ঢাকা: আধুনিক সিঙ্গাপুরের জনক ও দেশটির প্রথম প্রধানমন্ত্রী লি কুয়ান ইউ আর নেই। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (২৩ মার্চ) স্থানীয় সময় ভোর ৩টা ১৮ মিনিটে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ খবর নিশ্চিত করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছেন যে, সিঙ্গাপুরের প্রতিষ্ঠাতা প্রধানমন্ত্রী লি কুয়ান ইউ মৃত্যুবরণ করেছেন’।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী লি শিয়েন লুং প্রয়াত লি কুয়ানের ছেলে। বাবা এবং সিঙ্গাপুরের জনক ও প্রথম প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে এক বার্তায় লি শিয়েন বলেন, ‘তিনি আমাদের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন। এমন একটি জাতিকে গড়ে তুলেছেন, যাদের কিছুই ছিল না। তিনি আমাদের সিঙ্গাপুরের নাগরিক হিসেবে গর্ব করার সুযোগ করে দিয়েছেন। তার মতো আর কাউকে পাব না আমরা। ’
৫ ফেব্রুয়ারি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন দক্ষিণ-দক্ষিণ এশিয়ার একটি ক্ষুদ্র দ্বীপকে বিশ্বের অন্যতম বাণিজ্যকেন্দ্রে পরিণত করা এ নেতা। এরপর থেকেই তিনি হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন।
লি কুয়ানের মৃত্যুতে দেশটিতে এক সপ্তাহের শোক ঘোষণা করা হয়েছে। ২৯ মার্চ রাষ্ট্রীয়ভাবে তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ।
আধুনিক সিঙ্গাপুরের রূপকারের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন বিশ্বনেতারাও। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব তুন রাজাক, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী টনি অ্যাবোট, ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট বেনিগনো অ্যাকুইনো পৃথক পৃথক বার্তায় এ শোক প্রকাশ করেন। বিশ্বনেতারা বলেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক মুক্তিতে আধুনিক সিঙ্গাপুরের এ জনকের অবদান বিশ্ববাসী চিরদিন স্মরণ রাখবে।
ব্রিটেন থেকে স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৫৯ সালে সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করা লি কুয়ান টানা ত্রিশ বছর স্বপদে আসীন থাকেন। এই তিন দশকে ভগ্ন অর্থনৈতিক অবস্থা থেকে তুলে এশিয়ার অন্যতম ধনী দেশে পরিণত করেন দেশটিকে। এ কারণে সিঙ্গাপুরে তিনি গভীর শ্রদ্ধার পাত্র।
১৯৯০ সালে লি কুয়ান অবসরে গেলে তারই সহকারী গোহ শক টং ২০০৪ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন। এরপর কুয়ানের দ্য পিপল’স অ্যাকশন পার্টির (পিএপি) অপর নেতা ও তার ছেলে লি শিয়েন লুং ক্ষমতায় আসেন।
১৯৫৯ সালের পর লি কুয়ানের দল পিএপি কখনোই নির্বাচনে পরাজিত হয়নি। বর্তমান সংসদের ৮৭টি আসনের মধ্যে ৮০টিই জনপ্রিয় এই দলটির দখলে।
বাংলাদেশ সময়: ০৬২৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৫/আপডেট ১০৪৯ ঘণ্টা