জাতিসংঘ গঠিত স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের চার শতাধিক পৃষ্ঠার বর্ণনামূলক ওই প্রতিবেদনটির বিষয়ে মঙ্গলবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সংস্থাটির মানবাধিকার প্যানেল একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয়।
এতে বলা হয়, প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে বর্ণনা দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১১ সাল থেকে মিয়ানমারজুড়ে রোহিঙ্গা মুসলমান এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে জাতিগত নির্যাতন চালিয়েছে দেশটির সশস্ত্র বাহিনী।
গত আগস্টে মিয়ানমারের গণহত্যা নিয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধানের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল জাতিসংঘ। ওই প্রতিবেদনটির ওপর ভিত্তি করেই নতুন করে আবার ধ্বংসযজ্ঞের তথ্য দিলো আন্তসরকার সংস্থাটি। সে সময়ের প্রতিবেদনে মিয়ানমারের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত এবং গণহত্যার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনে অপরাধে তাদের অভিযুক্ত করার সুপারিশ করা হয়।
কিন্তু এ প্রতিবেদনটিতে আরও এক ধাপ এগিয়ে বলা হয়েছে। তাতে সামরিক বাহিনীর সর্বোচ্চ স্তরকে রোহিঙ্গা অত্যাচারের জন্য নির্দিষ্ট করে দোষারোপ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনটি বলছে, রোহিঙ্গা গ্রামে যে হামলাগুলো হয়েছে সেগুলোর ধরন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কমান্ডার ইন চিফ এবং সিনিয়র জেনারেল মিন অং ইং লাইংয়ের দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে। সেনপ্রাধানের নেতৃত্বে প্রাক-পরিকল্পনা এবং নকশা করে রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা চালানো হয়, এমনটি প্রতিবেদনের বর্ণনায় উঠে আসে।
রোহিঙ্গাদের গণহত্যা ও নির্যাতনের জন্য মিয়ানমার সেনাবাহিনীর শীর্ষ জেনারেলদের বারবার দোষারোপ করা হয়েছে জাতিসংঘের ওই তদন্ত প্রতিবেদনে। সেক্ষেত্রে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে ‘রাজনীতি’ থেকে দূরে রাখা উচিত বলে মনে করেন জাতিসংঘের তদন্তকারীরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর উচ্চ স্তরের নেতৃত্বে পরিবর্তন আনা জরুরি। পাশাপাশি মিয়ানমার প্রশাসনের ওপর যাতে তারা প্রভাব ফেলতে না পারে সে প্রদক্ষেপ নেওয়া উচিত। কেননা, মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে দেশে শান্তি ফিরে আসবে না।
এছাড়া রোহিঙ্গা গণহত্যা, গণধর্ষণ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য মিয়ানমারের সেনাপ্রধানসহ শীর্ষ ছয় জেনারেলকে আন্তর্জাতিকভাবে বিচারের আওতায় আনার বিষয়টিও আছে প্রতিবেদনে।
বাংলাদেশ সময়; ১০৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৮
টিএ