ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

দখলদার ইসরায়েলের পক্ষে সৌদি আরব

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০১৮
দখলদার ইসরায়েলের পক্ষে সৌদি আরব সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান

গোটা মুসলিম বিশ্ব যখন আদর্শ হিসেবে অনুকরণ করে সৌদি আরবকে, ঠিক তখনই এ সম্মানজনক ভাবমূর্তির খোলস যেন ছুড়ে ফেললেন সৌদি যুবরাজ। যে দখলদার ইসরায়েলিদের দ্বারা গাজায় আজ বইছে ফিলিস্তিনিদের রক্তের গঙ্গা, সেই অসহায় ফিলিস্তিনিদের অধিকারের বদলে তার কণ্ঠে ঝরতে দেখা যায় দখলদারদের অধিকারের কথা।

যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছেন, ইসরায়েলিদেরও তাদের মাতৃভূমির অধিকার রয়েছে।

নির্যাতনকারী ইসরায়েলিদের পক্ষে যুবরাজের এমন মন্তব্য হতবাক করে দিয়েছে পুরো বিশ্বকে।

মুসলিম দেশগুলোর পাশাপাশি পশ্চিমা মিডিয়াগুলোতেও এ নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা। অথচ ইসলাম ধর্মের জন্মস্থান সৌদি আরব এতদিন ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবেই স্বীকৃতি দেয়নি। দুই দেশের মধ্যে নেই কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক। পাশাপাশি অবলম্বন করে আসছিলো ফিলিস্তিনিদের পক্ষে।

কিন্তু যুবরাজের এ বক্তব্যের পর ইসরায়েল ইস্যুতে সৌদি আরবের অবস্থান পরিবর্তনকে ‘পাশার দান উল্টে যাওয়া’ বলে আখ্যা দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা।

সাক্ষাৎকারে সৌদি যুবরাজ বলেন, ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলিদের উভয়েরই নিজেদের ভূমির অধিকার রয়েছে বলে আমি করি। এদেরমধ্যে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ওই অঞ্চলের সবার মধ্যে আন্তরিক সম্পর্ক নিশ্চিত করা উচিত।

রিয়াদ ও তেল আবিবের মধ্যে যে গোপন যোগাযোগ গড়ে ওঠার ধারণা সৃষ্টি হয়েছিল, তারই যেন প্রমাণ পেল বিশ্ববাসী। ধারণা করা হচ্ছে, এ যোগাযোগকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের ‘কমোন এনিমি’ ইরানের মোকাবেলা করতে চাচ্ছে তারা। কারণ মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের ক্রমবর্ধমান প্রভাবকে হুমকি হিসেবে দেখছে দুইপক্ষই।  

এ বিষয়টিরই যেন প্রমাণ পাওয়া যায় সালমানের পরের কথাতে। তিনি বলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে অনেক বিষয়েই আমাদের আগ্রহের মিল রয়েছে। আর সেখানকার নৈরাজ্য দূর করা গেলে ইসরায়েলের অনেক ব্যাপারেই গালফ দেশগুলোর আগ্রহ বাড়বে।  

মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব ও শক্তি মোকাবেলায় সৌদি আরব ইসরায়েলের সঙ্গে গোপন সখ্যতা গড়ে তোলার গুঞ্জন চলছিল অনেক দিন ধরেই। ২০১৭ সালের নভেম্বরে ইসরায়েলের জ্বালানিমন্ত্রী জুভাল স্টেইনিতজ রিয়াদ-তেল আবিব গোপন যোগাযোগের কথা স্বীকার করেন।

এদিকে ইসরায়েলের চিফ অফ স্টাফ জেনারেল গাদি আইজেনকট সেসময় বলেন, ইরানকে মোকাবেলায় তার দেশ সৌদি আরবের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়েও প্রস্তুত।

এবারে এ গুঞ্জনগুলোকেই যেন প্রতিষ্ঠিত করলেন যুবরাজ সালমান।  

এদিকে ইসরায়েলের পক্ষ অবলম্বন করে সালমানের বক্তব্যের পর তার বাবা বাদশা সালমান বিন আব্দুল আজিজ ফিলিস্তিনির প্রতি সৌদি আরবের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৮
এনএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।