ঢাকা: শেষ পর্যন্ত আইপিএল দুর্নীতির খলনায়ক ললিত মোদির অভিবাসন সংক্রান্ত আবেদনপত্রে সুপারিশের বিষয়টি স্বীকার করেছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে নারাজ তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) স্থানীয় সময় সকালেই দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে বসুন্ধরা সুপারিশের বিষয়টি স্বীকার করেন বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে তিনি এও স্বীকার করেছেন যে, বুধবার (২৪ জুন) কংগ্রেসের প্রকাশ করা দলিলে তার স্বাক্ষর জাল নয়।
সূত্রের বরাত দিয়ে একটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সবকিছু স্বীকার করে নিলেও তিনি কেন্দ্রকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, পদত্যাগ করতে রাজি নন তিনি। এদিন দফায় দফায় শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করে এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে কথা না বলারও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও দলের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেছেন, এ ঘটনায় ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) কেউ এখনও ‘দোষী’ প্রমাণিত হয়নি।
সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নাউডু বলেছেন, বিজেপি কোনো সংকটে নেই। কংগ্রেসের কাঁদা ছোড়া ব্যর্থ হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর নতুন হিসাব কষতে শুরু করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, চাপের মুখে যদি বসুন্ধরা রাজেকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়, তাহলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমাকে আর কিছুতেই রক্ষা করা যাবে না। বিরোধীরা তখন আরও ঘাড়ে চেপে বসবে।
এদিকে, বিতর্কে এবার গান্ধী পরিবারের নাম জড়ালেন ললিত মোদি নিজেই। এক টুইট বার্তায় তিনি দাবি করেছেন, গান্ধী পরিবারের দুই সদস্যের সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছে। এ বৈঠকে তিনি উচ্ছ্বসিত।
তিন অংশের ওই টুইট বার্তার দ্বিতীয় অংশে মোদি জানান, লন্ডনে অনুষ্ঠিত হয়েছে এই সাক্ষাৎ পর্ব।
শেষ অংশে গিয়ে তিনি জানান, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ও তার স্বামী রবার্ট ভাদ্রার সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়েছে।
ললিতের এ বার্তায় গান্ধী পরিবারের সঙ্গে কংগ্রেসও বেশ বেকায়দায় পড়ে গেছে বলে অভিমত রাজনীতি বিশেষজ্ঞদের। তারা মনে করছেন, এতোদিন যে ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন বিজেপিকে চাপ দিয়ে এসেছে দলটি, এবার তার সঙ্গে শীর্ষস্থানীয়ের নাম জড়ানোয় অবস্থান আগের চেয়ে নাজুক হয়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হল।
মোদির টুইট বার্তার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কংগ্রেসের মুখপাত্র রন্দীপ সূর্যওয়ালার বিবৃতি বিশেষজ্ঞদের ধারণার ভিত্তি আরও শক্ত করে দিয়েছে।
বিবৃতিতে রন্দীপ বলেন, ললিত তার বার্তায় আসলে বলেছেন, তিনি লন্ডনে প্রিয়াঙ্কা ও তার স্বামীকে দেখেছেন। তিনি একটি অপরিণত বিবৃতি দিয়েছেন। তার এ ধরনের বিবৃতি দেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।
এদিকে, ললিতের টুইট বার্তার পরপরই তা কংগ্রেসকে আঘাতের অস্ত্র হিসেবে নিয়েছে বিজেপি। দলটির মুখপাত্র সম্বিৎ পাত্র প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন, আমরা জানতে চাই, ললিতের সঙ্গে গান্ধী পরিবারের কিসের এতো সখ্যতা?
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০১৫
আরএইচ
** ললিত কাণ্ডে বলি হচ্ছেন বসুন্ধরা রাজে
** ললিত কাণ্ডে বেকায়দায় বিজেপি