ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

খালাস পেলেন জয়ললিতা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৩ ঘণ্টা, মে ১১, ২০১৫
খালাস পেলেন জয়ললিতা জয়ললিতা

ঢাকা: দুর্নীতি মামলায় বিচারিক আদালতে কারা ও অর্থদণ্ডপ্রাপ্ত ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য তামিলনাড়ুর সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতাকে খালাস দিয়েছেন কর্ণাটকের হাইকোর্ট।

নিম্ন আদালতের দণ্ডের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করলে সোমবার (১১ মে) কর্ণাটকের হাইকোর্ট এ আদেশ দেন।

তবে, এর আগে তিন সপ্তাহ কারাভোগের পর আবেদন করলে ৬৭ বছর বয়সী এ বর্ণাঢ্য রাজনীতিককে জামিনে মুক্তি দেন সুপ্রিম কোর্ট।

কারাদণ্ড পাওয়ার কারণে হুমকির মুখে পড়েছিল ‘তামিলনাড়ুর আম্মা’ খ্যাত অল ইন্ডিয়া আন্না দ্রাভিডা মুনেত্রা কাজহাগাম (এআইএডিএমকে) দলের নেত্রী জয়ললিতার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। এখন ৬৭ বছর বয়সী এই রাজনৈতিক নেত্রী আবার তামিলনাড়ুর দলীয় প্রধান, এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর পদেও ফিরে যেতে পারবেন বলে জানাচ্ছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম।

জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে গত বছরের সেপ্টেম্বরে জয়ললিতাকে চার বছরের কারাদণ্ড ও ১০০ কোটি রুপি অর্থদণ্ড দেন ব্যাঙ্গালুরুর বিশেষ আদালত। ওই দণ্ডের কারণে জয়ললিতাকে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীর পদও খোয়াতে হয়। একই আদেশে জয়ললিতাকে দশ বছরের জন্য নির্বাচন থেকে নিষিদ্ধও করেন আদালত।

এই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন তামিলনাড়ুর ‘আম্মা’। সুপ্রিম কোর্ট তাকে জামিনে মুক্তি দিয়ে আপিলের বিচার কাজ সর্বোচ্চ তিন মাসের মধ্যে শেষ করতে কর্ণাটকের হাইকোর্টকে নির্দেশ দেন। সময়সীমা পেরোনোর একদিন আগেই সোমবার এ আদেশ দিলেন কর্ণাটক হাইকোর্ট। নিম্ন আদালতে জয়ললিতার সঙ্গে অর্থদণ্ড পাওয়া বাকি তিনজনকেও হাইকোর্টের রায়ে খালাস দেওয়া হয়েছে।

এই রায়ের ফলে মুখ্যমন্ত্রিত্বে ফিরে যেতে নির্বাচনে লড়তে আর বাধা রইল না জয়ললিতার।

হাইকোর্টের এই রায়ের পর তামিলনাড়ুতে আনন্দ-উল্লাসে মেতেছেন জয়ললিতার দল এআইএডিএমকের নেতাকর্মীরা। রায় ঘোষণার পর ‘আম্মা’র চেন্নাইয়ের বাড়ি পোয়েজ গার্ডেনের বাইরে উল্লাসে ফেটে পড়েন অপেক্ষমান নেতাকর্মীরা।

১৯৯৬ সালে জয়ললিতার বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলাটি দায়ের করেছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতা সুব্রমনিয়ম সোয়ামি। ১৮ বছর পর সেপ্টেম্বরে রায় ঘোষণা করে বিচারিক আদালত।

মামলার বিষয়ে প্রসিকিউশন জানায়, ১৯৯১ সালে জয়ললিতা যখন প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হন তখন তার ৩ কোটি রুপির সম্পদ ছিল। সে সময় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ‍তার বেতন ছিল মাত্র এক রুপি। কারণ তিনি ক্ষমতায় এসেই ঘোষণা দিয়েছিলেন যে মুখ্যমন্ত্রী হলে তিনি কোনো বেতন নেবেন না। অথচ ক্ষমতার পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষে তার পরিবারের সম্পদের মূল্য বেড়ে দাঁড়ায় ৬৬ কোটি রুপিতে। যা তার তৎকালীন আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ছিলো না।

অভিযোগে বলা হয়েছিল, জয়ললিতা দুই হাজার একর জমি, ৩০ কেজি স্বর্ণের মালিক। তাছাড়া তার শাড়ির সংখ্যা ১২ হাজার বলেও উল্লেখ করা হয় অভিযোগে। এছাড়া ১৯৯৬ সালে পালিত ছেলের বিয়েতে তিনি পাঁচ কোটি রুপি ব্যয় করেন বলেও অভিযোগ করা হয়।

অভিযোগ প্রমাণে সরকারের পক্ষে মোট দুইশ’ ৫৯ জন সাক্ষ্য প্রদান করেন। আর সাবেক অভিনেত্রী জয়ললিতার পক্ষে সাক্ষ্য দেন ৯৯ জন। তবে জয়ললিতার দাবি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই বিরোধীরা কাজটি করেছেন।

সোমবারের এই আপিলের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ পাল্টা আবেদন করতে পারবেন বলেও জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৯ ঘণ্টা, মে ১১, ২০১৫/আপডেট ১৩৩৬ ঘণ্টা
এইচএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।