ঢাকা, রবিবার, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৯ জিলহজ ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

অমিত শাহের রোড শোতে হামলা, মমতাকে দুষছে বিজেপি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩২ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৯
অমিত শাহের রোড শোতে হামলা, মমতাকে দুষছে বিজেপি সংঘর্ষের সময় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের রোড শোতে হামলার ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দুষছে ক্ষমতাসীন দলটি। দলের কর্মীদের প্ররোচিত করার অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে নির্বাচনী প্রচারণা থেকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে বিজেপি। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সংঘর্ষের ঘটনায় উল্টো বিজেপিকে দায়ী করেছেন মমতা।

মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকেলে অমিত শাহের রোড শো কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছাতেই ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। বিজেপির সভাপতিকে লক্ষ্য করে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দিতে থাকে তৃণমূল কর্মীরা।

এতে উত্তেজিত হয়ে ওঠে বিজেপি সমর্থকরাও৷ দুই দলের কর্মী-সমর্থকরা ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকলে রণক্ষেত্রে রূপ নেয় শিক্ষার প্রাণকেন্দ্র বলে খ্যাত কলেজ স্ট্রিট।

এসময় ঈশ্বচন্দ্র বিদ্যাসাগরের একটি ভাস্কর্য গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। বিজেপির দাবি, তৃণমূল সমর্থকরাই প্রথমে তাদের দিকে ঢিল ছুড়ে হামলা চালিয়েছে।

অমিত শাহ জানান, ঘটনাস্থল থেকে মাত্র ২০০ মিটার দূরেই একটি মেডিক্যাল কলেজের কাছে ছিলেন তিনি। হঠাৎ তৃণমূলের সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এসময় রোড শোতে বিজেপি কর্মীদের দিকে দাহ্য পদার্থ নিক্ষেপ করা হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

টুইটারে এক বার্তায় বিজেপি সভাপতি বলেন, মমতা দিদির সন্ত্রাস ও গুন্ডাগিরি পশ্চিমবঙ্গের মতো পূণ্যভূমির মানুষের হারানো ঐতিহ্য ফেরানোর পথে আর বাধা হতে পারবে না।

ঘটনার পরপরই দিল্লিতে বিজেপির একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানাতে ছুটে যায়। এ দলে ছিলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।

টুইটারে তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গ কি সন্ত্রাসীদের সরকার পেয়েছে? অমিত শাহের শান্তিপূর্ণ র‌্যালিতে তৃণমূলের হামলা অত্যন্ত দুঃখজনক। এখানে কি আর সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্ভব? সবার নজর এখন কমিশনের দিকে।

এ ঘটনায় বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীরাও তোপ দেগেছেন মমতার দিকেই।

মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফাদনাভিস বলেন, আজ গণতন্ত্রকে হত্যা করা হলো। যেভাবে অমিত শাহের রোড শোতে হামলা হলো আর তাতে পুলিশ যে প্রতিক্রিয়া দেখাল, তাতে মনে হচ্ছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এতটাই ভীত যে, এখন গণতন্ত্রকেই হত্যা করতে চাচ্ছেন।

উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন, এ হামলা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে পশ্চিমবঙ্গে আইনের শাসনের অভাবেরই প্রতিচ্ছবি।

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজ পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, অমিত শাহ নিজেকে কী ভাবেন? তিনি সবকিছুর ঊর্ধ্বে নাকি? তিনি কি সৃষ্টিকর্তা যে, তার বিরুদ্ধে কেউ আপত্তি জানাতে পারবে না?

ভারতের ১৭তম লোকসভা নির্বাচনে শেষপর্বের নয়টি আসনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৯ মে। এরমধ্যে পশ্চিমবঙ্গও রয়েছে। একারণে সব দলের প্রার্থীরাই উঠেপড়ে লেগেছেন কলকাতার ভোটারদের কাছে টানতে, চালাচ্ছেন জোর প্রচারণা।

মঙ্গলবার প্রচারণার অংশ হিসেবে উত্তর কলকাতায় রোড শো করেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। এসময় যাদবপুর ও দক্ষিণ কলকাতায় গণ সমাবেশ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানী ও দলটির জ্যেষ্ঠ নেতা সুনীল দেওধর। বসে ছিলেন না তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রীও। এদিন কলকাতায় তিনটি র‌্যালি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এমন সময় মঙ্গলবারের সংঘর্ষের ঘটনা সেখানকার রাজনীতিতে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৯
একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।