ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

তীর্থযাত্রায় ৬০০ কিমি হাঁটলো যে কুকুর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০১৭
তীর্থযাত্রায় ৬০০ কিমি হাঁটলো যে কুকুর নবীনের পিছু পিছু হাঁটছে মালু। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: একটুখানি যত্ন কিংবা এক চিমটি খাবার, কুকুরকে যে অনুগত বা ভক্ত করে তোলে তার নজির ভুরি ভুরি। প্রাণী হিসেবে কুকুরের পরিচিতও সেজন্য যত্ন-আত্তি পাওয়ার শর্তে ‘প্রভুভক্ত’ হিসেবে। কিন্তু সেই ভক্তি একটানা  ৬০০ কিলোমিটার হেঁটেও দেখানো সম্ভব?

এই অবিশ্বাস্য কীর্তিই দেখালো ভারতের কেরালা অঙ্গরাজ্যের মালু নামে একটি কুকুর। নবীন নামে ৩৮ বছর বয়সী এক পূণ্যার্থীর সঙ্গে টানা ১৬ দিন হেঁটে এই ভক্তি দেখিয়েছে নারী কুকুরটি।

৮ ডিসেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত নবীনের সঙ্গে মালুর এ অবিশ্বাস্য কীর্তি এখন ভারতীয় গণমাধ্যমে অন্যতম আলোচিত বিষয়।

সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, ৭ ডিসেম্বর কেরালার উদুপির কোলার এলাকার মুকাম্বিকা মন্দির থেকে পথনামথিত্তের ‍পাহাড়ি দুর্গম তীর্থস্থান শবরিমালার উদ্দেশে পায়ে হেঁটে যাত্রা করেন রাজ্যের কোজিকোদের বাসিন্দা নবীন। ৭০০ কিলোমিটার পথের এ যাত্রায় দ্বিতীয় দিন তার সামনে পড়ে মালু। কোনো আচরণে কুকুরটি তার ভক্ত হয়ে যায়। কিন্তু ভক্তি এতোই বেশি এসে যায় যে, শবরিমালায় পৌঁছানো পর্যন্ত পরবর্তী ১৬ দিন নবীনের সঙ্গে হেঁটেছে মালু।

কুকুরটির অবিশ্বাস্য তীর্থযাত্রায় হতবাক পূণ্যার্থী নবীন বলেন, “যেদিন প্রথম দেখা, আমি প্রায় ৮০ কিলোমিটার হেঁটে এসেছি, সেদিন দেখলাম আমার বিপরীত দিক থেকে ও আসছিল। তারপর পিছু নিলো। পিছু পিছু হাঁটতে হাঁটতে একেবারে তীর্থস্থান পর্যন্তই গেলো সে। ”

তাকে অনেকবার ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করেও পারেননি নবীন। বলেন, “ওকে কয়েকবার আমি ফেরাতে চেয়েছি। প্রতিদিনই পা দেখিয়ে দূর দূর করে তাড়ানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু ও আমার ২০ মিটারের মতো দূরত্বে সামনে সামনে হাঁটতেই থাকলো। কখনো কখনো পিছেও ছিল অবশ্য। ”তীর্থযাত্রার সহযোগী মালুর সঙ্গে নবীনপ্রথম দিকে অনেক বিরক্তি এলেও নবীন পরে দেখলেন তার দিনরাতের একাকিত্বের যাত্রায় এই মালুই সঙ্গ দিচ্ছে। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে তাকে পাহারাদারেরও ভূমিকায় দেখলেন পূণ্যার্থী নবীন।

নিজের ১৭তম দিনে শবরিমালায় পৌঁছেন নবীন। তার সঙ্গে পৌঁছে মালুও। পরে পার্শ্ববর্তী রাজ্যের সরকারি একটি পরিবহনে চড়ে ২৩ ডিসেম্বর বাড়ি ফেরেন নবীন। সঙ্গে নিয়ে আসেন মালুকেও।

মালুর পুরো নাম রাখা হয়েছে মালিকাপুরম। মালিকাপুরম বলা হয় শবরিমালার নারী পূণ্যার্থীদের।

সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, নবীনের বাড়িতে এখন মালুর জন্য এখন একটি কার্ডবক্স রয়েছে। এটাকে সে নিজের ঘর মনে করে ঘুমায়-বিশ্রাম নেয়। তার গলায় অবিশ্বাস্য তীর্থযাত্রার স্মারক হিসেবে এখন ঝুলছে একটি রুদ্রাক্ষের মালাও। এ কীর্তি গড়া প্রাণীটিকে দেখতে এখন নবীনের বাড়িতে পাড়া-পড়শীদের পাশাপাশি গণমাধ্যমকর্মীদেরও ভিড় লাগছে প্রতিদিন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৬
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।