ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ০২ জুলাই ২০২৪, ২৪ জিলহজ ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

পাকিস্তানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৯
পাকিস্তানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি

যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কৃত ও ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অবস্থানরত নিজ দেশের নাগরিকদের ফেরত নিতে অস্বীকার করায় পাকিস্তানের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ওয়াশিংটন। এতে পাকিস্তানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাই সবার আগে বিপদে পড়বেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর জানায়, গত ২২ এপ্রিল ফেডারেল রেজিস্ট্রারের এক প্রজ্ঞাপন অনুসারে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা যে কোনো সময় আটকে দিতে পারে। তবে পাকিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে ভিসা কার্যক্রম অপরিবর্তিতই থাকছে।

পাকিস্তানের আগে আরও নয়টি দেশ বহিষ্কৃত ও মেয়াদোত্তীর্ণ ভিসাধারী নাগরিকদের ফেরত নিতে না চাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলো মার্কিন প্রশাসন। দেশগুলো হলো- ঘানা, গায়ানা (২০১১), গাম্বিয়া (২০১৬), কম্বোডিয়া, ইরিত্রিয়া, গিনি ও সিয়েরা লিওন (২০১৭) এবং বার্মা ও লাওস (২০১৮)।

যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও জাতীয়তা আইনের ২৪৩ (ডি) ধারা মোতাবেক, কোনো দেশ তার নাগরিকদের ফেরত নিতে বিলম্ব বা অস্বীকার করেছে, এই মর্মে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারির কাছ থেকে পাওয়া নোটিশের ভিত্তিতে স্টেট সেক্রেটারি ওই দেশের অভিবাসন বা অ-অভিবাসী ভিসা দেওয়া বন্ধ করতে পারেন।

এদিকে, পাকিস্তানের ওপর এ নিষেধাজ্ঞার প্রভাব যেন খুব বেশি না পড়ে যুক্তরাষ্ট্র সে চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র দফতরের এক মুখপাত্র।


তিনি বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে ভিসা কার্যক্রম অব্যাহত আছে। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তান সরকারের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা চলছে। আলোচনা চলাকালে কঠোর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ফেডারেল রেজিস্ট্রার সূত্র জানায়, ভিসা নিষেধাজ্ঞা সাধারণত ওইসব কর্মকর্তাদের দিয়ে শুরু হয়, যারা দেশটির নাগরিকদের ফেরত নেওয়া সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ে কাজ করেন। এরপরও যদি তারা রাজি না হন তবে ধারাবাহিকভাবে ওইসব কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্য, অন্য মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা ও অন্যান্য লোকদের ভিসা বাতিল করার মাধ্যমে চাপ বাড়ানো হয়।

এ নিষেধাজ্ঞায় পাকিস্তানিদের পক্ষে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়বে মন্তব্য করে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত হোসেন হাক্কানি বলেন, এর ফলে যারা যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ বা জরুরি প্রয়োজনে যেতে চান তারা সমস্যায় পড়বেন।  

নিষেধাজ্ঞা জারির পরদিন পাকিস্তানের সাবেক এ রাষ্ট্রদূত বলেন, পাকিস্তান বহিষ্কৃতদের ফেরত নেওয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যৌক্তিক দাবি মেনে নিলেই এমন পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব হতো।

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের এমন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা নতুন কিছু নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

হোসেন হাক্কানি বলেন, মনে হচ্ছে, মার্কিন প্রশাসন পাকিস্তানিদের এমন আচরণ আর সহ্য করবে না। ইসলামাবাদের নীতির কারণে আন্তারিকতার জায়গাটি দখল করে নিয়েছে নিষেধাজ্ঞায়।

যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৯৬ সাল থেকেই এই আইনের অস্তিত্ব থাকলেও গত কয়েক বছরে এর প্রয়োগ বেড়েছে।  

ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পরপরই ঘোষণা দেন, তারা অভিবাসন আইনের প্রতি কঠোর হবেন। ২০১৭ সালের আগে মাত্র দু’বার এ আইনের ব্যবহার হলেও বর্তমান প্রশাসন পাকিস্তানসহ বেশ কয়েকটি দেশের বিরুদ্ধে এর প্রয়োগ দেখিয়েছে।

যদিও, পররাষ্ট্র দফতরের তথ্যমতে, নিষেধাজ্ঞায় বাতিল হওয়া ভিসার সংখ্যা খুবই কম।  

১৯৯৬ সালে অভিবাসন আইন পাস হলেও এ পর্যন্ত মাত্র ৩১৮টি ভিসা বাতিল হয়েছে। একই সময় ক্ষতিগ্রস্ত ১০ দেশের লাখ লাখ আবেদনকারীকে অ-অভিবাসী ভিসা দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয় ওই প্রজ্ঞাপনে।

ফেডারেল রেজিস্ট্রার সূত্রের দাবি, যুক্তরাষ্ট্র কখনোই অভিযুক্ত দেশগুলো থেকে আসা ভিসার আবেদন গণহারে বাতিল করেনি।

বাংলাদেশ সময়: ২২২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৯
একে/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।