ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

‘রাজীব গান্ধীকে নিয়ে মোদীর অভিযোগ মিথ্যা’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫১ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১৯
‘রাজীব গান্ধীকে নিয়ে মোদীর অভিযোগ মিথ্যা’ রাজীব গান্ধীর সঙ্গে অ্যামিরাল এল রামদাস। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও কংগ্রেসের প্রয়াত নেতা রাজীব গান্ধীর বিরুদ্ধে আইএনএস বিরাটে করে অবকাশযাপনে যাওয়ার খবর ভুয়া বলে জানিয়েছেন যুদ্ধজাহাজটির সাবেক কমান্ডিং অফিসার। ১৯৮৭ সালে নৌবাহিনীর ওই যুদ্ধজাহাজের দায়িত্বে ছিলেন ভাইস অ্যাডমিরাল বিনোদ পাসরিচা। তিনি জানান, দায়িত্বরত অবস্থায় আইএনএস বিরাটে করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী সপরিবারে অবকাশযাপনে গিয়েছিলেন বলে যে দাবি করেছেন নরেন্দ্র মোদী, তা মোটেও সত্য নয়। 

বৃহস্পতিবার (০৯ মে) ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভাইস অ্যাডমিরাল বিনোদ পাসরিচা বলেন, ওই সময় রাজীব গান্ধী লাক্ষা দ্বীপে অবকাশযাপনের জন্য যাননি, গিয়েছিলেন সরকারি কাজেই। সেখানকার দ্বীপ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তার বৈঠক ছিলো।

সেসময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী সোনিয়া গান্ধী, ছেলে রাহুল গান্ধী ও কয়েকজন প্রশাসনিক কর্মকতা।  

ওই সফরে অমিতাভ বচ্চন ও সোনিয়া গান্ধীর মাও সঙ্গে ছিলেন বলে নরেন্দ্র মোদীর দাবি উড়িয়ে দিয়ে এ সাবেক নৌ কর্মকর্তা বলেন, সশস্ত্র বাহিনীকে নিয়ে এ ধরনের রাজনৈতিক টানাহেঁচড়া একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।

ওই সফরের বর্ণনায় তিনি বলেন, আমরা ত্রিভানদ্রাম থেকে যাত্রা শুরু করি। সেখানে কোনও জেঁটি বা নোঙ্গর করার জায়গা না থাকায় হেলিকপ্টার থেকে তাদের জাহাজে তুলে নেই। সেখানে পৌঁছে তাকে (রাজীব গান্ধী) বেশ কয়েকটি বৈঠকে বসতে হয়। প্রথমদিনই তিনি হেলিকপ্টারে দুই-তিনটি দ্বীপ পরিদর্শন করেন। দ্বিতীয়দিনেও তিনি অন্তত দু’টি দ্বীপ পরিদর্শন করেন বলে জানি।

‘দ্বিতীয়দিন সকালে তিনি (রাজীব গান্ধী) বানগারাম দ্বীপে ঘণ্টা দুয়েক থাকেন। এরপর সেখানে দুপুরের খাবার খেয়েই ফিরে আসেন। ’

রাজীব গান্ধীর ওই সফরে সঙ্গী হয়েছিলেন পশ্চিমাঞ্চলীয় বহরের তৎকালীন কমান্ডার ইন চিফ অ্যাডমিরাল এল রামদাস। তিনিও এ ঘটনার প্রায় একই বর্ণনা দিয়েছেন।

নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্য উল্লেখ করে এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, এটা সম্ভবত ইন্ডিয়া টুডের সাংবাদিক আনিতা প্রতাপের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বলা হয়েছে। তবে, আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, ঘটনাটা ওরকম ছিলো না। পূর্বপরিকল্পনা অনুসারেই বিমানবাহী জাহাজটি নৌবহরের সঙ্গে যুক্ত হয়। যার কারণে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের সাক্ষাৎ হয়।  

এল রামদাস বলেন, গান্ধী পরিবারের ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য কোনও যুদ্ধজাহাজ ব্যবহৃত হয়নি। শুধু প্রধানমন্ত্রী ও তার স্ত্রীর মেডিক্যাল সহায়তার জন্য একটি হেলিকপ্টার পাঠানো হয়েছিল।

গত বুধবার (০৮ মে) ভারতের রাজধানী দিল্লিতে এক সমাবেশে নরেন্দ্র মোদী অভিযোগ করেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী জাতীয় নিরাপত্তা উপেক্ষা করে নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজকে ‘ব্যক্তিগত ট্যাক্সি’ বানিয়ে সপরিবারে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, সেদিন ইটালি থেকে আসা রাজীব গান্ধীর শ্বশুরবাড়ির লোকজন যুদ্ধজাহাজে ছিলেন। গান্ধী পরিবারের সদস্যদের সেবায় নৌবাহিনীর কর্মকর্তাদের নিযুক্ত করা হয়।  

এছাড়া, ওই দ্বীপে আইএনএস বিরাটকে ১০ দিন দাঁড় করিয়ে করে রাখা হয় বলেও অভিযোগ করেন মোদী।

তবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে কংগ্রেস।

দলটির মুখপাত্র রণদীপ সূর্যেয়ালা বলেন, বিমান বাহিনীর প্লেনকেআপনি (মোদী) ব্যক্তিগত ট্যাক্সি বানিয়েছেন। নির্বাচনী প্রচারণার সময় ওই প্লেন ব্যবহার করে মাত্র ৭৪৪ রুপি পরিশোধ করেছেন। নিজের পাপের ভয়ে এখন অন্যদের দিকে আঙুল তুলছেন।

আরও পড়ুন
রাজীব গান্ধীকে নিয়ে মোদীর বিষোদগার চলছেই

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৫ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১৯
একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।