ঢাকা: ইরানের ‘পরমাণু অস্ত্রে’র ধারণা একটি অপপ্রচার ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনী।
রোববার (১৯ এপ্রিল) ইরানভিত্তিক সংবাদ সংস্থা ফার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এসময় এই প্রপাগান্ডার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে খামেনী বলেন, ইরানকে বিশ্বের কাছে হুমকি হিসেবে তুলে ধরতেই তারা এই অপপ্রচার চালিয়েছে।
এদিকে, আগামী মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) থেকে পরমাণু ইস্যুতে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির আলোচনার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হচ্ছে। উপ-পরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে এ আলোচনার বিষয়ে গত ১৪ এপ্রিল একটি ঘোষণা দেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ।
এর আগে গত ৩০ মার্চ সুইজারল্যান্ডের লুসান শহরে ইরানের সাথে সম্পাদতি হতে চলা পারমানবিক চুক্তির প্রাথমিক ধাপের শেষ পর্যায়ে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফের সাথে আলোচনায় বসেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি, ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড, ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লরেন্ট ফ্যাবিয়াস, জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাঙ্ক-ওয়াল্টার স্টেইনমেয়ার, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্জেই ল্যাভরভ ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) মধ্যরাতে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগ মুহূর্তে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে আসেন নেতারা।
কিন্তু বুধবারও (০১ এপ্রিল) কোনো ফলাফল না এলে হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে আলোচনা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বৃহস্পতিবার (০২ এপ্রিল) পর্যন্ত অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেন। এদিনই সমঝোতার ঘোষণা আসে।
চুক্তিটি সম্পাদিত হলে ইরানকে তার সেন্ট্রিফিউজের সংথ্যা দুই-তৃতীয়াংশ কমিয়ে ফেলতে হবে। সেন্ট্রিফিউজ ইউরেনিয়াম পরিশোধন ও পারমানবিক বোমা তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
সেই সঙ্গে দেশটিকে তার শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র নতুন করে সাজাতে হবে, যাতে প্লুটোনিয়াম ব্যবহারে কোনো অস্ত্র তৈরি করা না যায়। এছাড়া আগামী পনের বছরের জন্য ইউরেনিয়ামের মজুদ তিন দশমিক ৬৭ শতাংশের বেশি করা যাবে না বলেও সীমাবদ্ধতা তৈরি করে দেওয়া হবে। এই পরিমাণের বেশি ইউরেনিয়ামের মজুদ যে দেশেরই থাকে, তার পক্ষেই পারমাণবিক বোমা তৈরি করা সম্ভব।
অন্যদিকে, চুক্তি সম্পাদনের সঙ্গে সঙ্গে পরমাণু ইস্যুকে কেন্দ্র করে ইরানের ওপর আরোপিত আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞাও উঠে যাবে।
ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির এই চুক্তি সম্পাদনে আগামী ৩০ জুনকে শেষ সীমা হিসেবে ধরা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৫
আরএইচ