
ইতিহাসবিদরা বলেন, তৃতীয় শতকে রোমে ভ্যালেন্টাইন ডে’র যাত্রা। এ সম্পর্কে একটি গল্প প্রচলিত রয়েছে। সম্রাট ক্লাউডিয়াস দ্বিতীয় নিজের সৈন্যবাহিনীকে শক্তিশালী করার জন্য তরুণদের বিয়ে নিষিদ্ধ করলেন।

ওই সময় রোমে বাস করতেন এক তরুণ পুরোহিত। তার নাম ছিল ভ্যালেন্টাইন। তিন সম্রাটের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গোপনে প্রেমিক তরুণ-তরুণিদের বিয়ে দিতেন।

কোনোভাবে বিষয়টি কানে যায় ক্লাউডিয়াসের। ভ্যালেন্টাইনকে গ্রেফতার করে জেলে পুড়ে দেন রোম সম্রাট, দিলেন তার মৃত্যুদণ্ড। জেলে থাকার সময় জেলের প্রধান কর্মকর্তার মেয়ের প্রেমে পড়েন ভ্যালেন্টাইন। মৃত্যুর আগে প্রিয়তমাকে উদ্দেশ করে  লিখে যান, ‘ফ্রম ইওর ভ্যালেন্টাইন’। সেই থেকে আজও প্রেমিক-প্রেমিকার ভ্যালেন্টাইনের মতো আবেগ প্রকাশ করে আসছেন।

প্রেমের জন্য জীবন উৎসর্গকারী ভ্যালেন্টাইনের স্মরণে তার মৃত্যুর অনেক দিন পর ভালোবাসা দিবসের নামকরণ করা হয় ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’।

কেমন হবে স্বামী?
মধ্যযুগে ভালোবাসা দিবসে মেয়েরা তাদের ভবিষ্যত স্বামীদের কল্পনা করে নির্দিষ্ট বিশেষ কিছু খাবার খেতেন। আরেকটি জনশ্রুতি রয়েছে, ভালোবাসা দিবসে প্রথম প্রাণী দেখার সঙ্গে মেয়ের ভবিষ্যত স্বামী পাওয়ার বিষয়টি নির্ধারিত হয়ে যায়। কোনো মেয়ে কাঠবিড়াল দেখলে তার স্বামী হবে কঞ্জুস বা কৃপণস্বভাবের। আর গোল্ডফিশ দেখলে ওই মেয়ের স্বামী হবেন একজন বিত্তশালী ব্যক্তি।

গোলাপ কেন!

গোলাপকে ভালোবাসার ফুল ভাবা হয়। কেননা গোলাপের ইংরেজি ‘ROSE’ এর ‘E’ সামনে আনলে হয় ‘EROS’। ‘EROS’। ‘EROS’ অর্থ হচ্ছেন ভালোবাসার দেবতা।   হয়ত তাই গোলাপ ভালোসার প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

গ্রাহামবেলকে ধন্যবাদ জানান
আপনাকে আলেক্সজান্দ্রার গ্রাহামবেলকে ধন্যবাদ জানাতে হবে। আপনার প্রিয়তম বা প্রিয়তমাকে ফোনে ভালোবাসার কথা জানানো সম্ভব হচ্ছে তারই অনন্য সাধারণ উদ্ভাবনের জন্য। ১৮৭৬ সালের ভ্যালেন্টাইন ডে’তে তিনি টেলিফোনের পেটেন্ট  চেয়ে আবেদন করেছিলেন। হতে পারে এটি কাকতালীয় ঘটনা! 

৮০ লাখ চকলেটের গায়ে শব্দ
প্রতিবছর ভালোবাসা দিবসে বিশ্বে ৮০ লাখের বেশি চকলেটে আবেগী কিছু শব্দ দিয়ে তৈরি হয়। ‘মিস ইউ’ ‘ট্রু লাভ’ ‘ইউ অ্যান্ড আই’সহ কাছে পাওয়ার বাসনাসমেত নানা শব্দ অঙ্কিত এসব চকলেটগুলো বিশ্বজুড়ে বিক্রি হয়। ১৮৬৬ সালে ডেনিয়েল চেস প্রথম এ হৃদয় ‍কাড়ানো শব্দের ব্যবহার করেছিলেন।

আনন্দ-বেদনার প্রতিষেধক চকলেট
ভালোবাসায় পড়েছেন বা ব্যর্থ হয়েছেন-কোনো চিন্তা নয়, চকলেট কিনে খান। চকলেট হচ্ছে সব ব্যথা আর আনন্দের অবিতর্কিত থেরাপি। ১৮ শতক থেকে প্রেমে ছ্যাকা খাওয়াদের যন্ত্রণা উপমশের জন্য চকলেট খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে আসছেন চিকিৎসকেরা।


হৃদয়াকৃতির চকলেট বাক্স
১৮৮২ সালের এ দিনে প্রথম হৃদয়াকৃতির চকলেট বাক্সের প্রচলন শুরু হয়। রিচার্ড ক্যাডবেরি এর প্রবর্তক। পরিসংখ্যান মতে, প্রতিবছর ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ৩ কোটি ৫০ লাখের বেশি হৃদয়াকৃতির চকলেট বাক্স বিক্রি হয়।

হ্যাপি স্যাড
ছ্যাকা খেলে তো চকলেট খাবেন, তবুও ভালোবাসা দিবস উদযাপন করবেন! ভালোবাসা দিবসটি ভালোবাসা দিবস হিসেবে নয় ‘একক সচেতনতা দিবস’ (সিঙ্গেল অ্যাওয়ারনেস ডে-স্যাড) পালন করুন। লাল পোশার পরিবর্তে আপনি পরুন সবুজ পোশাক।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।