ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

সূর্যগ্রহণকে ঘিরে নানা দেশের নানা গল্প

রাকিবুল হাসান, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪০ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০১৬
সূর্যগ্রহণকে ঘিরে নানা দেশের নানা গল্প ছবি: দিপু/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ন্যায় আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা গেছে বাংলাদেশেও। সূর্যদয়ের আগে থেকেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় গ্রহণ দেখতে অবস্থান নেন হাজার মানুষ।

একটি সময় ছিলো, যখন এই সূর্যগ্রহণের সময় ঘর থেকে বের হতো না কেউ। কারণ গ্রহণকে ঘিরে ছিলো বাপ-দাদার রেখে যাওয়া নানা ধরনের গল্প-কাহিনী।

শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই সূর্যগ্রহণকে ঘিরে রয়েছে নানান কেচ্ছা-কাহিনী। আর তা অনেকটা হাস্যকর ও পৌরাণিক কাহিনীরূপে স্থান পেয়েছে সেসব দেশগুলোর ইতিহাসের পাতায়। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নানা কুসংস্কার।

শুধুমাত্র সেই সময়ে নয়, বর্তমান সময়ে এখনো বিশ্বের মানুষের মনে থেকে গেছে সূর্যগ্রহণকে ঘিরে কুসংস্কারগুলো। এখনো অনেক অঞ্চলের মানুষ মনে করেন, সূর্যগ্রহণ হওয়াটা খারাপ একটি লক্ষণ। গ্রহণকে ঘিরে সেসব দেশের মজার কিছু বিষয় নিয়েই বাংলানিউজের এবারের আয়োজন-

সূর্যকে খেয়ে ফেলছে

বিশ্বের অনেক দেশই আছে, যেখানকার মানুষরা বিশ্বাস করেন, গ্রহণের সময় সূর্যিমামাকে খেয়ে ফেলছে ক্ষুধার্ত কোনো রাক্ষস। সেসব দেশের মধ্যে ভিয়েতনাম ও চীন অন্যতম। ভিয়েতনামের অধিকাংশ মানুষ বিশ্বাস করেন, একটি দৈত্যাকার ব্যাঙ সূর্যটিকে গিলে ফেলছে। অপরদিকে, চীনের মানুষরা বিশ্বাস করে, কোনো স্বর্গীয় ড্রাগন তার ক্ষুধা মেটাতে খেয়ে ফেলছে সূর্যকে। ইউরোপে অবশ্য এর জন্য নেকড়েদের দোষ দেওয়া হয়।

দৈত্যের মাথার অংশের কারণে

হিন্দু পুরাণে বলা হয়ে থাকে, দেবতাদের অমৃত পানের জন্য দৈত্য রাহুর শিরোচ্ছেদ করেন দেবতা বিষ্ণু। পরে দৈত্যটির মাথা আকাশে উড়ে গেলে সূর্যের কিছুটা অংশ ঢাকা পড়ে। যার ফলে সূর্যগ্রহণের সময় এমনটা দেখা যায়। শুধু তাই নয়, দৈত্য রাহু থেকে দূরে থাকতে সেসব অঞ্চলের লোকেরা গ্রহণের সময় পট ও প্যান বাজিয়ে উচ্চ আওয়াজ করেন, যাতে রাহু তাদের কাছে ভিড়তে না পারে।

থামো, চোর!

সূর্যগ্রহণকে ঘিরে কোরিয়ানদের মধ্যে অদ্ভুদ কিছু গল্প শোনা যায়। এসব গল্পের মধ্যে অন্যতম একটি হলো- পৌরাণিক একটি কুকুর সূর্যের কিছু অংশ চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে বলে সূর্যগ্রহণে এমনটি দেখা যায়।

রাগান্বিত ও সতর্কবার্তা

সূর্যগ্রহণের সময় চাঁদের ছদ্মবেশ ধারণ করে সূর্য। প্রাচীন গ্রিকরা বিশ্বাস করতেন, দেবতা রাগান্বিত হওয়ায় সূর্যগ্রহণের সময় এমনটি দেখা যায়। আর এটি বিপর্যয় ও ধ্বংসের পূর্বাভাস বলেও ধারণা করা হতো।

চাঁদ-সূর্যের মারামারি

পশ্চিম আফ্রিকার লোকেরা মনে করেন, সূর্যগ্রহণের সময় চাঁদ ও সূর্যের মধ্যে মারামারি চলে। আর এই সংঘর্ষ থামানোর একটাই উপায়- মানুষের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি।

ঘরের ভেতরে থাকো

বর্তমান বিশ্বের অনেক দেশেই মনে করা হয়, সূর্যগ্রহণের সময় ঘরের বাইরে গেলে ক্ষতি হতে পারে। বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে এই আশংকা অনেক বেশি। বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে এ কুসংস্কার যুগের পর যুগ ধরে মেনে চলা হয়। এমনটি গ্রহণের সময় অনেকে পানাহার থেকেও বিরত থাকেন।

সূর্যগ্রহণকে ঘিরে বিশ্বের সব দেশেই নেতিবাচক ধারণা থাকলেও ইতালিতে কিন্তু বিষয়টিকে অনেকটা ইতিবাচক ধরা হয়ে থাকে। ইতালির লোকেরা বিশ্বাস করেন, সূর্যগ্রহণের সময় ফুলের গাছ রোপণ করলে ফুলগুলো অন্যান্য ফুলের তুলনায় অনেক বেশি আকর্ষনীয় হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪১ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০১৬
আরএইচএস/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।