তদন্তকারীরা এমএইচ৩৭০ এর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় একেকবার একেক তথ্য দিয়ে থাকলেও কোনোটি থেকেই এর সন্ধানে বেশি দূর এগোনো যায়নি।
তবে এবার তদন্তকারী কোনো দল নয়, বনে ঘোরাফেরা করে এমন দুই সহোদর এবং এক ভিডিও প্রযোজক এমএইচ৩৭০ ফ্লাইট ঘিরে নতুন গুঞ্জনের জন্ম দিয়েছেন।
তারা দাবি করছেন, এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়ার একটি জঙ্গলে ওই প্লেনটির ধ্বংসাবশেষ দেখা গেছে। সেখানে সন্ত্রাসীরা এটাকে লুকিয়ে রেখেছে। সংবাদমাধ্যম বলছে, ইয়ান এবং তার ভাই জ্যাক জানিয়েছেন, জঙ্গলের একটি গভীর এলাকায় ভ্রমণের জন্য গেলে তাদের আটকে রেখে ৫৩ মিলিয়ন পাউন্ড মুক্তিপণ নেয় একটি অস্ত্রধারী দল। এরপর তাদের মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে ওই এলাকায় না যাওয়ার জন্য সতর্ক করে দেওয়া হয়।
ক্রোক লা ইয়াং জলপ্রপাতের মধ্যে কোনো একটি জায়গার ইঙ্গিত দিয়ে ব্রিটিশ ভিডিও প্রযোজক ইয়ান উইলসন দাবি করে বলেন, আমি মালয়েশীয় এয়ারলাইন্সের হারিয়ে যাওয়া সেই এমএইচ৩৭০ ফ্লাইটের ধ্বংসাবশেষ দেখেছি।
তিনি বলেন, আমরা যখন সেখানে কাজে গিয়েছিলাম, তখন প্রথম রাত কম্বোডিয়ার রাজধানী নমপেনে থাকি। পরে দেশটির পশ্চিমের কাম্পুং স্পেউতে যাই। সেখানে আমরা এখনও আছি। একপর্যায়ে ক্রোক লা ইয়াং জলপ্রপাতের কাছাকাছি গেলে একটি সাইট ঘেরাও করে রাখতে দেখা যায়। ওইদিকে যাওয়ার কোনো রাস্তার দেখা মিলছিলো না। তখন বোঝা যাচ্ছিলো না, আসলে পর্যটকরা কিভাবে এখানে ভ্রমণ করেন। নির্দিষ্ট করে আমরাও কিছু বুঝে উঠতে পারছিলাম না। উইলসন বলেন, এক সময় আমরা বুঝতে পারি সাইটটিতে সম্ভবত কোনো একটা রহস্য বা সমস্যা আছে। পরে আমরা সেখানকার নিচের দিকে একটা তাঁবু পাই এবং রাত্রিযাপনে ওইখানেই থাকি আর সেই সাইটটির ওপর নজর রাখি। একসময় অন্ধকারের মধ্যে বজ্রপাত হলে আবদ্ধ জায়গাটির দিকে সাদা বড় কিছু একটা দৃশ্যমান হয়। পরে সন্দেহ হলে গুগল ম্যাপ থেকে ঠিক ওই সময়ের কয়েকটি ছবি নেওয়া হয়। আবদ্ধ জায়গাটির উপর থেকে নেওয়া ওই ছবিগুলোতে সাদা বড় একটা কিছু দেখা যায়। সেটা খুব সম্ভবত একটি প্লেন হতে পারে। যা এমএইচ৩৭০ ফ্লাইটটি হতে পারে বলে ধারণা করা হয়। ২০১৪ সালের ৮ মার্চ দেশটির রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে চীনের বেইজিং যাওয়ার উদ্দেশে ১২ জন ক্রু ও ২২৭ জন যাত্রী নিয়ে উড্ডয়ন করেছিল মালয়েশীয় এয়ারলাইন্স পরিচালিত বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর প্লেনের এমএইচ৩৭০ ফ্লাইট। এর ঘণ্টাখানেক পরেই এটি নিখোঁজ হয়ে যায়। এ পর্যন্ত অফিসিয়ালি এর কোনো খোঁজ মেলেনি। কোথাও কোনো ধ্বংসাবশেষও পাওয়া যায়নি। তবে বিভিন্ন পদ্ধতিতে অনুসন্ধান তৎপরতা অব্যাহত ছিল।
প্লেনটিতে চীনা যাত্রী ছিলেন ১৫৩ জন এবং ৩৮ জন মালয়েশিয়ান। এছাড়াও ইরান, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ফ্রান্স, নিউজিল্যান্ড, ইউক্রেন, রাশিয়া, তাইওয়ান এবং নেদারল্যান্ডস-এর যাত্রী ছিলেন এ ফ্লাইটে। আর ১২ জন ক্রু যারা সবাই মালয়েশিয়ারই ছিলেন।
এ বিষয়ে দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল, সম্ভবত ভারত মহাসাগরের দক্ষিণাংশে প্লেনটি আকাশ থেকে পড়ে যায় এবং এর যাত্রীরা কেউ বেঁচে নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৮
টিএ