ঢাকা: ইসলামি চরমপন্থিদের প্রতিহত করতে মালয়েশিয়া এক ‘বিতর্কিত’ সন্ত্রাসবিরোধী আইন পাস করেছে। এ আইনে এখন থেকে কোনো বিচার ছাড়াই অভিযুক্তকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারাগারে বন্দি রাখা যাবে।
সোমবার (০৬ এপ্রিল) স্থানীয় সময় রাতে প্রবল বিতর্ক শেষে দেশটির সংসদে এ আইন পাস হয় বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে।
দেশটির রাজধানী কুয়ালালামপুরে হামলার পরিকল্পনার অভিযোগে ১৭ সন্দেহভাজনকে পুলিশের আটকের ঘোষণা আসার কয়েক ঘণ্টা পরই এ আইন পাস হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাহিদ হামিদি জানান, ওই ১৭ ব্যক্তি কুয়ালালামপুরের পুলিশ স্টেশন ও সেনাঘাঁটিগুলোতে হামলার পরিকল্পনা করছিলেন।
গ্রেফতারদের মধ্যে এক ১৪ বছরের শিশুও রয়েছে বলে জানা গেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, আটকদের মধ্যে দু’জন সন্দেহভাজন সম্প্রতি সিরিয়া থেকে ফিরেছেন।
নতুন পাস হওয়া এ সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ফলে একটি বোর্ডের মাধ্যমে অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত কারাগারে আটকাদেশ দেওয়া যাবে। সেই সঙ্গে আটকের মেয়াদ কয়েক দফায় বাড়ানোও যেতে পারে।
বিচার বহির্ভূত এমন আটকাদেশের ক্ষমতা দেওয়ার কারণেই আইনটির বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সেই সঙ্গে নির্দোষ ব্যক্তিও শুধুমাত্র সন্দেহের কারণে ফেঁসে যেতে পারেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এছাড়া এ আইনের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষকে মালয়েশিয়া বা মালয়েশিয়া থেকে বিদেশে ভ্রমণরত সন্দেহভাজন যেকোনো মালয়েশীয় অথবা বিদেশির কাগজপত্র বাতিল করারও ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
তবে এখনই এ বিলটি কার্যকর হবে না বলে জানা গেছে। চূড়ান্তভাবে বিলটি পাস হতে মালয়েশিয়া সিনেটের অনুমোদন লাগবে। তবে দেশটির সিনেটে ক্ষমতাসীন জোট সরকারেরই প্রাধান্য বেশি। কাজেই সেখানেও বিলটি পাস হতে খুব একটা সমস্যা হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
এর আগে, প্রবল জনপ্রতিরোধের কারণে ২০১২ সালের এপ্রিলে মালয়েশিয়া তার ‘অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা আইন’ বাতিল করতে বাধ্য হয়। ওই আইনেও সন্দেহভাজন যেকোনো ব্যক্তিকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আটকাদেশ দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।
মনে করা হচ্ছে, এবার ২০১২ সালে বাতিল করা ওই আইনটিই নতুনভাবে পুনর্জীবিত করলো দেশটির সরকার।
এ বিষয়ে দেশটির বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্য এন সুরেন্দ্রন বলেছেন, নতুন এ সন্ত্রাসবিরোধী আইন অপব্যবহারের সম্ভাবনা প্রবল। এর ফলে গণতন্ত্রের উপর একটি দুঃখজনক আঘাত এলো।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আইনটির সমালোচনা করে বলেছে, মানবাধিকারকে পেছনে ঠেলার পথে এটি একটি বড় পদক্ষেপ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০১৫
আরএইচ/এসএস